বেঙ্গালুরু : নরেন্দ্র মোদি -অমিত শাহ মিলে সত্তরেরও বেশি জনসভা ও র্যালি করেছিলেন কর্ণাটকে (Karnataka)। তাও শেষরক্ষা হল না। অন্যদিকে নজরকাড়া পারফরম্যান্স করলেন রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। বিধানসভা ভোটে বিজেপির (BJP) থেকে দক্ষিণের এই রাজ্যের শাসনক্ষমতা ছিনিয়ে নিল কংগ্রেস (Congress)। আর কন্নড়ভূমে পুরোদমে প্রচারের পরও মোদি-শাহ জুটি সফল না হওয়ায় দেশের রাজনীতিতে ঘুরপাক খেতে শুরু করল নতুন প্রশ্ন। তাহলে কি এবার ফিকে হচ্ছে তাঁদের ম্যাজিক। অন্যদিকে, ভারত জোড়ো যাত্রার সুবাদে কি এবার শেষমেশ দেখা মিলতে শুরু করল রাহুল গান্ধী ২.০-এর ? চব্বিশের লোকসভার মেগা ফাইটের আগে আপাতত নতুন এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে।
রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রার পর এই প্রথম বড় কোনও রাজ্যের ভোটে গেরুয়া শিবিরকে টেক্কা দিয়ে জয় ছিনিয়ে নিলে এল কংগ্রেস। পুরোদমে চেষ্টা করেও কাজে এল না মোদি-শাহ ম্যাজিক। নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহ(Amit Shah), বিজেপি সরকারের ওপেনিং জুটি, কর্ণাটকে ৭০-এর বেশি সভা ও র্যালি করলেও দক্ষিণ ভারতে একমাত্র রাজ্যের ক্ষমতাও হারাতে হল গেরুয়া শিবিরকে। একমাস ধরে ভোটপ্রচারে কর্ণাটকে প্রায় ঘাঁটি গেড়েছিলেন মোদি-শাহ-নাড্ডারা।
বিধানসভা নির্বাচনে কর্ণাটকে একাই ৪২টি বিধানসভা এলাকায় জনসভা ও র্যালি করেছিলেন নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi)। তার মধ্যে বিজেপির জয় পেয়েছে মাত্র ২১টিতে। অপর ২১টি আসনে হারের মুখ দেখতে হয়েছে গেরুয়া শিবিরকে। জনসভা ও র্যালি মিলিয়ে কর্ণাটকে অমিত শাহর কর্মসূচি ছিল ৩০টি বিধানসভা এলাকায়। তার মধ্যে ১৯টি কেন্দ্রেই হারতে হয়েছে বিজেপিকে। অন্যদিকে, কর্ণাটকে রাহুল গান্ধীর পারফরম্যান্স চোখে পড়ার মতো।কর্ণাটকে ২২টি বিধানসভা এলাকায় জনসভা করেন কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি। তার মধ্যে ১৬টি কেন্দ্রেই মানুষ কংগ্রেসকে বেছে নিয়েছেন। প্রসঙ্গত, গত বছরের অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে কর্ণাটকে প্রবেশ করে রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রা (Bharat Joro Yatra)। সেখানেই রাহুলের সঙ্গে প্রথমবার ভারত জোড়ো যাত্রায় হাঁটতে দেখা গেছিল অসুস্থ সনিয়া গান্ধীকেও।
কর্ণাটকের নির্বাচনে ২০১৮-র চেয়ে একধাক্কায় ৫৬টি আসন বাড়িয়ে ১৩৬টি আসনে জয়ী কংগ্রেস। ৩৯টি আসন কমে বিজেপির ঝুলিতে ৬৫টি আসন। জেডিএসের প্রাপ্ত আসন ১৯, অন্যান্যরা পেয়েছে ৪টি আসন। কর্ণাটকের ভোটে বিজেপির একের পর এক হেভিওয়েটের হার। বিদায়ী স্পিকার, শিক্ষামন্ত্রী, পরিবহণমন্ত্রী সহ ১১ জন মন্ত্রীর হার।
প্রসঙ্গত, এবছরের শেষে বিধানসভা ভোট রয়েছে রাজস্থান, মধ্য়প্রদেশ এবং ছত্তীসগঢ়ে। এই রাজ্য়গুলিতে গত কয়েকমাসে বারবার সামনে এসেছে কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। তবে, কর্ণাটকে একজোট হয়ে লড়ে কংগ্রেস যেভাবে জয় ছিনিয়ে আনল, তা দেখে কি এই রাজ্য়গুলিতেও, কোন্দল ভুলে বিজেপির বিরুদ্ধে ঝাঁপাতে পারবে কংগ্রেস ? না কি কামব্য়াক করবে বিজেপি ? সেটাই দেখার।
আরও পড়ুন- কংগ্রেসের কাছে কর্ণাটক খুইয়ে দক্ষিণ-ভারতের দরজা বন্ধ, দেশে 'অর্ধেক' হল বিজেপি
আসন সংখ্যার মতোই ভোট শতাংশেও বিজেপির থেকে অনেক এগিয়ে কংগ্রেস। এখনও পর্যন্ত ৪৩ শতাংশ ভোট পেয়েছে কংগ্রেস। বিজেপি পেয়েছে ৩৬ শতাংশ, জেডিএস পেয়েছে ১৩ শতাংশ ভোট। যার পরই কাল সকালে বেঙ্গালুরুতে জয়ী কংগ্রেস বিধায়কদের নিয়ে ডাকা হল বৈঠক। উল্লেখ্য, কর্ণাটকের ভোটে বিজেপির একের পর এক হেভিওয়েটের হার। হার হয়েছে বিদায়ী স্পিকার বিশ্বেশ্বর হেগড়ের। পরাজিত হয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী বি শ্রীরামুলু, শিক্ষামন্ত্রী বি সি নাগেশের। কংগ্রেসের কাছে হারলেন আইনমন্ত্রী জে সি মাদুস্বামী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে সুধাকর।
আরও পড়ুন, গরমে কোন সরবতগুলি না খেলেই নয় ? কোনগুলি খুবই স্বাস্থ্যকর ?