কলকাতা: ৩৪ বছরের বাম শাসনের পর বাংলার বাইরে যে কটি রাজ্যের রাজনীতি নিয়ে বাঙালিদের আগ্রহ রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম গডস ওন কান্ট্রি কেরল। কেরলই গোটা দেশে একমাত্র রাজ্য যেখানে বামেরা ক্ষমতায় আছে। কেরলের রাজনৈতিক ইতিহাস বলছে, কোনও দলই সেখানে পরপর দু’বার ক্ষমতায় আসেনি। একবার কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ, আর একবার বাম নেতৃত্বাধীন এলডিএফ। কেরলে গত কয়েক বছর ধরে জমি তৈরির মরিয়া চেষ্টা করছে বিজেপি। কান্নুরে আরএসএস এবং সিপিএমের মধ্যে রক্তাক্ত সংঘর্ষের ঘটনা গোটা দেশে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে বারবার। সবরীমালা ইস্যু থেকে শুরু করে বন্যা কিংবা করোনা, অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সামাল দিয়েছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। যার সুফল তিনি পেয়েছেন সাম্প্রতিক স্থানীয় প্রশাসনের ভোটে। কেরলে এখন ক্ষমতায় বামেরা, কিন্তু ওয়ানাড থেকেই সাংসদ রাহুল গান্ধী।
কেরলে মূল লড়াই কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফের সঙ্গে বাম নেতৃত্বাধীনে এলডিএফের। সি ভোটারের পরিসংখ্যান বলছে, নজিরবিহীনভাবে দ্বিতীয়বার কেরলে ক্ষমতা ধরে রাখতে পারে বাম নেতৃত্বাধীন এলডিএফ। ১৪০ আসন বিশিষ্ট কেরলে তারা পেতে পারে ৮১ থেকে ৮৯টি আসন। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ পেতে পারে ৪৯ থেকে ৫৭টি আসন। অমিত শাহ বলেছিলেন বাংলা, ওড়িশা কেরল, তামিলনাড়ু দখল করতে না পারলে বিজেপির স্বর্ণযুগ এসেছে এটা বলা যাবে না। কিন্তু সি ভোটারের সমীক্ষা বলছে, এবারও কেরলে চূড়ান্ত ব্যর্থ হতে পারে বিজেপি। তারা সর্বোচ্চ ২টি আসন পেতে পারে। অন্যান্যরা পেতে পারে সর্বোচ্চ ২টি আসন। এলডিএফ পেতে পারে ৪২ শতাংশ ভোট। ইউডিএফ পেতে পারে ৩৫ শতাংশ ভোট,বিজেপি পেতে পারে ১৫ শতাংশ ভোট। অন্যান্যরা পেতে পারে ৮ শতাংশ ভোট। সি ভোটারের সমীক্ষা অনুযায়ী কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পদে জনপ্রিয়তার নিরিখে সবার প্রথমে রয়েছেন পিনারাই বিজয়ন, ২ নম্বরে রয়েছেন কংগ্রেসের উমেন চান্ডি, এরপর রয়েছেন দারুণভাবে কোভিড সামলানো স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজা, তারপর শশী তারুর। কেরলে রমেশ চেন্নিথালা-উমেন চান্ডি দ্বন্দ্বে জীর্ণ কংগ্রেস যে পিনারই বিজয়নের দিকে কোনও চ্যালেঞ্জই ছুড়ে দিতে পারেনি কিংবা সাম্প্রতিককালে কেরল সিপিএমের একাধিক শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগকে তারা যে হাতিয়ার করতে পারেনি তা সি ভোটারের সমীক্ষা থেকে স্পষ্ট।