পূর্ব মেদিনীপুর: নন্দীগ্রামে শেষ বার জনসভা করেছিলেন সেই ২০১৬ সালে। পাঁচ বছর পর, আরেকটা বিধানসভা ভোটের মুখে জমি আন্দোলনের মাটিতে দাঁড়িয়ে, সোমবার জনসভা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু, সেই সভার আগেই নন্দীগ্রামজুড়ে পড়ল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গো ব্যাক পোস্টার! সভাস্থল থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে বিরুলিয়া, আমদাবাদ-সহ বিভিন্ন এলাকা এরকমই পোস্টারে ছয়লাপ হয়ে যায়। বাড়ির দেওয়াল, বিদ্যুতের খুঁটি থেকে দোকান। বাদ যায়নি কিছুই। সব জায়গাতেই পোস্টার। আর এই নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। বিজেপিকে বিঁধে আক্রমণ করেছে তৃণমূল।পূর্ব মেদিনীপুরের তৃণমূল যুব কংগ্রেস সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি মমতার সভার আগে বিশৃঙ্খলা করার জন্য বিজেপি পরিকল্পনা করে এরকম পোস্টার লাগিয়েছে, এতে কোনও প্রভাব পড়বে না, নন্দীগ্রামের মানুষ মমতার সঙ্গেই আছে বলে জানিয়ে দেন।
যদিও তৃণমূলের তোলা এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সহ সভাপতি প্রলয় পালের দাবি, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। সাধারণ মানুষ তৃণমূলের সঙ্গে নেই, পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে, তাই মিথ্যে অভিযোগ করছে।
এই নিয়ে ট্যুইট করেছেন পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপির সহ পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য। মমতাকে নিশানা করে তিনি লিখেছেন, ২০০৭ সালে জমি আন্দোলনের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বাস্তবে তিনি তা পালন করেননি।


প্রসঙ্গত, সিঙ্গুরের কৃষিজমি নিয়ে আন্দোলনের পাশাপাশি মমতা যে নন্দীগ্রাম আন্দোলনকে হাতিয়ার করে ২০১১-য় রাজ্যে ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়েছেন, সেখানে গত ৯-১০ বছরে রাজনৈতিক চালচিত্র কিছুটা বদলে গিয়েছে। যে শুভেন্দু অধিকারী ও অধিকারী পরিবার দুই মেদিনীপুরে তৃণমূল তথ মমতার প্রধান শক্তি ছিল, তারা আজ শিবির বদলে অনেকটাই গেরুয়া দলের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। শুভেন্দু বিদ্রোহ করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, তাঁর পথে পা বাড়িয়েছেন ভাই সৌম্যেন্দু অধিকারী। কাঁথির সাংসদ, শুভেন্দুর বাবা শিশির অধিকারী, ওই পরিবারের আরেক ছেলে দিব্যেন্দু খাতায় কলমে তৃণমূলেই আছেন। কিন্তু দলের সঙ্গে তাঁদের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। আজ নন্দীগ্রামে মমতার সভায় আমন্ত্রিত ছিল না অধিকারী পরিবার। এই প্রেক্ষাপটেই আজ মমতা সেখানে সভা করে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন, যা নিয়ে তুমুল শোরগোল পড়েছে রাজ্য-রাজনীতিতে।