কলকাতা: লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে ব্যস্ত সব দলই। সেই আবহেই তৃণমূলের ফলাফল নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করলেন দলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে জোড়াফুল শিবির ৩০ থেকে ৩৫টি আসন পাবে বলে নিশ্চিত কুণাল। আসনসংখ্যা বাড়তে পারেও বলেও দাবি তাঁর। যদিও কুণালের এই দাবি নিয়ে তাঁকে কটাক্ষ করেছে BJP। কটাক্ষ করেছে CPM-ও।


লোকসভা নির্বাচনে আর এক মাসও বাকি নেই। প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়েছে প্রায় সব দলই। সেই আবহেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভবিষ্যদ্বাণী করলেন কুণাল। রবিবার সোশ্য়াল মিডিয়ায় কুণাল লেখেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেনাপতিত্বে তৃণমূল এবার বাংলায় ৩০ থেকে ৩৫টি আসন পাবে। সংখ্যা বাড়তেও পারে। ভোট শতাংশে গড়ে ৫৮-৬২ শতাংশ তৃণমূলের। BJP-র ভোট কমবেশি ৩০-৩২ শতাংশ। আসন ৫-১১টির মধ্যে। বাম এবং কংগ্রেসের আসন ০'। ২৪ মার্চে যা পরিস্থিতি, সেই অনুযায়ী এই হিসেব বলে জানিয়েছেন কুণাল।



কুণালের এই মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে রাজ্য BJP-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "কুণাল ঘোষ সাংবাদিকতা করতেন। ২০১১ সালে পট পরিবর্তনের আগে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ভূমিকা ছিল। সাংসদ হয়েছিলেন। তৃণমূলের বদান্যতায় জেলযাত্রা হয়েছিল ওঁর। ওঁর সঙ্গে কতটা অমানবিক আচরণ করা যেতে পারে, তা দেখিয়েছিল তৃণমূল। কুণালের কণ্ঠস্বরকে যেভাবে রোধ করা হয়, তা ভারতীয় রাজনীতিতে নজিরবিহীন। কিন্তু কুণাল জ্যোতিষচর্চা করতেন, টিয়াপাখির খাঁচা নিয়ে মধ্য কলকাতায় বসতেন বলে জানা নেই আমার। তবে কুণালের নির্দিষ্ট রাজনৈতিক পর্যবেক্ষণ রয়েছে। রাজনীতির উত্থার-পতন দেখেছেন। যেটা হতে যাচ্ছে সেটা উনি জানেন এবং বোঝেন। এই ধরনের বিবৃতি দিয়ে হতোদ্যম তৃণমূল কর্মীদের উজ্জ্বীবিত করে বুথে পাঠাতে, প্রচার করাতে আপ্রাণ চেষ্টা করছে। তৃণমূলের বিদায়ঘণ্টা বেজে গিয়েছে। মানুষ গ্রহণ করেছিলেন, এখন প্রত্যাখ্যানের সময়। এবার যাওয়ার সময়। এই নির্বাচনে দুই সংখ্যা পার করতে পারবে না তৃণমূল।

 

কংগ্রেস এবং CPM রাজ্য়ে খাতা খুলতে পারবে না বলেও এদিন দাবি করেন কুণাল। সেই নিয়ে CPM-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, "আমি জানি না কবে থেকে জ্যোতিষচর্চা শুরু করলেন কুণাল ঘোষ। কিন্তু ওঁর কোনও ভবিষ্যদ্বাণী মেলেনি। উনি বলেছিলেন সারদার টাকার স্টক রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে। জানতেন বলে বোধহয় বলেছিলেন। এখন উল্টো কথা বলেন। ওঁর কথার কোনও মূল্য আছে বলে মনে করি না আমরা।"

 

এবার লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় সাত দফায় ভোটগ্রহণ। জাতীয় স্তরে I.N.D.I.A জোটে শামিল হলেও, বাংলায় কংগ্রেসের হাত ছেড়ে একা লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তৃণমূল। ৪২টি আসনেই প্রার্থী ঘোষণা করেছে তারা। কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগ জেরবার হওয়া থেকে সন্দেশখালি কাণ্ড, একের পর এক অভিযোগে জেরবার জোড়াফুল শিবির এবার কতটা ভাল ফল করবে, সেই নিয়ে সন্দিহান রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। অন্য দিকে, নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহ বিজেপি-কে লক্ষ্য়মাত্রা বেঁধে দিয়ে গিয়েছেন। শাহ যেখানে ৩৫টি আসনের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়ে গিয়েছেন, মোদি ৪২-এ ৪২ করতে হবে বলে জানিয়েছেন। সেই আবহে কুণালের মন্তব্য নিয়ে তরজা শুরু হয়েছে।