এদিন কংগ্রেসের এই ইস্তেহার প্রকাশ করলেন দলের সভাপতি রাহুল গাঁধী, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, ইউপিএ চেয়ারপার্সন সনিয়া গাঁধী ও দলের প্রবীণ নেতা পি চিদম্বরম।
কৃষকদের অসন্তোষের ইস্যু নিয়ে বিগত কয়েক বছর ধরে জোর আলোচনা চলছে। কৃষকদের মন পেতে ইস্তেহারে একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কংগ্রেস। কংগ্রেসের ইস্তেহারে কৃষকদের ‘ঋণ মকুবে’র পথ থেকে ‘ঋণমুক্তি’র পথে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। সহায়ক মূল্য, উত্পাদন ব্যয় হ্রাস এবং প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ সুনিশ্চিত করার মাধ্যমে তা করা হবে বলে কংগ্রেস বলেছে। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ জন্য ক্ষমতায় এলে প্রতি বছর পৃথক ‘কিষাণ বাজেট’ পেশ করা হবে।
ইস্তেহার প্রকাশের অনুষ্ঠানে রাহুল বলেছেন, ক্ষমতায় এলে তাঁদের সরকার জিডিপি-র ছয় শতাংশ শিক্ষা খাতে ব্যয় করা হবে। সরকারি হাসপাতালগুলির উন্নতি এবং দরিদ্রদের জন্য উচ্চমাণের স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া হবে।
কংগ্রেস স্বাস্থ্যের অধিকার আইন রূপায়ণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং সরকারি ও তালিকাভূক্ত হাসপাতালগুলির মাধ্যমে প্রত্যেক নাগরিকের নিখরচায় ডায়গনোসিস, রোগীর শুশ্রুষা, বিনামূল্যে ওষুধ, হাসপাতালে ভর্তির নিশ্চয়তা কংগ্রেসের ইস্তেহারে দেওয়া হয়েছে।
রাহুল অভিযোগ করেছেন যে, পাঁচ বছরের শাসনে বিজেপি সরকার ঘৃণা ও বিভেদ ছড়িয়েছে। কংগ্রেস সমস্ত মানুষকে একত্রিত করে ভারতকে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে কাজ করবে।
কংগ্রেস সভাপতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কটাক্ষ করে বলেছেন, তাঁদের ইস্তেহারে জন আওয়াজের প্রতিফলন ঘটেছে এবং তা কোনও ব্যক্তির ‘মন কি বাত’ নয়।
ইতিমধ্যেই কংগ্রেস ন্যূনতম আয়ের নিশ্চয়তা প্রকল্প (ন্যায়)-এর কথা জানিয়েছে। সেই প্রকল্প স্থান পেয়েছে কংগ্রেসের ইস্তেহারে। এই প্রকল্পের আওতায় দেশের ২০ শতাংশ দরিদ্রতম পরিবারকে বছরে ৭২ হাজার কোটি টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি কংগ্রেসের ইস্তেহারে রয়েছে।
তরুণদের জন্য কংগ্রেসের ইস্তেহারে কর্মসংস্থানকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। ২০২০-র মার্চের আগে কেন্দ্রীয় সরকারের ৪ লক্ষ্য শূন্য পূরণ, রাজ্য সরকারগুলিকে ২০ লক্ষ পদ পূরণের জন্য রাজি করানো এবং প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত ও পুরসভায় ১০ লক্ষ নতুন সেবা মিত্র পদ তৈরির মাধ্যমে সরকারি ক্ষেত্রে ৩৪ লক্ষ কর্মসংস্থান সুনিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে ইস্তেহারে। একইসঙ্গে বেসরকারি ক্ষেত্রেও কর্মসংস্থান তৈরি ও মহিলাদের কর্মসংস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে।
একই সঙ্গে ক্ষমতায় এনে পুরো জিএসটি ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হবে বলেও দাবি করা হয়েছে কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তেহারে।
প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি, সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকীকরণের সমস্ত কর্মসূচী ত্বরাণ্বিত করার কথাও কংগ্রেসের ইস্তেহারে বলা হয়েছে। এছাড়াও প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত সরকারি বিদ্যালয়ে নিখরচায় বাধ্যতামূলক শিক্ষার প্রতিশ্রুতিও উল্লেখ করা হয়েছে।
ক্ষমতায় এলে সংসদের প্রথম অধিবেশনেই লোকসভা ও রাজ্য বিধানসভাগুলিতে মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ আসন সংরক্ষণ বিল পাসের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে কংগ্রেসের ইস্তেহারে।