পটনা: বেগুসরাইয়ে প্রার্থী কানহাইয়া কুমার সমাজের সব অংশের দারুণ সমর্থন পাচ্ছেন বলে জানিয়ে বিহারে মহাগঠবন্ধন প্রার্থী আরজেডির তনভীর হাসানকে ত্রিমুখী লড়াই থেকে সরে যাওয়ার প্রস্তাব দিল সিপিআই। ২০১৪র লোকসভা ভোটে বেগুসরাইয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকা তনভীর এবার তিন নম্বরে নেমে যাবেন বলে সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেন দলের সাধারণ সম্পাদক সুধাকর রেড্ডি। আজ সাংবাদিক সম্মেলনে সুধাকর বলেন, আমি তেজস্বী যাদবকে (আরজেডির সম্ভাব্য পরবর্তী সর্বোচ্চ নেতা) অনুরোধ করছি, আমাদের আর্জি বিবেচনা করে তনবীরকে সরে যেতে বলুন। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষদিন চলে গিয়েছে। কানহাইয়াকে স্পষ্ট জয় পেতে সাহায্য করার জন্য তিনি এটুকু করতেই পারেন।
বিহারে প্রবল জল্পনা রয়েছে যে, আরজেডি-র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি লালুপ্রসাদ যাদব প্রাথমিক ভাবে জেএনইউ ছাত্র সংসদের প্রাক্তন সভাপতি কানহাইয়াকে সমর্থনে রাজি ছিলেন। রাষ্ট্রদ্রোহিতা মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর কানহাইয়া সাহসের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করায় তাঁর প্রশংসা করেছিলেন লালু। কিন্তু পরে ছোট ছেলে ও তাঁর সম্ভাব্য উত্তরাধিকারী তেজস্বীর চাপে কানহাইয়াকে সমর্থনের ব্যাপারে বেঁকে বসেন তিনি। তেজস্বী যুক্তি দেন, কানহাইয়া ভূমিহার গোষ্ঠীর, তাঁকে সমর্থন করলে দলের ক্যাডাররা বিরূপ হতে পারে, কেননা তারা বেশিরভাগই যাদব ও মুসলিম।
সুধাকর বলেন, কেন্দ্রে অ-এনডিএ সরকার গঠনে দায়বদ্ধ সিপিআই যার নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রভাব খাটাতে পারবে বামেরা। বিহারে মহাগঠবন্ধনের সঙ্গে থাকতে না পারার জন্য আমরা সত্যিই দুঃখিত। তবুও আমরা হাতেগোনা কয়েকটি কেন্দ্রে নিজেদের প্রার্থী দেওয়ার ও বাকিগুলিতে মহাগঠবন্ধন প্রার্থীদের সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শুধু একটি মাত্র আসনে আমাদের প্রস্তাব মেনে নিতে তেজস্বীকে আবেদন করছি।
প্রতিপক্ষ বিজেপির গিরিরাজ সিংহও তাঁর মতোই ভূমিহার হওয়ার ফলে কানহাইয়া তাদের সমর্থন পাবেন কিনা, প্রশ্ন করা হলে সুধাকরের দাবি, সিপিআই জাতপাত, ধর্মের মাপকাঠিতে বিচার করে না। কিন্তু যখন বলছি, তিনি সবার সমর্থন পাচ্ছেন, তখনই কাউকেই বাদ রাখছি না।
সুধাকর আরও বলেন, তাদের মতাদর্শের সঙ্গে ভিন্নমত হলেই কলঙ্ক লেপে দেওয়ার বিজেপির নীতি অনুযায়ী কানহাইয়াকে দেশদ্রোহিতা মামলায় জড়ানো হয়। বেগুসরাইয়ের ছেলে হওয়ায়, এলাকায় বাম আন্দোলনের বিরাট ঐতিহ্য থাকায় কানহাইয়াকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত নিই আমরা।
তিনি আরও বলেন, তনবীরকে নিয়ে আমাদের কোনও সমস্যাই নেই। আমাদের লড়াই ওঁর বিরুদ্ধে নয়, ওঁকে রাজনীতি থেকে ছুটি নিতেও বলছি না। উনি আগামীদিনে যত খুশি ভোটে লড়ুন। কিন্তু এবার কানহাইয়াকে ঘিরে স্পষ্ট প্রত্যাশা, আবেগ তৈরি হয়েছে। এমনি এমনি তো সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি, স্বরাজ ইন্ডিয়া প্রধান যোগেন্দ্র যাদবের মতো নানা দলের নেতারা ওঁর হয়ে প্রচারে আসছেন না!