কোঝিকোড়: উত্তরপ্রদেশের শক্ত ঘাঁটি অমেঠির পাশাপাশি কেরলের ওয়েইনাড় লোকসভা কেন্দ্রেও রাহুল গাঁধীর প্রার্থী হওয়া নিয়ে রাজনৈতিক মহল সরগরম। এর মধ্যেই কংগ্রেসের সামনের সারির নেতা রমেশ চেন্নিথালা জানালেন, বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টা নাগাদ ওয়েইনাড় কেন্দ্রে মনোনয়ন পেশ করবেন রাহুল। সঙ্গে থাকতে পারেন বোন পূর্ব উত্তরপ্রদেশের ভারপ্রাপ্ত কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক প্রিয়ঙ্কা গাঁধী।
মনোনয়ন জমা দিতে কোঝিকোড় থেকে হেলিকপ্টারে চেপে প্রায় ৯০ কিমি দূরে ওয়েইনাড় যাবেন রাহুল। মনোনয়ন পেশের আগে আগামীকাল তাঁকে সামনে রেখে কংগ্রেস কর্মীদের রোড শো হবে বলে জানান চেন্নিথালা। তার প্রস্তুতি সারতে কোঝিকোড়ে রয়েছেন মুকুল ওয়াসনিক, কে সি বেনুগোপাল সহ সিনিয়র কংগ্রেস নেতারা, ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন অব মুসলিম লিগ নেতা কে কুনহালিকুট্টি। কোঝিকোড়, ওয়েইনাড়, দু জায়গাতেই ব্যাপক নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। আজ রাতে সাড়ে আটটায় কংগ্রেস সভাপতি পা রাখবেন কোঝিকোড়ে। রাতে অতিথিশালায় থেকে কাল সকালে রওনা হবেন ওয়েইনাড়ের উদ্দেশ্যে।
গতকালই রাহুল বলেছেন, দক্ষিণ ভারতের জনগণের ক্ষোভ, নরেন্দ্র মোদির তাদের প্রতি বিরূপ মনোভাব আছে। তিনি তাদের পাশে থাকার বার্তা দিতেই ওয়েইনাড় থেকে ভোটে লড়ছেন।
রাহুলের কেরলে ভোটে লড়ার সিদ্ধান্তের আগাগোড়া বিরোধিতা করে আসা বামেরা হুঁশিয়ারি দিয়েছে, মাঠে নেমে কী করে ভোটে লড়তে হয়, সেটা শিখিয়ে দেবে তাঁকে। বামেরা ওয়েইনাড়ে প্রার্থী করেছে জোট শরিক সিপিআইয়ের পি পি সুনিরকে। পার্টির এক প্রথম সারির নেতা বলেছেন, আমরা কিন্তু জয়ের জন্যই লড়ছি। সিপিআইয়ের ওয়েইনাড় জেলার নেতা বিজয়ন চেরুকারা বলেছেন, তাঁদের প্রার্থী ইতিমধ্যেই তিন দফা প্রচার সেরে ফেলেছেন, ৪-৫ লক্ষ ভোটারের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ আছে তাঁর।
বামেদের ধারণা, ওয়েইনাড়ের ভোটাররা রাহুলের মতো প্রার্থীকে বাছাই করবেন না কারণ কংগ্রেসের জাতীয় সভাপতি হওয়ার ফলে ব্যস্ত, ঠাসা কর্মসূচির জন্য তিনি তাঁদের সমস্যার দিকে পুরোপুরি নজর দিতে পারবেন না। চেরুকারা বলেছেন, রাহুল যেন একজন অদৃশ্য ভগবান। অমেঠির পারিবারিক গড়ে তাঁর পক্ষে জেতা সহজ হবে। কিন্তু ওয়েইনাড়ের মাটির চরিত্র আলাদা। কী করে মাঠে নেমে ভোট করতে হয়, ওঁকে শিখিয়ে দেব আমরা।
রাহুলের কেরলে ভোটে লড়ার সিদ্ধান্তে প্রথমে কয়েকজন বাম নেতা ম্রিয়মান হলেও আমাদের কর্মীরা আরও উজ্জ্বীবিত হয়ে উঠেছেন, চ্যালেঞ্জ নিতে তৈরি বলে দাবি করেন তিনি।
তাঁরা ‘কংগ্রেস ও বিজেপি, উভয়েরই কৃষক, আদিবাসী ও সংখ্যালঘু বিরোধী নীতিগুলির’ বিরুদ্ধে তীব্র প্রচার চালাচ্ছেন বলে জানান চেরুকারা।
যদিও কংগ্রেসের দাবি, ওয়েইনাড়ে রাহুলের বিরুদ্ধে কোনও চেষ্টা করেই লাভ হবে না। দলের ওয়েইনাড় জেলা সভাপতি ডি পি রাজশেখরণ বলেন, ওয়েইনাড় থেকে ওনার প্রার্থী হওয়ার খবরে কংগ্রেস-ইউডিএফ জোটের কর্মীরা চাঙ্গা। ওঁর উপস্থিতিই কংগ্রেসকে রাজ্যে ২০টি আসনের সবকটি জিততে সাহায্য করবে।