সিরসা: ষষ্ঠ দফা ভোটের আগে নমো-রাগা দ্বৈরথ একেবারে চরমে। এক ইঞ্চি জমিও পরষ্পরকে ছাড়ছেন না দুই যুযুধান প্রতিপক্ষ। নির্বাচনী সভায় রীতিমতো নিয়ম করে গাঁধী পরিবারকে তুলোধনা করছেন নরেন্দ্র মোদি। পণ্ডিত নেহেরু থেকে ভারতের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গাঁধী, মোদির বাক্যবাণ থেকে রেহাই পাচ্ছেন না কেউই। আর ইন্দিরা পুত্র রাজীবকে তো কার্যত তুলোধনা করছেন তিনি। প্রয়াত প্রধানমন্ত্রীকে ‘এক নম্বর দুর্নীতিবাজ’ বলেও আক্রমণ করেছেন নরেন্দ্র মোদি। এদিন সেই রাজীব গাঁধীকে টেনে এনেই মোদি বলেন, “যুদ্ধবিমান আইএনএস বিরাটকে ট্যাক্সি বানিয়ে ফেলেছিলেন রাজীব গাঁধী। নেহেরু, ইন্দিরা যুদ্ধজাহাজে ছুটি কাটাতে যেতেন”।
প্রধানমন্ত্রীর এই তীব্র কটাক্ষের জবাব মিষ্টি মুখেই দিলেন রাহুল। কংগ্রেস সভাপতি বলছেন, “বাবাকে নিয়ে যত খুশি কথা বলুন, কিন্তু রাফাল চুক্তি খোলসা করুন।” অতীতে রাজীব গাঁধীকে নিয়ে মোদির মন্তব্যের জবাবে ‘ভালবাসা আর আলিঙ্গন’ জানিয়েছিলেন রাহুল। এবারও তিনি হাঁটলেন সেই মেঠো পথেই। প্রিয়ঙ্কা, সনিয়ারা প্রত্যাঘাতের পথে হাঁটলেও রাহুল একেবারে গাঁধীগিরিতেই নিজেকে বেঁধে রেখেছেন।
২০১৪ সালে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন মোদি, সেই সব অপূর্ণ প্রতিশ্রুতির কথা তুলেই উল্টে কংগ্রেসের পালে হাওয়া তুলতে চাইছেন কংগ্রেস সভাপতি। ২ কোটি বেকারের চাকরির কী হল? কোথায় গেল ১৫ লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি? মোদিকে রাহুলের সরাসরি প্রশ্ন, “আপনার আমলে কৃষক তার ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছে? আপনি কি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লাখ টাকা করে দিয়েছেন? আপনি আমার বাবাকে নিয়ে কথা বলতে পারেন। আমাকে নিয়ও নিশ্চিতভাবে কথা বলতে পারেন। তবে রাফাল চুক্তি নিয়েও আপনাকে কথা বলতে হবে।” রাহুল আরও বলেন, “মোদি তার শিল্পদ্যোগী বন্ধুকে সমস্ত সুবিধা পাইয়ে দিয়েছেন।” মোদি জমানায় ‘স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া’, ‘সিট ডাউন ইন্ডিয়া’র মতো ভাওতাবাজি চলেছে। ‘পকোড়া বিক্রি’র চাকরি হয়েছে, কটাক্ষ রাহুলের।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার হরিয়ানার সিরসায় দলীয় প্রার্থী অশোক তানওয়ারের প্রচারে এসেছিলেন কংগ্রেস সভাপতি। সেখানেই তিনি জনতার উদ্দেশে বলেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে মধ্যবিত্তের পকেট থেকে একটা পয়সাও কাটা হবে না। সমাজের অন্য অংশও ন্যায় প্রকল্পের সুবিধা পাবে। পঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, রাজস্থানে কৃষি ঋণ মুকুব করা হয়েছে। কংগ্রেস দেশের আম জনতার হয়ে কাজ করবে, এদিন এই আশার বাণীই শুনিয়েছেন রাহুল।