কলকাতা : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) চ্যালেঞ্জ জানালেন বেলডাঙা ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রধান স্বামী প্রদীপ্তানন্দ তথা কার্তিক মহারাজ। এনিয়ে আগামী দিনে আইনি পরামর্শ নেওয়ার কথাও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ, ইসকনের একাংশকে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের আক্রমণ ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। এই প্রেক্ষাপটে রবিবার ভোট প্রচারে রাজ্য়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে পাল্টা আক্রমণ শানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও।


যা বলেছিলেন মমতা...


গতকাল গোঘাটের সভা থেকে সাধুদের একাংশকে নিশানা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম করে আক্রমণ শানিয়েছিলেন কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে। মমতা বলেছিলেন, "সব সাধু তো সমান হয় না। সব স্বজন সমান হয় না। আমাদের মধ্যেও সবাই সমান ? না। এই যে বহরমপুরের একজন মহারাজ আছেন। আমি শুনেছি অনেক দিন ধরে ...কার্তিক মহারাজ। ভারত সেবাশ্রম সংঘকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। আমার শ্রদ্ধার্ঘের একটা তালিকায় তাঁরা অনেক দিন ধরে আছে। কিন্তু, যে লোকটা বলেন, আমি তৃণমূল কংগ্রেসকে এজেন্ট বসতে দেব না। সে লোকটাকে আমি সাধু বলে মনে করি না। তার কারণ তিনি সরাসরি রাজনীতি করে দেশটার সর্বনাশ করছেন। আমি আইডেন্টিফাই করেছি, কে কে করেছেন? আসানসোলে একটা রামকৃষ্ণ মিশন আছে। আমি রামকৃষ্ণ মিশনকে কী সাহায্য করিনি? সিপিএম যখন খাবার বন্ধ করে দিয়েছিল, আপনাদের অস্তিত্ব নিয়ে, স্বাধিকার নিয়ে তখন কিন্তু আমি পুরো সমর্থন দিয়েছিলাম। মা-বোনেরা আসতেন। তাঁরা তরকারি কেটে দিতেন। আর সিপিএম কিন্তু আপনাদের কাজ পর্যন্ত করতে দিত না। আমি জানি কয়েকজন। সবাই তো নন। যেমন আমি শুনলাম। আসানসোলের একটি মিশন আছে। ইস্কনও মনে রাখবেন ৭০০ একর জমি দিয়েছি ইস্কন শহর করার জন্য নদিয়াতে। ইস্কনেরও একটা মন্দির আছে। ইস্কনেরও একটা মিশন আছে। একটা-দুটো তো থাকবেই। দিল্লি থেকে নির্দেশ আসে। বলে, বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য বলুন। কেন করবে সাধু-সন্তরা এ কাজ ! কিন্তু, রামকৃষ্ণ মিশনকে সবাই সম্মান করে, শ্রদ্ধা করে। ওদের কাছে একটা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে। ওদের যাঁরা মেম্বার হন, যাঁরা দীক্ষা নেন। তাঁদের আমি ভালবাসতে পারি। আমি দীক্ষা নিতে পারি। কিন্তু, রামকৃষ্ণ মিশন ভোট দেয় না কখনও । এটা আমি জানি। তাই, আমি অন্যকে কেন ভোট দিতে বলব ? কেউ কেউ লঙ্ঘন করছে। সবাই নয়।  


মুখ্যমন্ত্রীর এই অভিযোগের জবাব দিয়েছেন কার্তিক মহারাজ।


তিনি বলেন, "সঙ্ঘের মুখ্যমন্ত্রী বদনাম করলেন না সুনাম করলেন তাতে কিছু যায় আসে না। কার্তিক মহারাজকে মুর্শিদাবাদ জেলার মানুষ চেনেন। একটা জায়গায় প্রমাণ দেখাতে পারলে আমি সন্ন্যাস জীবন ত্যাগ করে দেব। একটা জায়গায় যদি আমি বুথ থেকে তৃণমূল কর্মীকে হটিয়ে দিই, আমি এমন কোনও ডন নই, আমি কোনও মস্তান নই, আমার এমন কোনও সঙ্ঘের লোক নেই যে আমি তৃণমূলের এজেন্টকে বসতে দেব না বললেই ...। মুর্শিদাবাদে ভোট হয়েছে। তৃণমূলের বহু নেতা আমার পরিচিত আছেন। বহরমপুরের চেয়ারম্যান আছেন। তিনি জানেন। তাঁরা বলুক যে অমুক বুথে কার্তিক মহারাজ বসতে দেননি। আমি চ্যালেঞ্জ করলাম। মুখ্যমন্ত্রী প্রচণ্ড মিথ্যা কথা বলেছেন। অসত্য। তাঁকে চ্যালেঞ্জ করছি। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, ভারতের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিবাদ হবে। আগামী দিনে আইনি পরামর্শও নেওয়া হবে। "