বিটন চক্রবর্তী, ময়না : 'মনে পড়ে লড়াইগুলোর সময় ? বাপ-বেটা কোথায় ছিলেন ? ১৫ দিন বাড়ির থেকে ভয়ে বেরোননি। আর আমি এখনও চ্য়ালেঞ্জ করে বলছি, সিপিএমের সঙ্গে আন্ডারস্ট্য়ান্ডিং করে, আপনারা নন্দীগ্রামে এই গণহত্য়া ঘটিয়েছিলেন।' নন্দীগ্রাম আন্দোলন নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই 'নতুন তত্ত্ব' নিয়ে এবার সুর চড়ালেন শুভেন্দু অধিকারী। পাল্টা তিনি প্রশ্ন তুললেন, 'উনি কোথায় ছিলেন ? আপনারা মা-ব্যাটা কোথায় ছিলেন ?'


নন্দীগ্রাম আন্দোলন-


১৭ বছর আগে ২০০৭ সালে জমি আন্দোলনে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল নন্দীগ্রাম। প্রাণ হারান ১৪ জন। এসবের জন্য় শুরু থেকে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় তৎকালীন মুখ্য়মন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, IPS অফিসারদেরই দায়ী করতেন। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় তাঁর ছায়াসঙ্গী ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। নন্দীগ্রাম আন্দোলনে ভর করে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় মুখ্য়মন্ত্রী হয়েছেন। শুভেন্দু অধিকারী মন্ত্রী হয়েছেন। হেভিওয়েট একাধিক দফতর পেয়েছেন ! মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের সেনাপতি হয়ে উঠেছেন। আজ দু'জনের দুটি পথ আলাদা। আর এখন সেই শুভেন্দু অধিকারীই মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের নিশানায়। সঙ্গে তাঁর বাবা প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ ও তৃণমূলের তরফে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন যিনি, সেই শিশির অধিকারীও। তাও আবার নন্দীগ্রাম আন্দোলন নিয়ে! নন্দীগ্রাম আন্দোলন নিয়ে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের এবার 'নতুন তত্ত্ব'। তিনি বলেছেন, 'মনে পড়ে লড়াইগুলোর সময় ? বাপ-বেটা কোথায় ছিলেন ? ১৫ দিন বাড়ির থেকে ভয়ে বেরোননি। আর আমি এখনও চ্য়ালেঞ্জ করে বলছি, সিপিএমের সঙ্গে আন্ডারস্ট্য়ান্ডিং করে, আপনারা নন্দীগ্রামে এই গণহত্য়া ঘটিয়েছিলেন।'


এ প্রসঙ্গে আজ ময়নার মাটি থেকে দাঁড়িয়ে চাঁচাছোলা ভাষায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধলেন বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দু বলেন, "ওঁর উত্তর নন্দীগ্রামের শহিদ পরিবার দিয়ে দিয়েছে। মা-বেটা ছিল না কোথাও, সবাই জানেন। উনি কবে ছিলেন ? ৩ নভেম্বর ২০০৬-এ প্রথম আন্দোলন সোনাচূড়ায়। উনি কোথায় ছিলেন ? উনি তো চকোলেট খেয়ে, ক্যাডবেরি-স্যান্ডউইচ খেয়ে ধর্না দিচ্ছিলেন কলকাতায়। কোথায় ছিলেন উনি ? ২০০৬ সালের ডিসেম্বর মাসের লড়াইয়ে কোথায় ছিলেন উনি ? ২০০৭-এর ৩ জানুয়ারি ভূতাবুড়া আন্দোলন শুরু হয়। সেদিন কোথায় ছিলেন উনি ? বামনচকে আমি ছিলাম। উনি নার্সিংহোমে ছিলেন। ৭ জানুয়ারি বডি আমি তুলেছি। উনি কোথায় ছিলেন ? ১৪ মার্চ উনি এসে পালিয়েছেন। সন্ধেবেলায় ঢুকতে পারেননি। ১৫ তারিখ সকালে এসে হাসপাতাল থেকে পালিয়েছেন অজ্ঞান হওয়ার ভান করে। আমি, শিশিরবাবু বডি নিয়ে ঢুকেছি। সব ময়নাতদন্ত করে। ওঁকে হিসাব দিতে হবে নাকি। কে হরিদাস পাল। ওঁর বেটা কোথায় ছিল ? দিল্লিতে ছিলেন তখন। বাপ-বেটা...অসভ্যের মতো কথাবার্তা। ব্লিচিং-ফিনাইল দিয়ে মুখ পরিষ্কার করতে হবে। এরকম অর্বাচীন মুখ্যমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গ পায়নি। আপনারা মা-বেটায় কোথায় ছিলেন ? আপনার বেটা কোথায় ছিল '১১-র আগে ? প্রশ্ন করছে মেদিনীপুর। কীভাবে হারাই দেখবেন। আপনাকে হারিয়েছি। আপনার দলকে হারাব।"       


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।