বসিরহাটে তিনিই এবার বিজেপির 'বাজি'। সন্দেশখালির রেখা পাত্রকে বসিরহাটের প্রার্থী করার পর থেকেই তাঁকে নিয়ে চর্চা তুঙ্গে। তিনি ছিলেন সন্দেশখালি আন্দোলনের অন্যতম প্রধান মুখ। তাই বসিরহাটে ভোট টানতে তাঁকে প্রার্থী করে চমকে দেয় বিজেপি। প্রথম দিকে রেখাকে মেনে নিতে না পেরে সংবাদমাধ্যমেই উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন সন্দেশখালির প্রতিবাদীদের অনেকে। তবে আস্তে আস্তে প্রতিবাদের রাস্তা থেকে সরে রেখার পাশে দাঁড়ানোর কথা বলেন তাঁরা। প্রার্থী হিসেবে তাঁর নাম ঘোষণার ২ দিন পর, রেখা পাত্রকে সরাসরি ফোন করেন প্রধানমন্ত্রীও। সম্বোধন করলেন 'শক্তিস্বরূপা' বলে। ইতিমধ্যেই রেখা বঙ্গরাজনীতির চর্চার কেন্দ্রে। বসিরহাট থেকে তিনি মনোনয়ন পেশ করেছেন।সেই সঙ্গে নিয়মমাফিক দিয়েছেন আয়-ব্যায়ের হিসেব। ৮ মে মনোনয়ন জমা করেছেন রেখা।
রেখার বিরুদ্ধে FIR - তথ্য
রেখার বিরুদ্ধে ২০২৪ এর আগে কোনও ফৌজদারী অভিযোগ ছিল না। কিন্তু সন্দেশখালি আন্দোলন চলাকালীনই তাঁর বিরুদ্ধে ফেব্রুয়ারিতে তিন-তিনটি এফআইআর হয়। আরেকটি এফআইআর দায়ের হয়েছে এপ্রিলে। একটি মাটিয়া পুলিশ থানায়, অপরগুলি সন্দেশখালি থানায়। এই তথ্য কিন্তু তাঁর মনোনয়ন পেশের আগে পর্যন্ত। একটি শারীরিক অত্যাচার ও নির্যাতনের অভিযোগ, বাকি তিনটি FIR কর্তব্যরত সরকারী কর্মচারীদের কার্য সম্পাদনে বাধা দেওয়ার জন্য। চারটি মামলার কোনওটিতেই তাঁর বিরুদ্ধে কোনও চার্জ ফ্রেম করা হয়নি। এখনও পর্যন্ত কোনও মামলাতেই দোষী সাব্যস্ত হননি রেখা।
রেখার আয়-ব্যায়
আয়-ব্যায়ের হিসেব থেকে জানা গিয়েছে, মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় রেখার হাতে ছিল ৩ হাজার টাকা মোটে। রেখার স্বামীরও হাতে থাকা মূলধনের পরিমাণ ৩ হাজার টাকা। আরও চমকে দিয়েছে রেখার ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স। রেখা বা তাঁর স্বামী সন্দীপ, কেউই এখনও পর্যন্ত একবারও আয়কর রিটার্ন জমা করেননি। তাঁর স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ায় রয়েছে একটি অ্যাকাউন্ট, যাতে রয়েছে ১০,৭৬৪ টাকা। রেখার স্বামীরও স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াতেই একটি অ্যাকাউন্ট আছে। তাতে জমানো টাকার পরিমান, ৪৬৯২ টাকা। রেখার আরেকটি ইলেকশন অ্যাকাউন্ট রয়েছে। যাতে কোনও টাকা নেই। নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া তথ্য বলছে বিজেপি প্রার্থীর কোনও বিনিয়োগ নেই। শেয়ার, ডিবেঞ্চার, বন্ড কিছুতেই বিনিয়োগ করেননি রেখা। কোনওরকম ইনভেস্টমেন্টই নেই বলে রেখার হলফনামায় দাবি।
রেখা আরও জানিয়েছেন, তাঁর গাড়ি , বাড়ি কিছুই নেই। এমনকি নেই গয়না গাটিও। উত্তরাধিকার সূত্রেও কিছু পাননি রেখা। চাষের জমি, বা অকৃষি-জমিও কেনেননি সন্দেশখালির প্রার্থীর নেই। নিজস্ব বাড়িটুকুও নেই। ব্যাঙ্ক থেকে কোনও ঋণও নেননি তিনি।
রেখা পাত্রর পড়াশোনা
মনোনয়নপত্রে রেখা জানিয়েছেন, তিনি গৃহবধূ। কোনও আয় নেই তাঁর। তাঁর স্বামীর নাম সন্দীপ পাত্র । তিনি রাজমিস্ত্রি হিসেবে দিনমজুরের কাজ করেন। তিনি রাজ্যের বাইরে কাজ করেন। রেখা পাত্র হলফনামায় উল্লেখ করেছেন, তিনি ২০০৩ সালে উত্তর বউঠাকুরানি এফ পি বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পাশ করেছেন।
আরও পড়ুন :
অক্ষয় তৃতীয় পুণ্যলগ্নে খুলল কেদারনাথের মন্দির