মালদা : সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, সুনীল মণ্ডল, শান্তনু সেন, হুমায়ুন কবীর, মৌসম বেনজির নুর (Mausam Benazir Noor)। লোকসভা ভোট যত এগিয়ে আসছে তৃণমূলে ক্ষুব্ধ, অভিমানী মুখের সংখ্যা বাড়ছে। টিকিট না পাওয়ায় এবার মুখ খুললেন মৌসম বেনজির নুর। মালদা উত্তরের দু’বারের প্রাক্তন সাংসদ বললেন, টিকিট-প্রত্যাশী ছিলেন তিনি। ভোটে জয় নিয়েও ছিলেন আশাবাদী। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে একই পরিবার থেকে ২ জন প্রার্থী হওয়ায় ভোট ভাগাভাগিতে হেরে যান বলে দাবি মৌসমের।
মৌসম বলেন, "আমি উত্তর মালদার দুই বারের সাংসদ ছিলাম। জেলা সভাপতিও ছিলাম। অবশ্যই আমার একটা প্রত্যাশা ছিল। কারণ, এর আগে ২০১৯ সালে বিজেপির কাছে হেরে গিয়েছিলাম। যেভাবে লড়াই হয়েছিল। একই পরিবার থেকে আমরা দু'জন দাঁড়িয়েছিলাম। তাতে ভোটটা ভাগাভাগি হয়েছিল। বিশেষ করে, এবার আমার ধারণ ছিল, আমি টিকিট পেলে জিতব। বিজেপিকে হারানোর প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল। যা হোক, আমাদের নেত্রী এবং দল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এখানে প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রার্থী হবেন। দলের একজন সদস্য হিসাবে সেই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই।"
এবারের লোকসভা ভোটে মালদা উত্তর থেকে প্রাক্তন IPS অফিসার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রার্থী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আর নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়ে তাঁর বক্তব্য ঘিরেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। দানা বেঁধেছে বিতর্ক। কখনও তৃণমূল প্রার্থী সরাসরি নিশানা করছেন নির্বাচন কমিশনকে, কখনও আবার তাঁর নিশানায় কেন্দ্রীয় বাহিনী। শুধু তাই নয়, তাঁর গলায় শোনা গেল 'খেলা হবে' স্লোগানও।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় বাহিনীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, "এত বিএসএফ- আধা সামরিক বাহিনী সকলকে একটাই কথা বলছি, আপনি আইনের মধ্যে থাকুন। আমরাও আইনের মধ্যে আছি। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হোক। অবাধ নির্বাচন হোক। আধাসামরিক বাহিনী যদি ভয় দেখায়, আমার নাম প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়...ম্যায় হুঁ না।"
পুরাতন মালদা পুরসভা এলাকার ওই কর্মিসভা থেকে দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, "স্কুলে বসিয়ে রাখতে হবে (কেন্দ্রীয় বাহিনীকে)। ভাল করে জল দিয়ে দেবেন। ওদের অযত্ন করবেন না। ওরাও চাকরি-বাকরি করে। শুধু বলবেন প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় খেলতে এসেছেন। বুটের দপদপানি, একে-৪৭, এসএলআর দিয়ে কোনো লাভ নেই। শুধু বলবেন, ডাকছি আধ ঘণ্টার মধ্যে ঢুকছেন প্রসূন ব্যানার্জি। উনি আইন-কানুন-অবজার্ভার বুঝে নেবেন। বাহিনীকে সম্মান ততক্ষণ দেবেন, যতক্ষণ সে আপনাকে সম্মান দিচ্ছে। আপনার গণতান্ত্রিক অধিকারে হাত দিচ্ছে না। না হলে গণতান্ত্রিক প্রতিবাদও হবে। সেই প্রতিবাদটা আমার ওপর ছেড়ে দিন। রাস্তায় নামব। অবরুদ্ধ হয়ে যাক সবকিছু। ভারত দেখবে ভোট কাকে বলে। ভারত দেখবে উত্তর মালদায় ভোট হচ্ছে।"