Mamata Banerjee Dharna LIVE : গাঁধী মূর্তির পাদদেশে ধর্না শেষ করলেন মমতা
শনিবার রাজ্যে পঞ্চম দফার ভোট। তার আগেই এই কড়া পদক্ষেপ নিল নির্বাচন কমিশন।পাল্টা সংঘাতের পথে হেঁটে কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধরণায় বসছেন তৃণমূল নেত্রী।
২৪ ঘণ্টার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে নিষেধাজ্ঞা নির্বাচন কমিশনের। প্রতিবাদে গাঁন্ধী মূর্তির পাদদেশে ধর্না তৃণমূল নেত্রীর। নির্ধারিত সময়ের আধঘণ্টা আগে আজ সকাল সাড়ে এগারোটা নাগাদ ধর্নায় বসেন তিনি। দুপুর তিনটে নাগাদ তুলে নেন ধর্না। এরপর নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হলে রাত ৮টা ৫ নাগাদ বারাসাতে জনসভা রয়েছে তাঁরা। রাত ৯টায় জনসভা করবেন বিধাননগরে। কালই উত্তরবঙ্গে যাচ্ছেন মমতা। কাল সকাল ১০টায় কোচবিহারের মাথাভাঙায় যাবেন তৃণমূলনেত্রী। তারপর তাঁর জলপাইগুড়ি, মাটিগাড়া হয়ে হরিণঘাটায় সভা করার কথা।
ধর্না শেষে বাড়ির পথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থেকে কমিশনের সমালোচনায় বিশিষ্টদের একাংশ। কবীর সুমন বলেছেন, নির্বাচন কমিশন হাস্যকর ফরমান জারি করেছে। কমিশনের স্বাতন্ত্র্য বিপন্ন বলেও তাঁর অভিযোগ।
মমতার ধর্না নিয়ে প্রশ্ন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর। তিনি বললেন, ধর্নাও তো এক ধরনের প্রচার। এ ব্যাপারে কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
নির্বাচন কমিশন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর ২৪ ঘন্টার নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এটা পরিষ্কার যে বিজেপির অঙ্গুলিহেলনেই এটা করা হয়েছে। এটা ভারতীয় গণতন্ত্র এবং স্বাধীন-স্বতন্ত্র সংগঠনগুলির সার্বভৌমত্বের ওপর সরাসরি আক্রমণ। বাংলার বাঘিনীর পাশে আছি। ট্যুইট করে জানালেন শিবসেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত।
গাঁধী মূর্তির পাদদেশ একাই ধর্নায় বসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ধর্নায় বসে ছবি আঁকছেন তিনি।
ওই জায়গা ইস্টার্ন কমান্ডের আওতাধীন। তাই এখানে কর্মসূচীতে সেনার অনুমোদন প্রয়োজন হয়। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানে পৌঁছে ধর্না কর্মসূচী শুরু করে দিয়েছেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পৌঁছলেন গাঁধী মূর্তির পাদদেশে। এদিকে, জানা গেছে-গাঁধী মূর্তির পাদদেশে তৃণমূলের ধর্নায় এখনও অনুমতি দেয়নি সেনাবাহিনী। সকাল ৯.৪০-এ ই-মেলে অনুমতি চেয়ে আবেদন তৃণমূলের। এত কম সময়ের মধ্য অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানানো হয়েছে সেনার ইস্টার্ন কম্যান্ডের পক্ষ থেকে।
আর কিছুক্ষণ পরেই ধর্নায় বসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গাঁধী মূর্তির পাদদেশে প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে।
আজ রাত আটটার পর বারাসত ও বিধাননগরে জোড়া সভা মমতার। সময়ের অভাবে বাতিল নদিয়ার কর্মসূচী।
বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, তাঁদের নেতাদের বিরুদ্ধে এর আগে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তখন তো বিজেপি নেতারা রাস্তায় বসে ধরণা দেননি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেছেন, বিজেপির অনেক নেতাও বিভিন্ন প্ররোচনামূলক কথাবার্তা বলছেন। এ ব্যাপারে কমিশন নীরব কেন? সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীও একই প্রশ্ন তুলেছেন।
প্রেক্ষাপট
কলকাতা: বাংলার ভোট রাজনীতিতে নজিরবিহীন ঘটনা। সোমবার তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভোট প্রচারের ওপর ২৪ ঘণ্টার জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করল নির্বাচন কমিশন। এই নিষেধাজ্ঞার জেরে সোমবার রাত ৮ টা থেকে মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত প্রচার করতে পারবেন না তিনি।
শনিবার রাজ্যে পঞ্চম দফার ভোট। তার আগেই এই কড়া পদক্ষেপ নিল নির্বাচন কমিশন।পাল্টা সংঘাতের পথে হেঁটে কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধরণায় বসছেন তৃণমূল নেত্রী।
সম্প্রতি তারকেশ্বরের সভা থেকে সংখ্যালঘু ভোট ভাগ না হওয়ার আবেদন জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।এরপরই তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে নালিশ করে বিজেপি।
তৃতীয় দফার ভোটের দিন, রাজ্যে এসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওই মন্তব্যের প্রসঙ্গ তুলে নরেন্দ্র মোদি বলেন, তিনি হিন্দুদের নিয়ে কোনও কথা বললে হয়ত, তাঁকে নির্বাচন কমিশন নোটিস দিয়ে দিত....!
এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নোটিস পাঠিয়ে নির্বাচন কমিশন জানায়, তিনি নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করেছেন।পাল্টা তৃণমূল নেত্রী বলেন, নোটিস পাঠিয়ে তাঁকে দমানো যাবে না।
এরইমধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে একটি বিতর্কিত মন্তব্য করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।সঙ্গে সঙ্গে ফের তাঁকে বিধি ভঙ্গের অভিযোগে আরেকটি নোটিস পাঠায় নির্বাচন কমিশন। তিনি বলেছিলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘিরে একদল ভোট দিন, আরেক দল ঘিরে রাখুন।
নির্বাচন কমিশনের জোড়া নোটিসের জবাব দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।দাবি করেন, তিনি আইন কিংবা বিধি ভঙ্গকারী কোনও মন্তব্য করেননি।কিন্তু, নির্বাচন কমিশন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই জবাবে বিন্দুমাত্র সন্তুষ্ট হয়নি।এরপরই ১২ এপ্রিল অর্থাৎ সোমবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দেয় নির্বাচন কমিশন।
৫ পাতার এই চিঠির দ্বিতীয় পাতায় অত্যন্ত কড়া সুরে কমিশন লিখেছে,মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জবাব দেওয়ার সময় নির্দিষ্টভাবে তাঁর বক্তব্যের একটি অংশ বেছে নিয়েছেন। তাঁর বক্তব্যের বাকি গুরুত্বপূর্ণ অংশটি এড়িয়ে গেছেন।
এরপরই একইভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘেরাও করা প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জবাব নিয়েও, কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।এই অংশে কিছুটা ব্যাঙ্গের সুরে তারা লিখেছে,মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্ষেত্রেও, জবাব দেওয়ার সময় তাঁর মূল বক্তব্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো এড়িয়ে গেছেন! সম্ভবত ইচ্ছে করেই ভুলে গেছেন!
এরপরই পাঁচ পাতার চিঠির ১০ নম্বর প্যারাগ্রাফে কড়া ভাষায় নির্বাচন কমিশন বলেছে...মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও বটে, তিনি অত্যন্ত প্ররোচনামূলক মন্তব্য করেছেন, যার জেরে আইন শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হতে পারে এবং যা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সরাসরি ব্যাঘ্যাত ঘটিয়েছে...
তাই কমিশন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে কোনও ধরনের নির্বাচনী প্রচারের ওপর সোমবার রাত আটটা থেকে মঙ্গলবার রাত আটটা পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করছে।
তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে কোনওভাবেই মচকাতে রাজি নন, তা অত্যন্ত স্পষ্ট করে দিয়ে ট্যুইট করে জানিয়েছেন,নির্বাচন কমিশনের এই অগণতান্ত্রিক এবং অসাংবিধানিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে মঙ্গলবার বেলা ১২টায় কলকাতায় গাঁধী মূর্তির নীচে ধর্নায় বসব।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -