করুণাময় সিংহ, মালদা : আবু হাসেম খান চৌধুরী এলাকায় কোনও কাজ করেননি। মালদার হয়ে সংসদে কোনও কথাও বলেননি। বিধায়ক নির্বাচিত হওয়ার পর এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না ইশার। সাংবাদিক বৈঠক করে মামা আবু হোসেম খান চৌধুরী ও দাদা ইশা খান চৌধুরীকে এই ভাষাতেই আক্রমণ করলেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সদস্য মৌসম বেনজির নুর। যদিও তাঁর এই মন্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ ইশা।
তিনি পাল্টা বলেন, "একই ধরনের পচা-গলা কথা তৃণমূল প্রার্থী থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবাই বলছেন। এখন মৌসমও সেই ধরনের কথা বলছেন। আমি কী কাজ করেছি, বাবা কী কাজ করেছেন এলাকার মানুষ জানেন। এলাকার মানুষ তার উত্তর দেবেন।"
একই বাড়িতে থাকলেও, রাজনৈতিকভাবে কোতোয়ালি ভবনে বিভাজন হয়েছে বহু আগে। মৌসুমের তুতো দিদি শাহানাজ কাদরিকে দলে এনে কোতোয়ালি ভবনে প্রথম ধাক্কা দিয়েছিল তৃণমূল। এরপর আবু নাসের খান চৌধুরী (লেবু) যোগদান করেন তৃণমূলে। বিধায়ক নির্বাচিত হন। ২০১৯ সালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন মৌসম নুর। কোতোয়ালি পরিবারে এটাই ছিল তৃণমূলের সবচেয়ে বড় ধাক্কা। ২০১৯ এর নির্বাচনে মালদা উত্তর থেকে মৌসুমকে প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। অন্যদিকে কোতোয়ালি বাড়ির সদস্য ইশা খান চৌধুরী কংগ্রেসের টিকিটে উত্তর মালদা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ভোট ভাগাভাগিতে পরাজিত হয়েছিলেন দু'জনেই। পদ্ম ফুটেছিল মালদা উত্তরে।
তবে তখনও কোতোয়ালি পরিবারের কাউকে আক্রমণ করতে সেভাবে দেখা যায়নি মৌসমকে। কিন্তু এবারে নির্বাচনের ঠিক আগে কোতোয়ালি পরিবারের বর্ষীয়ান সদস্য বিদায়ী সাংসদ ও গনি খান চৌধুরীর ভাই আবু হাসেম খান চৌধুরীকে আক্রমণ করলেন তিনি। আবু হাসেম খান চৌধুরী সম্পর্কে মামা মৌসমের। পাশাপাশি দাদা ইশার বিরুদ্ধে মানুষের পাশে না থাকার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন তিনি।
বরকত গনি খান চৌধুরীর ভাগ্নি মৌসম বেনজির নুর ২০০৯ এবং ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে মালদা উত্তর কেন্দ্রে কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হন। ২০১৯-এ তিনি দলবদলে তৃণমূলের টিকিটে লড়ে বিজেপির কাছে হেরে যান। ২০২০ সালে তাঁকে রাজ্যসভায় পাঠান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, ১০ মার্চ ব্রিগেডে যে মঞ্চ থেকে ৪২টি কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে, সেখানেও উপস্থিত ছিলেন মৌসম। কিন্তু, তাঁর সামনেই মালদা উত্তরে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত IPS অফিসার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম ঘোষণা করা হয়। আর এখানেই নিজের অভিমান চেপে রাখতে পারেননি মৌসম।