বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: একুশের বিধানসভা ভোটে, নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ( Mamata Banerjee ) নির্বাচনী এজেন্ট ছিলেন শেখ সুফিয়ান ( Sheikh Sufian )।লোকসভা ভোটের ( Loksabha Elections )  আগে তাঁর গলাতেই শোনা গেল দলের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভের সুর! যার জেরে প্রশ্ন উঠে গেল, পূর্ব মেদিনীপুরে কি জোরাল হচ্ছে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল? 


সোমবারই প্রথম নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র তমলুকে, প্রচারে যান তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য। তাঁকে স্বাগত জানতে অনুগামীদের নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান। কিন্তু  তাঁর সঙ্গে দেখা না করেই বেরিয়ে যান দেবাংশু ভট্টাচার্য। তারপরই চটে লাল সুফিয়ান। দলের একাংশের বিরুদ্ধে সরব হন তিনি।  


রবিবার যেদিন ব্রিগেড থেকে তৃণমূল লোকসভা ভোটে ৪২ আসনের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে, সেদিনই  নন্দীগ্রামে তৃণমূলের অন্তর্কলহ মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে। নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিল ৫০০ টি সংখ্যা লঘু পরিবার। দলবদলকারীদের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূলের প্রাক্তন গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যও। আর এই ইস্যুতেই শেখ সুফিয়ান দাবি করেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় যাঁরা দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা অনেককেই মর্যাদা দেয়নি দল, তার জন্য অনেকেই বিজেপিতে চলে গেছেন।


এরপরে একদিন কাটতে না কাটতেই তমলুকের তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য আসেন সুফিয়ানের এলাকায়। স্বাগত জানতে অনুগামীদের নিয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান। কিন্তু কোথায় দেবাংশু? দেখা না করেই বেরিয়ে যান তৃণমূলের তমলুকের প্রার্থী। এতেই চটে যান নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা। শেখ সুফিয়ান ক্ষোভ উগরে দেওয়ার পর তাঁর অনুগামীরাও রেগে যান। সোমবার দেবাংশু ভট্টাচার্য আসার আগে, তাঁর নামে দেওয়াল লিখন চলছিল। সেই লেখা বন্ধ করে রং, তুলি ছুড়ে ফেলে দেন সুফিয়ান অনুগামীরা।
রেগে গিয়ে সুফিয়ান বলেন, 'নন্দীগ্রামে যাঁরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাঁদের সঙ্গে আমাদের ঐক্য হচ্ছে না... তাঁরা পরিকল্পিত ভাবে বিজেপির হাতে ক্ষমতাটা তুলে দিতে চাইছে।' তাঁদের সঙ্গে শুভেন্দুর যোগ আছে বলেও দাবি করেন সুফিয়ান। তিনি আরও বলেন, 'আজকে এত মানুষ দাঁড়াল। দেবাংশুর দোষ নেই। দেবাংশুকে দাঁড়াতে দেয়নি। কারণ জানে যে, এখানে দাঁড়াতে দিলে দেবাংশু হয়তো কথা বলবে বা সুফিয়ান এলে যারা ভোগী মানুষ যারা দলকে ব্যবহার করে ভোগ করছে তাঁদের ক্ষতি হয়ে যাবে।' এই ঘটনা লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়াবে না তো? সেই প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।