কলকাতা : গ্রাম বাংলার ভোটের আবহে রক্তাক্ত রাজ্য। পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Election 2023) দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা পশ্চিমবঙ্গে ক্রমশ বেড়েই চলেছে হিংসা, মারামারি, খুন, জখম। নির্বাচন কমিশনার (West Bengal State Election Commission) পদে দায়িত্ব নেওয়ার পরের দিনই ৮ জুলাই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঘোষণা করেছিলেন রাজীব সিন্হা (Rajiva Sinha)।


গত ৮ জুন ভোট ঘোষণার পরের দিন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্ব। আর সেদিন থেকেই রাজ্যে শুরু হয়ে গিয়েছিল রাজনৈতিক খুন। আর গত ১৯ দিনের মধ্যে ১১ জনের প্রাণহানি হয়েছে। জখম হয়েছেন বহু। উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গ, সন্ত্রাসের রক্তচক্ষু ও রক্তের ছোপ ছোপ দাগ, কার্যত রাজ্যের সর্বত্র। মাঝে কোন কোন জেলায় কারা প্রাণ হারিয়েছেন ? 


গত ৯ই জুন, মনোনয়ন পর্বের একেবারে শুরুর দিনে মুর্শিদাবাদের (Murshidanad) খড়গ্রামে বাড়িতে ঢুকে গুলি করে খুন করা হয় কংগ্রেস (Congress) কর্মী ফুলচাঁদ শেখকে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তোলে কংগ্রেস। এরপর ১৫ই জুন, মনোনয়ন (Nomination Filing) জমা দেওয়ার শেষ দিনে ভাঙড়ে (Bhangar) খুন হন আইএসএফ (ISF) কর্মী মহিউদ্দিন মোল্লা ও ২ তৃণমূল (TMC) কর্মী রশিদ মোল্লা ও রাজু নস্কর। ওইদিনই মুর্শিদাবাদের নবগ্রামে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মোজাম্মেল শেখকে পিটিয়ে ও গুলি করে খুনের অভিযোগ ওঠে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে।


১৭ জুন কোচবিহারের (CoochBehar) দিনহাটায় বিজেপি প্রার্থীর দেওর শম্ভু দাসকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে ছুরি মেরে খুন করা হয়। ওইদিনই মালদার (Malda) সুজাপুরে পিটিয়ে মারা হয় তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান মোস্তাফা শেখকে। ১৫ জুন মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় বাম-কংগ্রেসের মিছিলে গুলি চলেছিল। গুলিবিদ্ধ হন ২১ বছরের সিপিএম কর্মী মনসুর আলম। ২১ জুন তাঁর মৃত্যু হয়। পরের দিন ২২ জুন, পুরুলিয়ায় রেলশহর আদ্রায় পয়েন্ট ব্ল্য়াঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে খুন করা হয় তৃণমূলের টাউন সভাপতি ধনঞ্জয় চৌবেকে।


২৪ জুন মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় বোমা বাঁধতে গিয়ে বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় দুষকৃতী আলিম বিশ্বাসের। এই তালিকায় এবার জুড়ল কোচবিহারের দিনহাটা। গীতালদহে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জারি ধরলা গ্রামে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল তৃণমূল কর্মী বাবু হকের।


আরও পড়ুন- 'ছোটভাইকে বলব ভাঙড়ে গন্ডগোল কম করতে'খোঁচা সওকতের, নৌশাদের পাল্টা 'বাইরের লোক কম আনুন'


সন্ত্রাসের আবহে সুষ্টু ভোটের লক্ষ্যে রাজ্যে এসে পড়তে শুরু করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force)। তবে,  নির্বাচন হতে মাঝে আরও কয়েকটা দিন বাকি, রাজ্যের সকলেই আতঙ্কে, আর কত লম্বা হবে এই মৃত্যুমিছিল !


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন


https://t.me/abpanandaofficial