আবির দত্ত, কলকাতা: ফের ঝরল প্রাণ। রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের আগেই সন্ত্রাসের বলি আরও ১। ১৫ দিনে প্রাণ গেল ৮ জনের। মনোনয়ন পর্বেই রাজ্যের নানা জেলায় ঝরেছিল রক্ত। উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায় ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছিল ১৫ জুন। মিছিল করে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে যাওয়ার সময় মিছিলে গুলি চালানোর অভিযোগ করেছিল বাম ও কংগ্রেস। সেই ঘটনায় তৃণমূলের দিকেই অভিযোগের আঙুল ছিল। ওই দিনই গুলিবিদ্ধ হন একাধিক, দাবি সিপিএমের।
১৫ জুন থেকেই গুলিবিদ্ধ সিপিএম কর্মী ২৩ বছরের মনসুর আলম হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তাঁর মাথায় গুলি লেগেছিল। আজ ভোররাতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে।
অভিযোগ নাকচ করেছিলেন মমতা:
ওই ঘটনায় তৃণমূলের দিকে অভিযোগের আঙুল উঠলেও, সেই অভিযোগ সরাসরি নাকচ করেছিলেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তিনি বলেছিলেন, 'এর আগে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বহু মৃত্যু হয়েছে...ইসলামপুর ও চোপড়ায় যা প্রবলেম হয়েছে। তার সাথে পার্টি কোনওভাবে যুক্ত নেই। যারা করেছে তাদের আমরা টিকিট দিইনি। কাল পর্যন্ত তারা টিকিট চেয়েছে। তাদের কাজে আমরা সন্তুষ্ট নই বলে তাদের আমরা টিকিট দিইনি। ইসলামপুর ও চোপড়ার ঘটনায় পার্টি কোনওভাবে যুক্ত নয়। আমি পুলিশকে বলে দিয়েছি কড়া ব্যবস্থা নিতে।'
কী ঘটেছিল সেদিন:
মনোনয়ন পর্বের শেষদিনে উত্তপ্ত উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া। চোপড়ার কাঁঠালবেড়িয়ায় বাম-কংগ্রেস কর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি করার অভিযোগ উঠেছে। বাম-কংগ্রেস প্রার্থীরা মিছিল করে মনোনয়ন জমা দিতে যাচ্ছিলেন। সেই সময়েই বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন বলে সূত্রের খবর। বাম-কংগ্রেসের দাবি, তৃণমূলের সন্ত্রাসের জেরে তাঁরা সেদিনের আগে পর্যন্ত মনোনয়নই জমা দিতে পারেননি। সেদিন চোপড়ার লালবাজার থেকে একসঙ্গে মিছিল করে বিডিও অফিসে মনোনয়ন জমা দিতে যাচ্ছিলেন কংগ্রেস ও সিপিএম প্রার্থীরা। তখনই তাঁদের উপর হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনার সময় কোনও পুলিশ ছিল না।
একদিকে যখন রাজ্যের নানা কোণা থেকে হিংসার অভিযোগ উঠছে। তখনই শীর্ষ আদালতে ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য। পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহারের জন্য হাইকোর্টের নির্দেশই বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। তারপরে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে ২২ জেলার জন্য ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে পাঠানো হয়েছে কমিশনের তরফে। অর্থাৎ জেলা পিছু কেন্দ্রীয় বাহিনী মাত্র ১ কোম্পানি! ১ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনীতে সাধারণত থাকেন ১০০ থেকে ১০৫ জন। তাঁদের মধ্যে পরিস্থিতি অনুযায়ী কাজে লাগানো হয় কম-বেশি ৮০ জনকে। হিংসাস্নাত পশ্চিমবঙ্গের জন্য় কি এই সংখ্য়ক কেন্দ্রীয় বাহিনী আদৌ পর্যাপ্ত? উঠছে প্রশ্ন।
আরও পড়ুন: একের বেশি ফর্ম ১৬ থাকলে কীভাবে ফাইল করবেন ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন ? রইল সহজ সমাধান