তুহিন অধিকারী, বাঁকুড়া: পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা। এরই মধ্যে পঞ্চায়েত স্তরে ভোটের আগেই একাধিক আসনে জয় পেয়ে গেল তৃণমূল। তাও আবার বিজেপির শক্তঘাঁটিতে। বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর মহকুমার ৫৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৩৭টিতেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হল শাসকদল। ৬টি পঞ্চায়েত সমিতির আসনের মধ্যে চারটিই গেল তাদের দখলে। একই ছবি পুরুলিয়াতেও। সেখানেই গ্রাম পঞ্চায়েতের সাতটি এবং পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসন ভোটের আগেই দখল করেছে তৃণমূল। 


উত্তর ২৪ পরগনা থেকে মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়া থেকে পুরুলিয়া। মনোনয়ন জমার সময়সীমা শেষের পর স্ক্রুটিনি শুরু হতেই একাধিক জেলা থেকে আসতে শুরু করেছে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূলের জয়ের খবর। সেই ছবি দেখা গিয়েছে জঙ্গলমহলের দুই জেলা বাঁকুড়া ও পুরুলিয়াতেও।


বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর মহকুমায় মোট ৫৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। তার মধ্যে জয়পুর, কোতুলপুর, ইন্দাস ও পাত্রসায়র, এই চারটি ব্লকের ৩৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হল তৃণমূল। এই মহকুমার ৬টি পঞ্চায়েত সমিতির আসনের মধ্যে চারটিই ভোটের আগে শাসকদলের দখলে চলে এসেছে। এই খবর সামনে আসার পরই উল্লাসে মাতেন তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা। ২০১৯-এ এই বিষ্ণুপুর লোকসভা আসনেই জয়ী হয়েছিলেন বিজেপির সৌমিত্র খাঁ। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটেও এই বিষ্ণুপুর মহকুমার সোনামুখী,ইন্দাস, কোতুলপুর ও বিষ্ণুপুর-এই চারটি বিধানসভায় জয়ী হয় বিজেপি। 


কিন্তু এর দু'বছরের মধ্যেই রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের এই হাল কেন? বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ সভাপতি দেবপ্রিয় বিশ্বাস বলেন, 'প্রশাসন, পুলিশ ও তৃণমূলের গুন্ডারা এই জয় তাদের হাতে এনে দিয়েছে। যারা নমিনেশন করতে গেছে তাদের পুলিশ থেকে শুরু করে হ্যাকেল করা হয়েছে। বিডিও অফিস থেকেও বের করে দেওয়া হয়েছে। ব্যাপক সন্ত্রাস চলেছে। এটা তো নারকীয় উল্লাস। গণতন্ত্রের হত্যাকারীরা উল্লাস করছে।' 


পাল্টা দাবি:
অভিযোগ উড়িয়ে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়েছে তৃণমূলও। বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি সুব্রত দত্ত বলেন, '১৪৪ ধারা আছে। সিসিটিভির নজরদারিতে ফাইলিং হচ্ছিল। দায়িত্ব নিয়ে বলছি, কোনও দল যদি ব্লক গেটে এসে থাকে, তাহলে যে কেন্দ্রের জন্য এসেছে, সেখানে প্রার্থী প্রত্যাহার করব। বাস্তবে ওদের সাংগঠনিক দিক দিয়ে ওরা অনেক দূরে। ওরা প্রার্থী পায়নি।'


প্রশাসন সূত্রে খবর, সোনামুখী ও বিষ্ণুপুরে বিধানসভা এলাকায় বিজেপি কয়েকটি আসনে প্রার্থী দিয়েছে। ইন্দাসে গ্রাম পঞ্চায়েতে মাত্র একটি আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছে গেরুয়া শিবির। চার ব্লকে গুটি কয়েক প্রার্থী দিতে পেরেছে সিপিএম। ফলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় আসা গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির সিংহভাগই বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েত হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। 


একই ছবি পুরুলিয়াতেও:
এখনও পর্যন্ত দুটি গ্রাম পঞ্চায়েতের সাতটি আসনে এবং পঞ্চায়েত সমিতির একটি আসনে বিনা লড়াইয়েই জয়ী হয়েছে তৃণমূল।


আরও পড়ুন:চেক লেখার সময় এই কাজটি করলে মুহূর্তে ফাঁকা হতে পারে অ্যাকাউন্ট!