ঋত্বিক প্রধান, পূর্ব মেদিনীপুর: পূর্ব মেদিনীপুরের মারিশদা গ্রাম পঞ্চায়েত হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের। দখল করেছে বিজেপি। তৃণমূল পরাজিত হলেও, যে পঞ্চায়েত প্রধানকে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় সরিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি নির্দল হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হয়েছেন।


পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির যে মারিশদা গ্রামে গিয়ে গ্রামবাসীদের অভাব-অভিযোগ শুনেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সরিয়ে দিয়েছিলেন, তৃণমূল পরিচালিত মারিশদা পঞ্চায়েতের প্রধান, উপপ্রধান এবং স্থানীয় অঞ্চল সভাপতিকে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে, পূর্ব মেদিনীপুরের সেই মারিশদা গ্রাম পঞ্চায়েত হাতছাড়া হল তৃণমূলের। সেই পঞ্চায়েত দখল করল বিজেপি।


১৯৮৩ সালের পর, এই প্রথম কংগ্রেস বা তৃণমূল ছাড়া অন্য কোনও দল এই পঞ্চায়েত দখল করল। যে পঞ্চায়েত প্রধানকে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় সরিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি নির্দল হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। জয়ীও হয়েছেন।


৩ ডিসেম্বর, পূর্ব মেদিনীপুরের মারিশদায় অভিষেকের সামনে এলাকার অনুন্নয়ন-সহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয়দের একাংশ। এরপরই অভিষেকের নির্দেশ মতো ইস্তফা দিতে হয় মারিশদা পঞ্চায়েতের প্রধান ঝুনুরানি মণ্ডল, উপপ্রধান রামকৃষ্ণ মণ্ডল ও অঞ্চল সভাপতি গৌতম মিশ্রকে। সেই দিন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান ও অঞ্চল সভাপতিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইস্তফা দিতে হবে।'


এরপরই, তৃণমূলের পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থী তালিকায় অপসারিত প্রধান ও অঞ্চল সভাপতির নাম থাকায় বিতর্ক তৈরি হয়। বিতর্ক শুরু হতেই তাঁদের দলীয় প্রতীক না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল। তারপরেই নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। জোড়া ফুলের পরির্বতে, আম প্রতীকে লড়াই করেন অপসারিত প্রধান ঝুনুরানি মণ্ডল। কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে কোনও প্রার্থী দেয়নি তৃণমূল। ভোটের ফল বেরনোর পর দেখা যায়, বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে তৃণমূল।


১৭ আসনের মারিশদা পঞ্চায়েতে বিজেপি পেয়েছে ৯টি আসন। তৃণমূল ৬ টি আসনে জিতেছে এবং ঝুনুরানি মণ্ডল-সহ ২ নির্দল জয়লাভ করেছেন।


বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি অসীম মিশ্র বলেন, 'মারিশদা অঞ্চলে বিজেপি জিতেছে। অঞ্চলের মানুষ ঠিক করে নিয়েছেন, বিজেপির জয়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁরাও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে।'
 
তৃণমূল কংগ্রেসের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তরুণ মাইতি বলেন, '২-১ টা অঞ্চল পেয়ে তাঁরা ভাবছেন পুরো জেলা পেয়ে গিয়েছেন। তৃণমূলের সাহস আছে, যাঁরা মানুষের জন্য কাজ করে না, তাঁদের তৃণমূল টিকিট দেয় না। নির্বাচক মণ্ডলী যা ঠিক ভেবেছে করেছে, এতে বিজেপির কোনও কৃতিত্ব নেই।' প্রতিক্রিয়ার জন্য ফোন করা হলে ঝুনুরানি মণ্ডল ফোন ধরেননি। বাড়িতে গিয়েও তাঁর কোনও খোঁজ মেলেনি।


আরও পড়ুন: Abhishek Baneerjee: আদালতের সমালোচনা করায় অভিষেকের সাংসদপদ খারিজের দাবি, স্পিকারকে চিঠি দিলেন সৌমিত্র