সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: ভোট ঘোষণার সময় থেকেই উত্তপ্ত থেকেছে উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকা। ভোটের সময়েও গন্ডগোল হয়েছে। এবার ভোট গণনার দিনেও উত্তপ্ত হয়ে উঠল উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর। গণনাকেন্দ্রে তৃণমূল ও বিজেপির বচসার জেরে, বিজেপি প্রার্থীকে টানতে টানতে বের করে দিল পুলিশ।
অশান্তির মনোনয়ন। অশান্তির ভোট। সেই অশান্তি এবার গণনাতেও। মঙ্গলবার সকালে পঞ্চায়েত ভোটের শুরুতেই সেই ছবি দেখা গেল ব্যারাকপুর ১ নম্বর ব্লকের মাখনলাল হাইস্কুলের গণনাকেন্দ্রে। গণনার শুরু হওয়ার কিছু পরেই মামুদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রার্থী বরুণ সর্দার অভিযোগ করেন, গণনার ব্যালট বাক্স বদলে দেওয়া হয়েছে। ওই বিজেপি প্রার্থী বরুণ সর্দার মামুদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপির হয়ে দাঁড়িয়েছেন। তাঁকে বলতে শোনা যায় জিপি পাল্টে গিয়েছে। বিতর্কের মাঝেই তিনি বলেন, 'আমি আদিবাসী ছেলে। এসটি ছেলে। আমার বুথ ডুবে গেল। প্রিসাইডিং অফিসারের ফুল সিগনেচার নেই ব্যালট পেপারে।
দাঁড়ান, সুস্থভাবে কাজ করুন। আমি ক্যান্ডিডেট।'
এই নিয়ে তৃণমূল প্রার্থীর সঙ্গে বিজেপি প্রার্থীর বচসা শুরু হয়। তারপরেই, তাঁকে টানতে টানতে ঘরের বাইরে নিয়ে যায় পুলিশ। সেইসময় রীতিমতো ধস্তাধস্তি হয় তাঁর সঙ্গে পুলিশের। যখন তাঁকে টানতে টানতে গণনাকেন্দ্রের ভিতর থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন তাঁকে বলতে শোনা যায়, 'সিট চুরি হয়ে গেল। আর আটকাতে পারলাম না। অনেক লড়াই দিয়েছিলাম, প্রথম থেকে।'
শুধু এই ঘটনাই নয়। এদিন গণনার শুরু থেকেই রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন এলাকায় বিরোধী প্রার্থী, বিরোধী দলের কাউন্টিং এজেন্টরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ উঠেছে। এদিন সকালেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ফকিরচাঁদ কলেজের গণনাকেন্দ্রে ঢুকতে যাচ্ছিলেন প্রতীক উর রহমান-সহ সিপিমের কাউন্টিং এজেন্টরা। সেইসময়ই পড়তে থাকে একের পর এক বোমা। কাউন্টিং সেন্টারে ঢুকতে না পারার প্রতিবাদে পথ অবরোধ করে সিপিএম। সেখানে পুলিশ বাহিনী গিয়ে সিপিএম কর্মীদেরই গ্রেফতার করে। SFI-এর রাজ্য সভাপতি এবং সিপিএম প্রার্থীর এজেন্ট প্রতীক উর রহমান বলেন, 'এ লড়াই চলবে। অ্যারেস্ট করে আমাদের আটকানো যাবে না। ডায়মন্ডহারবারের মানুষ দেখছে। ডায়মন্ডহারবারের মানুষ দেখছে।'
ডায়মন্ডহারবারের এসডিপিও জানিয়েছেন, কয়েকজন সিপিএমের নেতাকে আটক করা হয়েছিল, পরে থানায় জামিন দেওয়া হয়।
হাওড়ার পাঁচলাতেও একই অভিযোগ উঠেছে। নয়াচকের যদুনাথ হাইস্কুলের গণনাকেন্দ্রে সিপিএম-বিজেপি-কংগ্রেস
সব বিরোধী দলের কাউন্টিং এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে বিরোধী দলের প্রার্থী ও তাঁদের কাউন্টিং এজেন্টরা রানিহাটি মোড়ে ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কে অবরোধ করে। পুলিশ লেখা একটি গাড়িতে চলে ভাঙচুর। পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষে সগড়াইয়ের পথসাথী গণনাকেন্দ্রে ১৪৭ নম্বর বুথে সিপিএমের কাউন্টিং এজেন্ট ছিলেন জামিদুল ইসলাম। অভিযোগ হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলার সময় গণনাকেন্দ্রের ভিতরেই তাঁর ওপরে চড়াও হয় তৃণমূলের লোকেরা। সব ক্ষেত্রেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন: 'বাংলায় নির্বাচনে রক্তের হোলি খেলা বন্ধ হোক', হুমায়ুন, চিরঞ্জিতের পর এবার সরব মদন মিত্র