গৌতম মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: পঞ্চায়েত ভোটের ফল ঘোষণার পরেই ফের দক্ষিণ ২৪ পরগনায় তৃণমূল কর্মীকে নৃশংস খুন। কুপিয়ে খুন করে পুকুরে দেহ ফেলে দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূলের। রায়দিঘির চাঁদপাশা এলাকা থেকে উদ্ধার তৃণমূল কর্মী বিপ্লব হালদারের ক্ষতবিক্ষত দেহ। মথুরাপুর ২ নম্বর ব্লকের কাশীনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের চাঁদপাশা এলাকার ১০৫ নম্বর বুথের বাসিন্দা ছিলেন বিপ্লব। এই বুথে বিজেপি প্রার্থী জয়ী হন। অভিযোগ, তারপর থেকেই তৃণমূল কর্মীকে হুমকি দিচ্ছিল বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি। এই নিয়ে পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর, বাংলায় ৩৫ দিনে ৪২ জনের মৃত্য়ু হল।


পঞ্চায়েত ভোটের শুরু থেকে শেষ--এখনও পর্যন্ত বাংলায় ৩৫ দিনে ৪৪ জনের মৃত্য়ু। তার মধ্য়ে, ২৩ জন তৃণমূলের।  ভোটের ফল ঘোষণার পরেই দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ফের তৃণমূল কর্মীকে নৃশংসভাবে খুন। মঙ্গলবার গভীর রাতে, রায়দিঘির চাঁদপাশা এলাকায় পুকুর পাড় থেকে উদ্ধার হয় তৃণমূল কর্মী বিপ্লব হালদারের ক্ষতবিক্ষত দেহ। 


পরিবার সূত্রে খবর, জোকায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করতেন বিপ্লব। এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। মঙ্গলবার রাত ১০টা নাগাদ তাঁকে পরিচিত বেশ কয়েকজন বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। রাত ১ টা বেজে গেলেও, বাড়ি না ফেরায়, যুবককে খুঁজতে বের হন প্রতিবেশীরা। রাত ৩টে নাগাদ, বাড়ির অদূরে পুকুর পাড়ে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় বিপ্লবকে। প্রত্য়ক্ষদর্শীদের দাবি, মৃতদেহের কিছুটা অংশ পুকুরের জলের মধ্য়ে ছিল, বাকিটা পাড়ে। মাথায় ছিল গভীর ক্ষত। খুন করে মৃতদেহ পুকুরে ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। 


নিহতের বোন তনুশ্রী নাইয়ার দাবি, 'মেরে ফেলে দিয়েছে পুকুরে। বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গেছে। ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করেছে। ছুরি দিয়ে কুপিয়েছে। আমার ভাই তৃণমূল ছিল। আমার দাদাকে যাঁরা মেরেছে শাস্তি চাই।' নিহতের আত্মীয় অশোক নাইয়া বলেন, 'কুপিয়ে, জলে ফেলে দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। অপোজিশন পার্টির ছেলেরা। বাংলার এই পরিস্থিতি আর দেখতে চাই না। এরা মারা যায়। আর নেতারা ঠান্ডা ঘরে বসে থাকে। ওই একমাত্র রোজগেরে ছিল। একটা পরিবার ধ্বংস হয়ে গেল।'


কাশীনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের চাঁদপাশা এলাকার ১০৫ নম্বর বুথের বাসিন্দা ছিলেন বিপ্লব। এই বুথে বিজেপি প্রার্থী জয়ী হন। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপিই খুন করেছে তাঁদের কর্মী বিপ্লব হালদারকে। বুধবার সকালে নিহতের বাড়ি যান স্থানীয় বিধায়ক অলোক জলদাতা। তিনি বলেন, 'বিজেপি বর্বরোচিতভাবে খুন করেছে। ছেলেটার একার আয়ে সংসার চলত। মায়েরই ৫-৬ হাজার টাকার ওষুধ লাগে মাসে। বিজেপি মাত্র ১ টা বুথেই জিতেছে। তাতে এসেই এই কাণ্ড।' 


নিহতের বাবা তাঁদের সমর্থক, দাবি বিজেপির। নিহত তৃণমূল কর্মীর এক প্রতিবেশীকে গ্রেফতার করেছে রায়দিঘি থানার পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, খুনের আগের রাতে যাঁরা বিপ্লবকে বাড়িতে ডাকতে এসেছিলেন, তাঁদের মধ্য়ে ছিলেন অভিযুক্ত ব্য়ক্তিও।


আরও পড়ুন: আজ বাজারে লাভ দিতে পারে এই ৬ স্টক, কোন দামে তুলবেন ?