ভাঙড়: বাংলাজুড়ে বিরোধীদের নিধন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকির। পুলিশমন্ত্রী তথা  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ চাইলেন নৌশাদ। 


তিনি বলেন, 'গত তিনদিন ধরে এমন অবস্থা। আমি মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে গিয়েছিলাম আমার সন্দেহ হচ্ছে ভাঙড়ে বড়সড় কিছু ঘটে যেতে পারে।' রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। নিরাপত্তার দাবিতে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। পুলিশ কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না, নির্বাক দর্শক হয়ে রয়েছে বলে অভিযোগ নৌশাদের। আরাবুল ইসলামকে গ্রেফতারের দাবি নৌশাদের। 


এর আগে ৩ দিন ধরে তুমুল অশান্তি হয়েছে ভাঙড়ে। বুধবার নবান্নে পৌঁছে গিয়েছিলেন ভাঙড়ের বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকি। মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে দেখা করে ভাঙড়ের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলার জন্য়ই গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বুধবার মুখ্য়মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা হয়নি নৌশাদের। তারপরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভাঙড়। 


মনোনয়নের শেষ দিনেও রক্তাক্ত বাংলা, উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়- হিংসার ঘটনায় নিহত ৩য। চোপড়ায় বাম-কংগ্রেসের উপর হামলা, গুলিতে নিহত ১, আহত ৩। ভাঙড়ে সংঘর্ষ, তৃণমূলকর্মী রশিদ মোল্লার মৃত্যু। ভাঙড়ের ২ নম্বর ব্লকে তৃণমূলকর্মীর মৃত্যুর দাবি সওকত মোল্লার । গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছেন এক আইএসএফ কর্মীও।


চোপড়ায় গুলিতে ২জনের মৃত্যু, আহত অন্তত ২০, দাবি মহম্মদ সেলিমের। টানা ৪ দিন ধরে ভাঙড়ে সন্ত্রাস, মনোনয়নের শেষ দিনে মাথায় গুলি, আইএসএফ কর্মী খুন। পুলিশের সামনেই অবাধে সন্ত্রাসের ছবি। মাথায় গুলিবিদ্ধি হয়ে নিহত আইএসএফ কর্মী মইউদ্দিন মোল্লা, দাবি আইএসএফ কর্মীদের। সকাল থেকে মুড়ি-মুড়কির মতো পড়ছে বোমা। পুলিশ কোনও কড়া পদক্ষেপ করেনি বলেই অভিযোগ বিরোধীদের। সংবাদমাধ্য়ম খবর করতে গেলে আটকে দেয় পুলিশ। এদিন ভাঙড়ে সংবাদমাধ্য়মের কর্মীদের তাড়া করে বোমা ছুড়তে দেখা যায় দুষ্কৃতীদের। এদিনই ভাঙড়ে বিডিও অফিসের মধ্যেই আইএসএফ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র ছিনতাই করার অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। এদিনও সকাল থেকে উত্তপ্ত ছিল ভাঙড়। শান্তিপূর্ণ মনোনয়নপত্র জমা তো দূর, বরং চোখের সামনে মুড়ি-মুড়কির মতে অন্তত ৩০টি বোমা উড়ে আসে সেখানে। স্থানীয়দের দাবি, কমপক্ষে ১০০টি বোমা পড়ে। মনোনয়নপর্ব শেষ হয়ে গেলেও বোমাবাজি অব্যাহত থাকে। দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা একাধিক গাড়ি। ধোঁয়ায় ঢেকে যায় চারিদিক। 


ভাঙড়-কাণ্ডে প্রতিক্রিয়া মুখ্যমন্ত্রীর:
এদিন ভাঙড়ের ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভাঙড়ে অশান্তির ঘটনায় আইএসএফ-কেই দায়ী করেছেন মমতা। তিনি বলেন, 'প্রশাসনকে বলেছি কড়া পদক্ষেপ নিতে হবে। ভাঙড়ে উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলা হয়েছে। আমাদের তরফেও কাল প্রতিরোধ হয়েছে। বাম আমলে কাউকে নমিনেশন ফাইল করতে দেওয়া হত না। নন্দীগ্রামে মানুষকে কেটে হলদি নদীতে ভাসিয়ে দিত। মানুষের হাত-পা কেটে দিত। এবারে বেশি বাড়াবাড়ি হচ্ছে।'