কলকাতা: রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের অশান্তির মাঝে নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অস্বস্তি বজায় রইল। আর এদিন নাম না করলেও জোর নিশানা করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। এদিন তিনি কটাক্ষ বলেন, 'খোকাবাবুর কিছু হবে না, দিদি মোদিকে ম্যানেজ করতে জানে।' তবে এদিন তিনি পঞ্চায়েত ভোটে হিংসার ঘটনায় তোপ দাগতে ছাড়েননি।


এদিন অধীর চৌধুরী বলেন,'ভোট-হিংসায় নিহত-আহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশের আর্জি। কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও কার নির্দেশে এই ভোট নিয়ে ছেলেখেলা করা হল? আদালতের নজরদারিতে স্বশাসিত সংস্থার মাধ্যমে তদন্ত করা হোক। যারা আহত, প্রয়োজনে বড় হাসপাতালে রেখে চিকিৎসার কথা বলেছে আদালত। বাংলা স্থানীয় নির্বাচনের জন্য উপযুক্ত জায়গা নয়। দিদিকে ময়দান ছেড়ে দিয়েছে দিল্লির বিজেপি নেতারা।দিদির কাছে মোদি জরুরি, অন্য বিজেপি নেতারা জরুরি নয়। যখন চিতা চলছে, তখন কেন্দ্রীয় বাহিনী ভোট করাতে আসছে।'


অপরদিকে, কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ থেকে সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে ঘুরেও স্বস্তি মিলল না অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। নিয়োগ দুর্নীতি তদন্তে অভিষেকের ভূমিকা নিয়ে তদন্ত করবে ইডি-সিবিআই। কলকাতা হাইকোর্টের রায়কেই বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। এই মুহূর্তে হস্তক্ষেপ করা মানে তদন্ত বন্ধ করা, জানাল সর্বোচ্চ আদালত। আর এদিন এই ইস্যুতেই কটাক্ষ অধীরের।


শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়, অভিষেকের ভূমিকা খতিয়ে দেখতে ED এবং CBI-কে যে নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ, তাতে হস্তক্ষেপ করল না সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। বহাল রইল রায়। সর্বোচ্চ আদালতে ধাক্কা খেলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। CBI জিজ্ঞাসাবাদের পর, নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় রক্ষাকবচ চেয়ে, সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মামলায়, এদিন অভিষেকের হয়ে সুপ্রিমকোর্টে সওয়ালে অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি বলেন, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের পর, আমরা সুপ্রিম কোর্টে এসেছিলাম। সুপ্রিম কোর্ট মামলাটি অন্য বিচারপতির এজলাসে স্থানান্তর করার নির্দেশ দেয়। হাইকোর্টের নির্দেশে ত্রুটি রয়েছে। 


তখন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ তার পর্যবেক্ষণে বলে, আগের নির্দেশ ছাড়াও বিচারপতির কাছে অন্য বিষয় ছিল খতিয়ে দেখার। এটা চূড়ান্ত বিচার হিসাবে ধরে নেওয়া উচিত নয়। এটা শুধুমাত্র তদন্ত সংক্রান্ত নির্দেশ। এরপর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী বলেন, এটা খুবই গুরুতর বিষয়, স্বাধীনতার ব্যাপার। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একটা বক্তৃতা দিয়েছিলেন। তারপর, কুন্তল ঘোষ বলেছিলেন যে, তাঁকে অভিষেকের নাম বলানোর জন্য চাপ দেওয়া হয়েছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব করা হয়েছিল। তিনি নির্দেশ পালন করেছেন এবং সহযোগিতা করেছেন। ED তাঁকে ছ-বার তলব করেছিল। তাঁর স্ত্রীকে দু-বার বিমানবন্দরে আটকেছে। শ্যালিকাকে বিমানবন্দরে আটকানো হয়েছে। CBI-এর মামলায়, সুযোগ খুঁজছে ED।


আরও পড়ুন, 'ভোটলুঠের অভিযোগে হাইকোর্টে মামলা হবে', শুভেন্দুর নিশানায় 'মুখ্যমন্ত্রী'


অভিষেকের আইনজীবী আরও বলেন,অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যখন নবজোয়ার যাত্রায় বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছিলেন, তখন ২৪ ঘন্টার নোটিসে তাঁকে তলব করছে। ৯ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। ১২ বছরের আর্থিক রেকর্ড চেয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। পাল্টা, ED-র আইনজীবী বলেন, এটা ED-র তদন্তের বিষয়।