কলকাতা: মনোনয়নপর্ব থেকেই দাদাগিরির অভিযোগে বিদ্ধ শাসকদল (TMC)। একাধিক জেলায় বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ (Panchayat Elections 2023)। নির্বাচনের আগে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্যও চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সেই আবহেই বিরোধী শূন্য পঞ্চায়েতের ডাক দিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা উদয়ন গুহ (Udayan Guha)। তাঁর এই মন্তব্যে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
বুধবার সোশ্যাল মিডিয়ায় বিরোধী শূন্য় পঞ্চায়েত গড়ার ডাক দিয়েছেন উদয়ন। তাঁর বক্তব্য, 'দীপক ভট্টাচার্য-সহ ১২ অঞ্চল সভাপতি, অন্যান্য নেতাদের কাছে আমার দাবি, বিরোধী শূন্য ব্লক চাই'। দিনহাটা ২ নম্বর ব্লকের ১২টি পঞ্চায়েতকেই বিরোধী শূন্য করার ডাক দিয়েছেন উদয়ন। সরাসরি দাবি জানিয়েছেন অঞ্চল সভাপতিদের কাছে।
১২টির মধ্যে চারটিতে ইতিমধ্যেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেছে তৃণমূল। বাকি আটটি পঞ্চায়েতও বিরোধী শূন্য চান উদয়ন।
রাজ্যের মন্ত্রীর এই ফেসবুক পোস্ট ঘিরে বিতর্ক শুরু হতে সময় লাগেনি। তবে বিতর্কের মুখে পড়ে উদয়নের সাফাই, "নাতি পরীক্ষা দিলে আমি ভাল রেজাল্টই চাইব।" যদিও উদয়নের মন্তব্য নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপি। তাদের দাবি, এভাবে বিরোধী শূন্য করলে দিনহাটায় তৃণমূলই শূন্য় হয়ে যাবে।
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘিরে আগে থেকেই বিতর্ক ছিল। এবছরও তার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে বলে লাগাতার অভিযোগ তুলছেন বিরোধীরা। গায়ের জোরে শাসকদল বিরোধীদের মনোনয়নে বাধা দিয়েছে এবং এখন মনোনয়ন প্রত্য়াহার করে নিতে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠে আসছে। সেই আবহেই এমন মন্তব্য করলেন উদয়ন।
উল্লেখ্যস ইতিমধ্যেই আগের পঞ্চায়েত নির্বাচনের মিল পেতে শুরু করেছেন বিরোধী শিবিরের নেতারা। কারণ পঞ্চায়েতে নির্বাচনের আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের ধারা অব্যাহত তৃণমূলের। উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি বিধানসভার ১৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ১২টিতেই ইতিমধ্যে বিনা যুদ্ধে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। এর মধ্যে সন্দেশখালি ১ নম্বর ব্লকের ৫টি ও ২ নম্বর ব্লকের ৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দখল করেছে শাসকদল। মিনাখাঁ ব্লকের কুমারজোল গ্রাম পঞ্চায়েতও ভোটের আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল।
মনোনয়ন-পর্বে ভাঙড়ে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ছবি ধরা পড়লেও, ভাঙড়ে লাস্ট ল্যাপে অনেকটাই পিছিয়ে বিরোধীরা। নির্দিষ্ট সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার কারণ দেখিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে বাম, আইএসএফ প্রার্থীদের একাধিক মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির ৩০টি আসনের মধ্যে ১৪টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। বেশ কিছু গ্রাম পঞ্চায়েতেও একই ফল। ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকি বিষয়টি নিয়ে আজই আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। বিরোধী প্রার্থীদের সময়সীমা পেরিয়ে মনোনয়ন জমা দেওয়ার অভিযোগ নির্বাচন কমিশনে জানিয়েছিল তৃণমূল।