মালদা: গণনা কেন্দ্রে কারচুুপির অভিযোগ তৃণমূলের (TMC) বিরুদ্ধে। মালদার হবিবপুরে গণনা কেন্দ্রের সামনেই ধর্নায় বসলেন বিজেপি (BJP) সাংসদ খগেন মুর্মু। বিজেপির দাবি, হবিবপুর ব্লকে জেলা পরিষদের ৪ নম্বর আসনে ১২০০ ভোটে জয়ী হন তাদের প্রার্থী সোনালি টুডু। অভিযোগ, ব্লক প্রশাসন অন্যায়ভাবে তৃণমূল প্রার্থী রেজিনা মুর্মুকে জয়ী ঘোষণা করে। এর প্রতিবাদেই সকাল ৮টা থেকে হবিবপুরে গণনা কেন্দ্রের সামনে নেতা, কর্মীদের নিয়ে ধর্নায় বসেন মালদা (Malda) উত্তরের বিজেপি (BJP) সাংসদ খগেন মুর্মু। এর আগে মিনিট দশেক মালদা-নালাগোলা রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিজেপি। তৃণমূলের (TMC) প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি। 


পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর থেকে, কোনও পর্বই হিংসা ছাড়া মিটল না। নির্বাচন ঘোষণার পর থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগে সরব হয়েছিল কার্যত সব বিরোধী দল। বালি থেকে রানিচক, কাঁকসা তেকে খণ্ডঘোষ, গণনার দিন কোথাও কোথাও প্রতিরোধ গড়ে তুলল বিরোধীরা। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্ব, তেইশের পঞ্চায়েত ভোটের পিছু ছাড়ল না অশান্তি। গত মঙ্গলবার ভোট গণনার সকালে উত্তর থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, পূর্ব বর্ধমানে দেখা গেল সেই একই ছবি। ডায়মন্ড হারবারে চলল বোমাবাজি। কোথাও আবার বিরোধী দলের এজেন্টদের মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। 


পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের বিপুল জয়ের মধ্য়েই সিপিএম-বিজেপি জোর চাপানউতোর! ভোট ভাগাভাগিতে কার জন্য় তৃণমূলের লাভ হল, তাই নিয়েই রাজনৈতিক তরজা। তবে বিরোধীদের এই বাগযুদ্ধের মধ্য়েই পঞ্চায়েতে বিপুল জয়ে আত্মহারা তৃণমূল মতুয়া গড় থেকে জঙ্গলমহল, বিজেপিকে টেক্কা দিতে পেরে উল্লসিত তারা অন্য়দিকে বিরোধীদের দাবি, পঞ্চায়েত ভোটে প্রহসন হয়েছে তাই এই ফলাফলে আর যাই হোক জনমতের প্রতিফলন ঘটেনি।


কিন্তু, বিরোধীদের দাবিকে গুরুত্ব না দিয়ে বিপুল জয়ের জন্য় মানুষকে ধন্য়বাদ জানিয়েছেন অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। নো ভোট টু মমতার ডাক দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। নাম না করে তাকেও কটাক্ষ করেছেন অভিষেক। বাম-বিজেপি-কংগ্রেসকে একযোগে আক্রমণও শানিয়েছেন। পাল্টা বিরোধীদের দাবি, ভোটই যখন সুষ্ঠু ও অবাধ হয়নি, তখন এই ফলাফলের গুরুত্ব থাকে না।


আর তড়িঘড়ি ভোটের দিন ঘোষণা থেকে মনোনয়ন পর্বে অশান্তি, এক দফায় ভোট ঘোষণা থেকে শুরু করে ভোটের দিন সন্ত্রাস, কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে টালবাহানা থেকে শুরু করে গণনার দিনও অশান্তি ঘিরে যার দিকে বারবার আঙুল উঠছে, সেই রাজ্য় নির্বাচন কমিশন এখনও বিরোধীদের কাঠগড়ায়।   


শুধু পঞ্চায়েত ভোটের দিনই মৃত্য়ু হয় ১৬ জনের। ভোটের দিন আক্রান্ত হয়েছিলেন, এমন আরও চারজনের মৃত্য়ু হয় পরে। খোদ তৃণমূলের অন্দরেও ভোট হিংসা নিয়ে আওয়াজ উঠেছে। যদিও, পঞ্চায়েতে বিপুল জয়ের পর এখন তাদের গলায় শুধুই বিরোধীদের কটাক্ষ। ভোট হল। রেজাল্ট বেরোল। কিন্তু যে মায়েদের কোল খালি হয়ে গেল, তাদের ক্ষতি কি কোনও দল কোনওদিন পূরণ করতে পারবে?