বিটন চক্রবর্তী, পাঁশকুড়া : পঞ্চায়েত ভোট পর্ব মিটতেই এবার দলবদল নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু। উঠছে নানা অভিযোগ। এবার পাঁশকুড়ার বিজেপির কয়েকজন জয়ী পঞ্চায়েত সদস্য অভিযোগ তুললেন, তৃণমূলে যোগ দিতে চাপ দিচ্ছেন খোদ বিজেপির জেলা সভাপতি এবং কোষাধ্যক্ষ। যদিও, এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিজেপির জেলা সভাপতি। কোনও মন্তব্য করতে চাননি জেলা কোষাধ্যক্ষ।


পঞ্চায়েত ভোট মিটতেই শুরু হয়েছে দলবদলের খেলা। দিকে দিকে সিপিএম-বিজেপি-কংগ্রেস ছেড়ে শাসক শিবিরে নাম লেখাচ্ছেন জয়ী পঞ্চায়েত সদস্যরা। পাঁশকুড়ায় আবার, জোর করে তৃণমূলে যোগ দেওয়ানোর চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করে, দলে ফিরেছেন জয়ী সিপিএম প্রার্থী। আর এবার বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন শুভেন্দু অধিকারীর জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার বিজেপির কয়েকজন জয়ী পঞ্চায়েত সদস্য।


বিজেপির দখলে যাওয়া কেশাপাট এবং মাইশোরা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ২২ জন বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্যের দাবি, তাঁদের তৃণমূলে যোগ দিতে চাপ দিচ্ছেন খোদ বিজেপিরই জেলা সভাপতি এবং জেলা কোষাধ্যক্ষ। এমনকী দলবদলের জন্য মোটা অঙ্কের টাকার টোপও দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি না কি এমন যে তাঁদের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আত্মগোপন করে থাকতে হচ্ছে।


এ প্রসঙ্গে পাঁশকুড়ার বিজেপির জয়ী প্রার্থীর স্বামী ও বিজেপির বুথ সভাপতি প্রদীপ দাস বলেন, '২৮টা বুথ । তার মধ্যে আমরা বিজেপি ১৬টা পেয়েছি। তৃণমূল ১১টা পেয়েছে, আর নির্দল ১টা পেয়েছে। নির্দল তৃণমূলকে যুক্ত করে ১২টা হয়েছে। আর ৩টে ওরা কিনতে চাইছে। মণ্ডল নেতৃত্বের কাছে যখন খবর এসেছে, তখন রাতারাতি আমাদের একটা সেফ জায়গায় রেখে দেন।' 


পাঁশকুড়া মাইশোরা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপির জয়ী প্রার্থী মিতা সোরেন বলছেন, 'উপরের স্তরের লোকগুলো আমাদের নিয়ে গরু-ছাগলের মত বেচাকেনা হচ্ছে।' 

এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি শুভেন্দুর জেলাতেই বিজেপিতে 'ঘরশত্রু বিভীষণ' ? অভিযোগ উঠছে জেলা সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। এপ্রসঙ্গে অবশ্য বিজেপিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র বলেন, আজ পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেস এই হর্স ট্রেডিং কোনও স্তরে করেনি। না সাংসদ, না বিধায়ক, না জেলা পরিষদ, না ত্রিস্তর পঞ্চায়েত। তাই বলি, তাদের অভ্যন্তরীণ গোলযোগ তারা সামলে নিক। এর মধ্যে তৃণমূল মাথা ঘামাবে না।

বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, বিষয়টি রাজ্য পার্টিকে জানানো হয়েছে। ওই এলাকায় যাঁরা বিভিন্ন জায়গায় নির্বাচিত বিজেপি প্রার্থী, তাঁদের এক জায়গায় জড়ো করে, তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে বিক্রি করার ছক করছে। জেলা সভাপতি ও জেলা কোষাধ্যক্ষ সম্পর্কে যে ধরনের মন্তব্য করা হচ্ছে, তার কোনও সত্যতা আছে বলে মনে করি না। গভীর ষড়যন্ত্র ছাড়া অন্য কিছু নয়।

অভিযোগের বিষয়ে জেলা বিজেপির কোষাধ্যক্ষ জগদীশ প্রামাণিকের বক্তব্য়, জেলা সভাপতি যা বলেছেন, এনিয়ে তার বাইরে কোনও কথা বলব না।