সমীরণ পাল, শুভেন্দু ভট্টাচার্য এবং কমলকৃষ্ণ দে, কলকাতা: গণননার ( Panchayat Poll Counting ) দিনও শিরোনামে ব্যালট! বালিতে সিপিএমের প্রতীকের ওপর ছাপ মারা ব্য়ালট ছুড়ে ফেলে দেওয়া হল নর্দমায়! কোচবিহারে ( Cooch Behar ) আবার ব্যালট পেপারের ওপর জল ও কালি ঢেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে। বাসন্তীতে বিজেপি প্রার্থীকে জোর করে হারানো, হাবড়ায় সিপিএম প্রার্থীর জয় আটকাতে, ব্য়ালট পেপার খেয়ে ফেলার অভিযোগ উঠল তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে।
ব্যালট ভর্তি বাক্স পুকুরে
ভোটের দিনে ব্যালট বাক্সে ঢালা হয়েছিল জল! কোথাও ব্যালট ভর্তি বাক্সের ঠাঁই হয়েছিল পুকুরে, নর্দমায়।
গণনার দিনও সেই মুখ্য চরিত্রে রইল ব্যালট! উঠল ব্যালটে কারচুপি থেকে, ব্যালট ছিনতাইয়ের এমনকি বিরোধীদের হারাতে ব্যালট গিলে ফেলার অভিযোগও উঠল! হাওড়া গণনাকেন্দ্রের ভিতরে বাক্সের মধ্যে কড়া নিরাপত্তায় যে ব্যালট থাকার কথা, সেটাই মিলল গণনাকেন্দ্রের বাইরে নর্দমায়।
নর্দমায় সিপিএমকে ভোট দেওয়া ব্যালট
হাওড়ার ডোমজুড়ের বালি দুর্গাপুর পল্লিমঙ্গল বিদ্যামন্দিরে বালি-জগাছা ব্লকের আটটি গ্রাম পঞ্চায়েতের গণনা চলছিল। সকাল থেকেই বিরোধী দলের এজেন্টদের ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এরইমাঝে কাউন্টিং সেন্টারের পাশেই একটি নর্দমায় পড়ে থাকতে দেখা যায় বান্ডিল বান্ডিল ব্যালট! উদ্ধার হওয়া সেই ব্যালটগুলির সবকটিতেই সিপিএম প্রার্থী প্রশান্ত দেবের পক্ষে ভোট পড়েছে। এ নিয়ে তুমুল হট্টগোল ছড়িয়ে পড়ে গণনাকেন্দ্রের সামনে। সিপিএমের অভিযোগ, তাদের হারাতে গণনাকেন্দ্রের জানালা দিয়ে ব্যালটগুলি ফেলে দেওয়া হয়েছে।
ব্যালটে জল ও কালি
কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণ হাইসকুলে গণনা চলছিল ফলিমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪১ নম্বর বুথের।
অভিযোগ হঠাৎ তৃণমূলের প্রার্থী রিঙ্কু রায় রাজভর এসে ব্যালটগুলির ওপর জল ও কালি ঢেলে দেন।
এরপরই তুমুল হট্টগোল বেঁধে যায় কাউন্টিং সেন্টারের ভিতরে। পুলিশ এসে অভিযুক্ত তৃণমূল প্রার্থীকে আটক করে।
বাসন্তীর মসজিদবাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৯১ নম্বর বুথে বিজেপি প্রার্থী অনিতা নস্করকে জোর করে হারিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল ও প্রশাসনের একাংশের বিরুদ্ধে। বিজেপির দাবি, বেশ কয়েকবার গণনার পর এই বুথে এক ভোটে জয়ী হন অনিতা নস্কর। কিন্তু অভিযোগ, প্রশাসনের এক কর্তার সঙ্গে যোগসাজশ করে হারিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। এ নিয়ে তৃণমূল প্রার্থীর কাউন্টিং এজেন্টকে জিজ্ঞাসা করলে, তিনি প্রথমে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। রাজারহাট বিষণুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে আবার এক ভোটে জয়ের পরও ব্যালট ছিড়ে জোর করে টাই করে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি প্রার্থী। শেষে টসে জিতে যায় তৃণমূল।
তৃণমূলকে চার ভোটে হারিয়ে জিতেছিলেন বলে দাবি হাবড়ার ভুরকুণ্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ মজুমদারের। কিন্তু অভিযোগ, হঠাৎ পাশের টেবিল থেকে সিপিএমে ভোট দেওয়া কয়েকটি ব্যালট মুখে পুরে দেন তৃণমূল প্রার্থী মহাদেব মাটি।
মালদা জেলা স্কুলে শোভানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের গণনা চলছিল। একটি আসনে কংগ্রেস প্রার্থী মাত্র এক ভোটে জয়ী হন। অভিযোগ, সেইসময় তৃণমূল প্রার্থীর এজেন্ট একটি ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যান। বাইরে মোতায়েন পুলিশ অফিসার তাঁকে ধরে ফেলেন।
আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রাম ব্লকের একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েতে বিজেপির অভিযোগ, গণনায় জয়ী হওয়ার পরও তাঁদের হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভোটের পর এবার গণনাতেও উঠল ব্যালট কারচুপির অভিযোগ!