নয়াদিল্লি: দেরিতে হলেও রাজনীতির মঞ্চে পা রেখেছেন। কিন্তু নির্বাচনী রাজনীতি থেকে এখনও দূরে প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে ফের তাঁকে প্রার্থী করার দাবি উঠতে শুরু করল কংগ্রেস থেকে। গাঁধী পরিবারের গড় বলে পরিচিত, উত্তরপ্রদেশের বরেলীতে প্রিয়ঙ্কাকে প্রার্থী করার দাবিতে পোস্টার দেখা গিয়েছে ইতিউতি। এতদিন বরেলীর আসনটি সনিয়া গাঁধীর দখলে ছিল। কিন্তু লোকসভা থেকে সম্প্রতি রাজ্যসভায় চলে গিয়েছেন সনিয়া। তাঁর ছেড়ে যাওয়া ওই আসনে প্রিয়ঙ্কাকে দেখতে চাইছেন কংগ্রেসের একাংশ। (Priyanka Gandhi Vadra)
I.N.D.I.A জোটের শরিক হিসেবে, উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে হাত মিলিয়ে নির্বাচনে লড়ছে কংগ্রেস। রায়বরেলী আসনটি তাদের ছেড়েও দিয়েছেন অখিলেশ যাদব। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ওই আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেনি কংগ্রেস। সেই আবহেই রায়বরেলীতে প্রিয়ঙ্কাকে প্রার্থী চেয়ে পোস্টার দেখা গেল, যাতে লেখা রয়েছে, ‘কংগ্রেসের উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যান। রায়বরেলী প্রিয়ঙ্কা গাঁধীজিকে ডাকছে। দয়া করে আপনি আসুন’। (Lok Sabha Elections 2024)
ওই পোস্টারে প্রিয়ঙ্কার ছবি রয়েছে, ছবি রয়েছে কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে, দলের সাংসদ রাহুল গাঁধী, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী, স্বাধীনতা সংগ্রামী চন্দ্রশেখর আজাদের। এখনও পর্যন্ত রায়বরেলী আসনটিতে প্রার্থী ঘোষণা করেনি BJP-ও। তাই রায়বরেলী নিয়ে টানটান উত্তেজনা রয়েছে সব দলেই। শেষ পর্যন্ত প্রিয়ঙ্কাকে সেখানে প্রার্থী করা হয় কি না, সেদিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।
রায়বরেলীতে কংগ্রেসের আধিপত্য আজকের নয়। একসময় ফিরোজ গাঁধীর কেন্দ্র বলে পরিচিত ছিল রায়বরেলী। পরে ইন্দিরা গাঁধীর নির্বাচনী কেন্দ্র হয়ে ওঠে। অমেঠী দিয়ে রাজনীতিতে অভিষেক ঘটলেও, গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে রায়বরেলী ধরে রেখেছিলেন সনিয়া। এ বছরই রায়বরেলী থেকে সরে গিয়ে রাজ্যসভায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি এবং বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন। শারীরিক অসুস্থতা এবং বার্ধক্যজনিত কারণেই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানান সনিয়া। খোলা চিঠি লেখেন রায়বরেলীবাসীকেও। দেখা হবে, কথা দেন।
সনিয়া রায়বরেলী ছাড়ার আগে থেকেই যদিও কানাঘুষো চলছিল। সনিয়ার জায়গায় প্রিয়ঙ্কা রায়বরেলীতে প্রার্থী হতে পারেন বলে গুঞ্জন লুটিয়েন্স দিল্লিতেও। কিন্তু কংগ্রেসের তরফে বা প্রিয়ঙ্কা নিজে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। সেই আবহেই প্রিয়ঙ্কাকে চেয়ে পোস্টার দেখা গেল রায়বরেলীতে। নির্বাচনী রাজনীতিতে প্রিয়ঙ্কাকে দেখতে চাওয়ার এই দাবি নতুন নয়। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে রাহুলের হাতে যখন কংগ্রেসের সভাপতিত্ব, সেই সময়ও প্রিয়ঙ্কাকে সামনের সারিতে আনার দাবি উঠেছিল। কিন্তু পারিবারিক দায়-দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে নিজেকে সরিয়ে রাখেন প্রিয়ঙ্কা। যদিও গত কয়েক বছরে পরিস্থিতি পাল্টেছে অনেকটাই। রাজনৈতিক সভা-মিছিল থেকে কংগ্রেসের বৈঠক, সবেতেই প্রিয়ঙ্কার উপস্থিতি চোখে পড়ছে। তাই এ বছর লোকসভা নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হতে পারেন বলে আশবাদী কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা।