কলকাতা: বনমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বেশ কিছুদিন ধরে রাজ্য সরকার ও তৃণমূল দলের কাজকর্ম নিয়ে বিক্ষুব্ধ রাজীব, এর আগে একাধিকবার মন্ত্রিসভার বৈঠকেও যাননি তিনি। এই মুহূর্তে রাজীব রাজভবনে যাচ্ছেন, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের হাতে তুলে দেবেন ইস্তফাপত্র।

দিনকয়েক আগে ফেসবুক লাইভে এসে রাজীব বলেছিলেন, দলের কয়েকটি সিদ্ধান্তে তিনি মনক্ষুণ্ণ, তাঁকে স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। দলের মধ্যে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়েও সরব হন তিনি, বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে অন্যান্য নেতাদের লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মন্ত্রিসভার পাঁচ পাঁচটা বৈঠকে তিনি অনুপস্থিত ছিলেন, ফলে জল্পনা তৈরি হয়, তিনিও কি শুভেন্দু অধিকারীর পথে হেঁটে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন? বেশ কিছুদিন ধরেই রাজীব বেসুরো গাইছেন, কিছুদিন আগে টালিগঞ্জের এক অরাজনৈতিক সভায় গিয়ে কার্যত দলের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। কিন্তু তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না, গড়িমসি করছিলেন। ফেসবুক লাইভেও স্পষ্ট কিছু জানাননি, যে ভবিষ্যতে তিনি ঠিক কী করতে চান। অবশেষে তিনি সিদ্ধান্তে পৌঁছে বনমন্ত্রীর পদ ছাড়ার কথা ঘোষণা করলেন। কেন তিনি এই পদক্ষেপ করলেন তা হয়তো কিছুক্ষণের মধ্যেই জানাবেন তিনি।

রাজীবের অসন্তোষ ও ক্ষোভ নিয়ে ওয়াকিবহাল ছিল তৃণমূল। দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে দু দুবার তাঁর সঙ্গে রাজীবের বৈঠক হয়। দলের পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোরও কথা বলেন তাঁর সঙ্গে। প্রশ্ন করা হয়, কেন বারবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি অনুপস্থিত রয়েছেন। জানা যাচ্ছে, হাওড়া জেলায় দলীয় কাজকর্ম যেভাবে চলছে তাতেই মূলত রাজীবের ক্ষোভ ছিল। কিন্তু বারবার আলোচনার পরেও রাজীবের ক্ষোভ প্রশমন করা যায়নি। তাৎপর্যপূর্ণ হল, হাওড়ার আর এক মন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লও অল্পদিন আগে ইস্তফা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রিসভা থেকে।

নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আগামীকাল রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ঠিক তার আগে রাজীবের এই ইস্তফা নানা জল্পনা উস্কে দিল।