সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: পঞ্চায়েতের (Panchayat Election 2023) টিকিট নিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার জেলা পরিষদ প্রার্থী (TMC Zilla Parishad Candidate) ও হাবড়ার তৃণমূল নেতা বৃন্দাবন ঘোষের পরিবারে বিদ্রোহের আগুন। ভুরকুন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতে এবার তৃণমূল প্রার্থী করেছে তাঁর পুত্রবধূ পায়েল ঘোষকে। দলের সিদ্ধান্ত মানতে না পেরে নির্দল প্রার্থী হয়েছেন তৃণমূল নেতার ভাইপো সাধনচন্দ্র ঘোষ।


কেন ঝামেলা?
একেই বলে, বাঘের ঘরে ঘোগের বাসা! তৃণমূলের জেলা পরিষদ প্রার্থীর পরিবারেই টিকিট নিয়ে গৃহযুদ্ধ চরমে! তৃণমূলের বিরুদ্ধে নির্দল গোঁজ। ভাইয়ের বৌ-এর বিরুদ্ধে ভোটের ময়দানে ভাসুর। হাঁড়ি-বাড়ি আলাদা হলেও দুই পরিবারের সম্পর্ক অটুটই ছিল। কিন্তু, প়ঞ্চায়েত ভোটে টিকিট নিয়ে চওড়া হয়েছে পরিবারিবারিক ফাটল। উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়া ২ নম্বর ব্লক গ্রামীণ তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি বৃন্দাবন ঘোষ।
ভুরকুন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান তিনি। এবার তাঁকে জেলা পরিষদের প্রার্থী করেছে তৃণমূল। কিন্তু ভোটের ময়দানে তাঁর পরিবারের অন্য দুই সদস্য়ের লড়াইয়ে রীতিমতো অস্বস্তিতে তিনি। ভুরকুন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩৭ নম্বর আসনে এবার তৃণমূল প্রার্থী করেছে বৃন্দাবনের পুত্রবধূ রাজনীতিতে নবাগতা পায়েল ঘোষকে। ওই আসনে প্রার্থী হওয়ার কথা ছিল তাঁরই- এই দাবি করে দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়েে নৌকা প্রতীকে নির্দল হয়ে হয়ে দাঁড়িয়েছেন সাধনচন্দ্র ঘোষ। তিনি বৃন্দাবনের ভাইপো এবং পায়েলের ভাসুর। সাধনচন্দ্র ঘোষের অবশ্য দাবি, 'দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে রয়েছেন। কিছু বঞ্চনা সাধারণ মানুষের ক্ষোভ, একনায়কতন্ত্র, পরিবারতন্ত্রের থেকে মানুষকে মুক্ত করার জন্য় আমরা লড়ব। রাজনীতির সঙ্গে ব্য়ক্তিগত সম্পর্ক এক নয়। ব্য়ক্তিগত সম্পর্ক অটুট। এটা নীতির লড়াই। উনি ওঁর রাজনীতি করবেন। আমি আমার রাজনীতি করব। কোনও আলোচনা না করে করেছেন। পরিবারতন্ত্র বাড়ি থেকে হঠানো যাবে না।' কী বলছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের তৃণমূল প্রার্থী বৃন্দাবন ঘোষ?  তাঁর বক্তব্য, 'কিছু লোকের ইন্ধন ওর পিছনে রাজনৈতিক ছিল। পরে ও যখন ভুলটা বুঝবে শুধরে নেবে। কেন এটা করল, ওর ব্য়ক্তিগত ব্য়াপার। দল যাকে টিকিট দিয়েছে মানুষ তাঁকে চাইছে। আমি আশা করছি তৃণমূলের প্রার্থী ১০০ ভাগ জিতবে।' ভোটের ময়দানে যুযুধান হলেও পরিবারিক সম্পর্কে কোনও প্রভাব পড়বে না বলে দাবি তৃণমূল প্রার্থী পায়েলের। বলছেন, 'জেতার ব্যাপারে আমি একদম নিশ্চিত। দাদাভাই দাঁড়িয়েছেন। পারিবারিক কোনও অশান্তি নেই। ভোট ভোটের জায়গায়। পারিবারিক সম্পর্ক পারিবারিক সম্পর্কের জায়গায়। কোনও সমস্য়া হবে না।'


 


কটাক্ষ বিজেপির...
বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি, তাপস মিত্র অবশ্য গোটা বিষয়টার সমালোচনা করতে ছাড়েননি। বললেন, 'ভুরকুন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের যিনি প্রধান ছিলেন তিনি অনেক অর্থ উপার্জন করেছেন। অনেক দুর্নীতির সঙ্গে তিনি জড়িত। কয়েক কোটি টাকার মালিক। যার জন্য় জেলা পরিষদের প্রার্থী হলেও ছেলের বৌকে ওখানে দাঁড় করিয়েছেন। তাঁর ভাইপোও দাঁড়িয়েছে নির্দল হয়ে। অর্থ উপার্জনই তাঁদের উদ্দেশ্য।' প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েতের টিকিট নিয়ে জেলায় জেলায় শাসক দলের অন্দরের ক্ষোভ-বিক্ষোভ প্রকাশ্যে এসেছে। তা নিয়ে শাসক নেতার পরিবারের অন্দরে বিদ্রোহে জমে উঠেছে হাবড়ার ভুরকুন্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের লড়াই।


আরও পড়ুন:'ভুয়ো ব্যালট পেপার তৈরি করা হচ্ছে', বিস্ফোরক সুকান্ত