পটনা: ২৩ মে সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশিত হবার পর থেকেই অন্ন স্পর্শ করছেন না রাষ্ট্রীয় জনতা দলের প্রধান লালু প্রসাদ যাদব। ২ দিন মুখে কোনও খাবারই তুলছেন হিন্দ বলয়ের এই জনপ্রিয় নেতা। লালু হাসপাতালের মিল নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন বলেই খবর পিটিআই সূত্রে। রবিবার চিকিৎসকরা আরজেডি প্রধানকে অনেকবার বোঝানোর পরও তিনি অন্ন গ্রহণ করতে রাজি হননি। আর এতেই আরও চিন্তিত হয়ে পড়েছেন রাঁচির রাজেন্দ্র প্রসাদ ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সের চিকিৎসকরা।
লালু প্রসাদ যাদবের দেখভাল করার দায়িত্বে রয়েছে যে চিকিৎসক মণ্ডলী, তার প্রধান ডঃ উমেশ যাদবও ‘নেতাজি’কে বোঝাতে পারেননি। ২০১৭ সালে পশু খাদ্য কেলেঙ্কারিতে দোষী প্রমাণিত হওয়ার পর থেকেই রাঁচির এই সরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন আরজেডি প্রধান। রক্তচাপ, সুগার এবং কিডনির সমস্যা রয়েছে লালু প্রসাদের। দিনে তিনবার করে ইনসুলিনও চলে। এমন অবস্থায় প্রাক্তন রেলমন্ত্রী খাওয়া দাওয়া কার্যত বন্ধ করে দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চিকিৎসকরা।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালে রাষ্ট্রীয় জনতা দল তৈরি করেছিলেন লালু প্রসাদ যাদব। ২ দশকেরও বেশি সময় আরজেডি লোকসভায় তাঁরা প্রতিনিধি পাঠিয়েছে। তবে এই প্রথমবার লোকসভা নির্বাচনে শূন্য হাতে ফিরতে হল আরজেডিকে। বিহার ও ঝাড়খণ্ড, দুই রাজ্যেই ‘মহাজোটের শরিক’ হয়েছিল লালুর দল। আর দুই রাজ্যেই এনডিএ জোটের কাছে ধরাশায়ী হয়েছে তাঁরা। বিহারে একটি মাত্র আসন পেয়েছে বিজেপি বিরোধী জোট। ২০১৪ সালে প্রবল ‘মোদি ঝড়েও’ বিহার থেকে ৪টি আসন পেয়েছিল আরজেডি। এবার ভোট পেলেও সেই সবকটি আসনই হাতছাড়া হয়েছে হ্যারিকেন মার্কা দলের। হেরেছেন লালুর বড় মেয়ে মিসা ভারতী। আরজেডি-র হাতছাড়া হয়েছে সরন আসনটিও। ঝাড়খণ্ডে হেরেছেন ওই রাজ্যের আরজেডি সভাপতি অন্নপূর্ণা দেবীও।
উল্লেখ্য, এই প্রথম লালু প্রসাদকে ছাড়াই ভোট লড়েছিল আরজেডি। বছর ২ আগে নীতীশ কুমারের সঙ্গে জোট বেঁধে বিজেপিকে ঠেকিয়েছিলেন লালু। বিহার বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হয়েছিল আরজেডি। যদিও পরে জোট ভেঙে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে এনডিএ সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হন নীতীশ-ই। তবে লোকসভায় লালু পুত্র তেজস্বী ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ি দেবী কোনও ম্যাজিকই দেখাতে পারেননি। সোমবার দলের এমন ফলের পর্যালোচনায় বসছে রাষ্ট্রীয় জনতা দল।