সুদীপ চক্রবর্তী, উত্তর দিনাজপুর: বিজেপি থেকে তৃণমূলে ফিরতে দণ্ডি দেওয়া ঘিরে তুমুল আলোড়ন হয়েছিল রাজ্যে। এবার সেই নির্যাতিতাকে প্রার্থী করল রাজ্যের শাসক দল। দণ্ডিকাণ্ডে নির্যাতিতা ৩ মহিলার মধ্যে একজনকে প্রার্থী করল তৃণমূল কংগ্রেস। দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনে গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রার্থী করল তৃণমূল কংগ্রেস।


প্রথমে শাস্তি, তারপরে পুরস্কার। বিজেপি থেকে তৃণমূলে ফেরার পর রাস্তায় দণ্ডি কাটানো হয়েছিল ওই ৩ জনকে। তাঁদের মধ্যেই একজনকে পঞ্চায়েতে প্রার্থী করল তৃণমূল। চলতি বছরের ৭ এপ্রিল তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ৩ আদিবাসী মহিলাকে দণ্ডি কাটিয়ে ফেরানো হয় পুরনো দলে। এই ছবি প্রকাশ্যে আসতেই তোলপাড় পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে।  



মহিলাদের রাস্তায় দণ্ডি কাটানো নিয়ে বাংলা জুড়ে বিতর্কের ঝড় শুরু হয়। তারপরেই মহিলা সংগঠনের জেলা সভানেত্রী পদের পর, তাৎপর্যপূর্ণভাবে বালুরঘাট পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানো হয় প্রদীপ্তা চক্রবর্তীকে। আদিবাসী সংগঠনগুলির প্রবল চাপের মুখে মহিলা সংগঠনের জেলা সভানেত্রীর পদে বসানো হয় আদিবাসী মুখ স্নেহলতা হেমব্রমকে। ২ মে দক্ষিণ দিনাজপুরে তৃণমূলে নবজোয়ার কর্মসূচি চলাকালীন তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়।


কিন্তু, আদিবাসী ক্ষোভে পুরোপুরি জল ঢালতে পারেনি তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে, পঞ্চায়েত ভোটে, যখন দণ্ডিকাণ্ডকে হাতিয়ার করে ময়দানে নামতে আঁটঘাঁট বাঁধছে বিরোধীরা, তখনই তৃণমূল এমন পদক্ষেপ করল, যাঁর উপর নির্যাতন, তাঁকেই প্রার্থী করল তৃণমূল। দলবদলের জন্য যাদের দণ্ডি কাটতে হয়েছিল, তাঁদেরই একজনকে তপনের গোফানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৭১ নম্বর বুথে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। 


আদিবাসী অধ্যুসিত এই বুথে ১৪০০ ভোটার। যাঁকে রাস্তায় দণ্ডি কাটতে হয়েছিল, তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ার পর তিনিই বলছেন, ভোটে দণ্ডিকাণ্ডের কোনও প্রভাব পড়বে না। তিনি বলেন, 'দল টিকিট দিয়েছে খুশি আছি। আদিবাসীরা মুখ ফিরিয়ে নেবে না। বিরোধীরা নানা কথা বলবে। কোনও প্রভাব পড়বে না।'


গোটা ঘটনাকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। দক্ষিণ দিনাজপুরের বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বাপি সরকার বলেন, 'তৃণমূল বলে আদিবাসীদের সঙ্গে আছে। কিন্তু নেই। দন্ডিকাণ্ডে প্রায়শ্চিত্য়ের জন্য করছে।' 
দক্ষিণ দিনাজপুরের তৃণমূলের সহ সভাপতি সুভাষ চাকী বলেন, 'বিরোধীদের কথায় যায় আসে না। প্রথম থেকেই আমাদের দলে ছিলেন। ভুল বুঝে বিজেপিতে। পরে ফিরে আসেন। প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা আছে বলেই করা হয়েছে।'


১৪ আসন বিশিষ্ট তপনের গোফানগর গ্রাম পঞ্চায়েত। ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে জিতে প্রধান হয়েছিলেন এই তৃণমূল প্রার্থীর স্বামী। ২০১৮ সালেও এই পঞ্চায়েত ছিল তৃণমূলের দখলে। এই বছরের পঞ্চায়েত  তেইশের পঞ্চায়েত ভোটে কী হবে? উত্তর মিলবে ১১ জুলাই।


আরও পড়ুন:চেক লেখার সময় এই কাজটি করলে মুহূর্তে ফাঁকা হতে পারে অ্যাকাউন্ট!