রুমা পাল, কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Election 2023) নিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে বিস্তারিত রিপোর্ট পাঠালেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিন্হা (Rajeev Sinha)। রিপোর্টে বলা হয়েছে, পর্যবেক্ষকদের রিপোর্টের ভিত্তিতেই চিহ্নিত করা হয় স্পর্শকাতর বুথ। রা্জভবনের তরফে পাঠানো অভিযোগের ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল বলেও উল্লেখ রিপোর্টে। 


ভোটের দিন অধিকাংশ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দেখা না মেলায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।এই ইস্যুতে কমিশনের ঘাড়ে দায় চাপিয়েছেন বিএসএফের ডিআইজি। স্পর্শকাতর বুথের তালিকা রাজ্য নির্বাচন কমিশন দেয়নি বলে দাবি। পাশাপাশি দাবি করেন, কমিশনের কাছে তালিকা চেয়েও মেলেনি। কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছিলেন বিএসএফের ডিআইজি এস এস গুলেরিয়ার। আর ভোট পর্ব মিটতে এবার রাজ্যপালকে রিপোর্ট পাঠালেন কমিশনার। 


কী বলা হয়েছে ওই রিপোর্টে?


রিপোর্টে বলা হয়েছে, স্পর্শকাতর বুথ চিহ্নিত করা হয়েছিল পর্যবেক্ষকদের রিপোর্টের ভিত্তিতে। ৪৮৩৮টি স্পর্শকাতর বুথ কেন্দ্রীয় বাহিনী ও রাজ্যের সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন ছিল। অনেক মানুষের চাহিদা ছিল, ভোটের পরেও স্পর্শকাতর এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকুক। আদালতের নির্দেশ মেনে ভোটের পর ১০ দিন কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে। 


ভোটের দিন রাজভবনে তরফে প্রায় ২ হাজার অভিযোগ পাঠানো হয়েছিল। তার ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। কমিশনারের কাছে যে ১৭৭ টি অভিযোগ পাঠানো হয়েছিল তাও জেলাশাসকদের পাঠানো হয়। তার ভিত্তিতেও পদক্ষেপ নেওয়া হয়। রিপোর্টে রাজ্য কমিশনার বলেছেন, ভোট গণনা শান্তিপূর্ণ হয়েছে। কয়েকটি জায়াগায় গণনাকেন্দ্রের বাইরে জমায়েত ছাড়া বিশৃঙ্খলার খবর আসেনি। দুষ্কৃতী বা যারা গণনাকেন্দ্রের বাইরে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিল, তাদের আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। রিপোর্টে রাজীব সিন্হা দাবি করেছেন, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের চেয়ে এবারে ৪২ শতাংশ বেশি মনোনয়ন জমা পড়েছে। 


অশান্তি অব্যাহত: মনোনয়ন থেকে নির্বাচন পেরিয়ে ভোট গণনা। পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Poll 2023) ঘোষণার পর থেকে, কোনও পর্বই হিংসা ছাড়া মিটল না। কোথাও উদ্যত আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দুষ্কৃতীদের দাপাদাপি করতে দেখা গেছে। কোথাও মুহুর্মুহু বোমাবাজি হয়েছে। রক্ত ঝরেছে। মৃত্যু হয়েছে। সেই ট্রেন্ড বজায় রেখেই ভোট গণনার দিন সকাল থেকেই দিকে দিকে ফের অশান্তির ঘটনা ঘটে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক গণনা কেন্দ্রের বাইরে উত্তেজনা ছড়ায়। বিরোধী এজেন্টদের গণনা কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তবে সন্ত্রাসের দাপাদাপি সেখানেই থেমে নেই। মনোনয়নপর্ব থেকে এখনও পর্যন্ত, অর্থাৎ গত ৩৭ দিনের হিসেব অনুযায়ী রাজ্যে ভোট হিংসার বলি হয়েছেন ৪৯ জন। 


আরও পড়ুন: Wooden Furniture: বর্ষার আর্দ্রতায় নষ্ট হচ্ছে বাড়ির কাঠের আসবাব? জেনে নিন কীভাবে নেবেন যত্ন