সত্যজিৎ বৈদ্য, কলকাতা : পঞ্চায়েত ভোট ( Panchayat Poll ) ঘিরে বেলাগাম সন্ত্রাস। পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্ব মিটলেও, মৃত্য়ুমিছিল চলছেই। প্রাণ গেল আরও একজনের। এনআরএসে মৃত্যু হল মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের তৃণমূল কর্মীর।
৮ জুলাই পঞ্চায়েত ভোটের দিন, বড়শিমুল গ্রাম পঞ্চায়েতে ভোট দিতে যাওয়ার সময় বোমাবাজিতে গুরুতর জখম হন তৃণমূল কর্মী সইবুর রহমান ও তাঁর ভাই মইদুল রহমান। ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয় বলেও অভিযোগ ওঠে কংগ্রেস কর্মীদের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার মৃত্যু হয় মইদুলের। আজ ভোর রাতে এনআরএসে মৃত্যু হয় তৃণমূল কর্মী সইবুরের। রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটে এই নিয়ে ৩৭ দিনে ৪৯ জনের মৃত্যু হল।
আরও মৃত্যু
ভোট মিটেছে। কিন্তু, মৃত্যু থামছে না। বৃহস্পতিবার মৃত্যু হয় এক আহত বিজেপি কর্মীর। এর ফলে, ৮ জুন ভোট ঘোষণার পর থেকে, ভোটের আগের দিন পর্যন্ত সন্ত্রাসে মৃত্যু হয় ২১ জনের। শুধুমাত্র ভোটের দিন, অর্থাৎ ৮ জুলাই সন্ত্রাসে মৃত্যু হয়েছে ২১ জনের। ভোটের পর থেকে গণনা, মাঝের এই ২ দিনে খুন ৬ জন। তারপরই থামছে না মৃত্যু। একের পর এক মৃত্যু হয়েই চলেছে।
নিহতের পরিবারের দাবি, ভোটের আগের রাতে তৃণমূল কর্মীদের হাতে আক্রান্ত হন বিজেপি কর্মী জয়ন্ত বর্মন। প্রথমে তাঁকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে স্থানান্তর করা হয় কোচবিহারের এম জি এন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার সকালে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।
একুশের বিধানসভা ভোটের পরও রাজ্য়ে ভোট-পরবর্তী হিংসা নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর চরমে উঠেছিল। কার্যত তারই পুনরাবৃত্তি হল তেইশের পঞ্চায়েত ভোটের পর।
পঞ্চায়েত ভোটের ফল ঘোষণার পর, অশান্তির আঁচ টের পাওয়া যাচ্ছে জেলায় জেলায়। উত্তর ২৪ পরগনা, মালদা, মুর্শিদাবাদের মতো একাধিক জেলায় ধরা পড়ছে অশান্তির ছবি। ভোটের আগে থেকে শুরু হওয়া এই সন্ত্রাস থামবে কবে? প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। বিশেষ করে সেই মানুষগুলো, যাদের পরিবারের সদস্য়কে এই সন্ত্রাস কেড়ে নিয়েছে।
অন্যদিকে ভোটপর্ব মিটতেই এবার জোর দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে রাজ্য পুলিশ এবং প্রশাসনের সমন্বয়ে। বৃহস্পতিবার, মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর সঙ্গে বৈঠক করেন বিএসএফ-এর আইজি সতীশ চন্দ্র বুধাকোটি। সিদ্ধান্ত হয়,
প্রতি জেলায় তিন জন করে নোডাল অফিসার নিয়োগ করতে হবে। জেলা শাসক, পুলিশ সুপার এবং BSF-এর একজন করে নোডাল অফিসার থাকবেন। তাঁদের কাজ হবে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় বজায় রেখে কাজ করা হবে ।