শিবাশিস মৌলিক, কলকাতা: ভাঙড়ে শুভেন্দু অধিকারীর সভায় অনুমতি দিয়েও নাকি তা প্রত্যাহার করে নিয়েছে পুলিশ। বিরোধী দলনেতার সভার অনুমতি প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়ের সমর্থনে ভাঙড়ে সভা করার কথা ছিল শুভেন্দুর। এ নিয়ে সুর চড়িয়েছে বিজেপি। (Suvendu Adhikari) ভোটবাক্সে এর বদলা নিতে হবে বলে ডাক দিয়েছেন শুভেন্দু।


বুধবার ভাঙড়ে প্রচার সভা ছিল শুভেন্দুর। বাসন্তী হাইওয়ের ধারে ভাঙড়ের কলোনি মাঠে অনির্বাণের সমর্থনে শুভেন্দুর জনসভার আয়োজন হয়েছিল। মঞ্চ তৈরি হয়ে গিয়েছিল, চেয়ারও এসে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে অনুমতি প্রত্যাহার করা হয় বলে দাবি বিজেপি-র। ফলে বুধবার ভাঙড়ে গেলেও, ওই সভামঞ্চ থেকে ভাষণ দেওয়া হবে না বিরোধী দলনেতার। (Lok Sabha Elections 2024)


লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে এযাবৎ শুভেন্দুর প্রচার জমজমাটই থেকেছে। ভাঙড়েও তাই জোর প্রস্তুতি চলছিল বিজেপি-র তরফে। কিন্তু পুলিশ অনুমতি প্রত্যাহার করে নেওয়ায়, সব থমকে গিয়েছে বলে দাবি বিজেপি-র। এ নিয়ে এবিপি আনন্দে মুখ খোলেন খোদ অনির্বাণ। তিনি বলেন, "এ রাজ্যে পুলিশ কী ভাবে কাজ করে, তা আমাদের জানা। যাঁরা কাজ করতে চান, তাঁদেরও কাজ করতে দেওয়া হয় না।"


আরও পড়ুন: Saokat Molla: কয়লাকাণ্ডে আজই সওকতকে তলব করল CBI, TMC বিধায়ক বললেন...


অনির্বাণ আরও বলেন, "প্রশাসনের একটা বড় অংশ কম্প্রোমাইজড। রাজনৈতিক নির্দেশ পালন করে তারা। ভাঙড়ে আমাদের এই সভা যাতে না হতে পারে, তা বানচাল করার ছক ছিল গোড়া থেকেই। সক্রিয় ভাবেই তা করা হচ্ছে। এমনিতে নির্বাচন কমিশন খুব নাকি তৎপর! অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়, সুকান্ত মজুমদারকে নোটিস দিয়েছে! শুনলাম প্রধানমন্ত্রীকেও শোকজ করেছে, কোনও দলের অভিযোগের ভিত্তিতে। এত সক্রিয় নির্বাচন কমিশনের এগুলো দেখা উচিত।"


অনুমতি বাতিল নিয়ে শুভেন্দু এদিন বলেন, "এখানে বিজেপি-র কোর সদস্য যাঁরা, আমাদের কারা ঢেলে ভোট দেয় আপনারা জানেন। তাঁরা কারা বলতে চাই না, সমঝদারোঁ কে লিয়ে ইশারা হি কাফি। গত বিধানসভাতেও ৪০-৪৫ হাজার ভোট পেয়েছি। আমাদের জেলা নেতৃত্ব এখানে বুথ সশক্তিকরণের মিটিং করে গিয়েছেন। নির্বাচনের শেষ প্রচারে এখানে মাঝারি মাপের সভা করতে চেয়েছিলাম ৪-৫ হাজার মানুষকে নিয়ে। তার জন্য নিয়ম-নীতি মেনে আবেদন করেছিলাম সুবিধা পোর্টালে। গতকাল সকাল থেকে প্যান্ডেলের কাজ হচ্ছিল। কেউ বাধা দেয়নি। পুলিশও আসেনি। আজ বেলা ১১টার সময় আবেদনকারীর কাছে সভা বাতিল বলে জানানো হয়।" 


শুভেন্দুর কথায়, "ঘণ্টাখানেক হয়ত সভা হতো। কিন্তু পুলিশ আপত্তি জানিয়ে বলেছে, ১০০ মিটার দূরেই নাকি সভা হচ্ছে তৃণমূলের। আমি ওদিক দিয়েই এলাম। কোনও নাম-গন্ধ নেই। আমরা গত বেশ কিছু দিন ধরেই বলছি, মাঠে তৃণমূল নেই। পুলিশ বনাম বিজেপি লড়াই হচ্ছে। পুলিশ যেন কয়লা ভাইপোর চুরির চাকা থেকে বেতন পায়, আমাদের করের টাকা নয়। পুলিশের উপরমহলের যেন বাপ-মা মরার দায় পড়েছে তৃণমূলকে জেতানোর।" শুভেন্দু জানান, আইন-শৃঙ্খলার প্রশ্নে তাদের কিছু নেই বলে জানিয়েছে কমিশন। তিনি যাতে ভাঙড়ে আসতে না পারেন, তার জন্যই অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে দাবি শুভেন্দুর। পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র বিপন্ন, বহুদলীয় গণতন্ত্রের স্বাধীনতা বিপন্ন এবং নির্বাচনে যে সকলের সমান সুযোগ থাকা উচিত, সেই সুযোগ পশ্চিমবঙ্গে নেই বলে দাবি করেছেন শুভেন্দু। তবে সিপিএম বা কংগ্রেস নয়, বেছে বেছে বিজেপি-কেই আটকানো হয় বলে দাবি বিরোধী দলনেতার। শেষ দফা ভোটবাক্সে এর বদলা নিতে সকলকে আবেদন জানান তিনি।