নয়াদিল্লি: উমর খালিদের জামিনের আর্জি ফের খারিজ হয়ে গিয়েছে একদিন আগেই। কিন্তু বুধবার দিল্লি হাইকোর্টে জামিন পেলেন সমাজকর্মী শার্জিল ইমাম। গত সাড়ে চার বছর ধরে জেলবন্দি ছিলেন শার্জিল। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (CAA)-এর বিরুদ্ধে জ্বালাময়ী ভাষণ দিয়ে শার্জিল ২০২o সালে দিল্লি দাঙ্গায় উস্কানি জুগিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ছিল। দেশদ্রোহ এবং বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধী UAPA আইনে শার্জিলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত তদন্ত শেষ করতে পারেনি দিল্লি পুলিশ, তার দরুণই বুধবার শার্জিলের জামিন মঞ্জুর হল। তবে এখনই জেল থেকে নাও বেরনো হতে পারে শার্জিলের। (Sharjeel Imam)


এর আগে, ট্রায়াল কোর্ট শার্জিলের জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়। ট্রায়াল কোর্টের সেই আবেদনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দিল্লি হাইকোর্টে গিয়েছিলেন শার্জিল। আদালতে শার্জিলের হয়ে সওয়াল করেন তাঁর আইনদীবী তালিব মুস্তাফা এবং আহমেদ ইব্রাহিম। দিল্লি পুলিশের হয়ে আদালতে সওয়াল করেন SPP রজত নায়ার। শার্জিলের আইনজীবীরা জানান, যে ধারায় মামলা করা হয়েছে শার্জিলের বিরুদ্ধে, তাতে দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত কারাবাসের নিদান রয়েছে। কিন্তু শার্জিল ইতিমধ্যেই চার বছর সাত মাস জেলে কাটিয়ে ফেলেছেন। (Delhi Riots 2020)


শার্জিলের জামিনের বিরোধিতা করেন নায়ার। দুই পক্ষের সওয়াল শোনার পর শেষ পর্যন্ত শার্জিলের জামিনের আর্জি মঞ্জুর করে দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি সুরেশ কুমার কাইত এবং মনোজ জৈনের ডেভিশন বেঞ্চ। কিন্তু দিল্লি দাঙ্গার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগেও মামলা রয়েছে শার্দিলের বিরুদ্ধে। তাই এখনই হয়ত জেল থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন না শার্জিল।


আরও পড়ুন: Karan Bhushan Singh: কুস্তিগীরদের যৌন নিগ্রহে অভিযুক্ত ব্রিজভূষণ, BJP প্রার্থী ছেলের কনভয় দু'জনকে পিষে দিল


IIT Bombay থেকে B.Tech এবং M.Tech-এর পর দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আধুনিক ইতিহাস নিয়ে স্নাতকোত্তর স্তরের ডিগ্রি অর্জন করেন শার্জিল।  ২০১৫ সালে সেখানেই ফের Ph.D শুরু করেন। নিয়মিত লেখালেখিও করতেন তিনি। শাহিনবাগের CAA বিরোধী আন্দোলনেও শামিল হন। সেই সময় ২০১৯ সালের ১৩ ডিসেম্বর এবং ২০২০ সালের ১৬ জানুয়ারি তিনি দু'টি ভাষণ দেন।  ২০২০ সালের দিল্লি দাঙ্গার নেপথ্যে শার্জিলের ওই ভাষণকেও অনুঘটক হিসেবে চিহ্নিত করে দিল্লি পুলিশ। 


২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি গ্রেফতার হন শার্জিল। তাঁর বিরুদ্ধে ধারা ১২৪-এ (দেশদ্রোহ), ১৫৩-এ (ধর্ম, জাত, সম্প্রদায়ের, জন্মস্থান এবং বাসস্থানের নিরিখে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে শত্রুতায় ইন্ধন), ১৫৩-বি (জাতীয় অখণ্ডতার ক্ষতিসাধনের চেষ্টা), ৫০৫ (২) (বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণার সঞ্চার করতে উস্কানিমূলক ভাষণ) এবং UAPA আইনের ধারা ১২ (বেআইনি কার্যকলাপের শাস্তি)-র আওতায় মামলা দায়ের হয়।