রাজীব চৌধুরী এবং সন্দীপ সরকার, মুর্শিদাবাদ ও কলকাতা: ভোটে বেলাগাম সন্ত্রাস, মৃত্যু সিপিএম কর্মীর। হরিহরপাড়ার রায়পুর অঞ্চলের নিয়ামতপুরে ভোটের দিন আক্রান্ত হন সিপিএম কর্মী রিন্টু শেখ। আক্রান্ত সিপিএম কর্মীকে মুর্শিদাবাদ থেকে নিয়ে আসা হয় এনআরএসে। বাঁশ, লাঠি দিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এনআরএস হাসপাতালে মৃত্যু রিন্টু শেখের। এই নিয়ে ৩৯ দিনে ৫৫ জনের মৃত্যু হল।


সিপিএমের দাবি, ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে প্রার্থীর সঙ্গে দাঁড়িয়েছিলেন রিন্টু।  সেখানেই প্রার্থী আক্রান্ত হন। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে রিন্টু শেখ এবং আরও একাধিক সিপিএম কর্মী আক্রান্ত হন। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক এবং তাঁর ছেলের দিকে অভিযোগ। যদিও তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। হামলার সময় বুথে কোনও পুলিশকর্মী ছিল না বলে অভিযোগ সিপিএমের। রিন্টুর দাদার দাবি, ৬০-৭০ জন হামলা করেন। ৭-৮ জন গুরুতর জখম হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন রিন্টু শেখ। পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ। সিপিএম জেলা কার্যালয়ে বৈঠক করেছে। ওই ঘটনায় আইনি পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে সিপিএম। আইনি পথে শাস্তি দেওয়ার লড়াই করবে দল, সূত্রের খবর, এমনটাই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সিপিএম। হরিহরপাড়ার বিধায়ক নিয়ামত শেখ, তাঁর ছেলে (জেলা পরিষদের প্রার্থী ছিলেন, জয়ী হয়েছেন), এছাড়া তাঁদের অনুগামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা সত্ত্বেও পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ। বিধায়কের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি এখনও পর্যন্ত, অভিযোগ সিপিএমের। নিহতদের পরিবার সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন। দোষীদের শাস্তি চেয়েছেন তাঁরা। স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, দোষীরা শাস্তি না পেলে বড়সড় আন্দোলনে নামা হবে।


জখম রিন্টুকে বহরমপুর গ্রামীন হাসপাতাল, সেখান থেকে মুর্শিদাবাদ  জেলা হাসপাতাল, তারপর এনআরএসে আনা হয়। ৯ জুলাই এনআরএসে ভর্তি করা হয় তাঁকে। ১২ জুলাই অস্ত্রোপচার করা হয়। সাধারণ বেডে রেখেই চলছিল চিকিৎসা। ICU-এর প্রয়োজন থাকলেও হাসপাতালে তা পাওয়া যায়নি বলে দাবি পরিবারের। পরিবারের অভিযোগ, রিন্টুর ঘাড়ে হাঁসুয়ার কোপ পড়ে, মাথায় বাঁশ দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। কোমায় ছিলেন তিনি। অস্ত্রোপচারের পরেও জ্ঞান ফেরেনি। তারপর NRS হাসপাতালে এদিন মারা যান।


রিন্টু শেখের দেহের ময়নাতদন্ত হবে। তারপরে দেহ পরিবারের সদস্যের হাতে তুলে দেওয়া হবে।


আরও পড়ুন: মাথার উপর ছিল না ছাদ, অভাব নিত্যসঙ্গী, IAS অফিসার অনিল বসাকের অজানা কাহিনি