আগরতলা: বাংলার বাইরে শাখা বিস্তারে এ বারও সাফল্য এল না। ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে কার্যতই মুখ থুবড়ে পড়ল তৃণমূল (TMC in Tripura)। খোদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) প্রায় একবছর ধরে সেখানে পড়ে ছিলেন, নির্বাচনের আগে সভা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও (Mamata banerjee)। তার পরও সেখানে খাতা খুলতে পারল না তৃণমূল। এমনকি নোটার চেয়েও কম ভোট পেল তারা (NOTA)। 


নির্বাচনের আগে ত্রিপুরায় সভা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়


ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে ৬০টির মধ্যে ২৮টি আসনেই প্রার্থী দাঁড় করিয়েছিল তৃণমূল। বৃহস্পতিবার ভোটের ফলাফল প্রকাশিত হতে দেখা গেল, একটি আসনও দখল করতে পারেনি জোড়াফুল শিবির। তাদের সমর্থনে ভোট পড়েছে মাত্র ০.৮৮ শতাংশ। তার চেয়ে বেশি ভোট পড়েছে নোটায়। নির্বাচন কমিশনের হিসেব বলছে, ত্রিপুরায় নোটায়. ১.৩৬ শতাংশ ভোট পড়েছে।


হার-জিত নিয়ে তাঁরা ভাবছেন না বলে যদিও এর আগে জানিয়েছিলেন অভিষেক। যত কমই ভোট পড়ুক না কেন, মাত্র এক বছরের চেষ্টায় তা যথেষ্ট বলে জানিয়েছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার ফলাফল প্রকাশ হতে দেখা গেল, প্রত্যাশা অপূর্ণই থেকে গিয়েছে জোড়াফুল শিবিরের। কোনও পক্ষকেই পছন্দ না হলে, যে নোটার বোতাম টিপে মতামত জানান সাধারণ মানুষ, তার চেয়েও কম ভোট পেয়েছে তৃণমূল।


আরও পড়ুন: MLA Hekhani Jakhalu: শিক্ষা আমেরিকায়, মোটা বেতনের চাকরি ছেড়ে রাজনীতিতে, ৬০ বছরে প্রথম মহিলা বিধায়ক পেল নাগাল্যান্ড


নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠকে ত্রিপুরার ফলাফল নিয়ে মুখ খোলেন মমতা। জানান, মাত্র ছ'মাসের চেষ্টায় যা হয়েছে, তা নিয়ে কোনও আক্ষেপ নেই তাঁদের। আগামী দিনে তাঁদের কী পরিকল্পনা, তা যদিও খোলসা করেননি মমতা। তবে ত্রিপুরার এই ফলাফল নিয়ে দলের অন্দরে বিশ্লেষণ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। 


ত্রিপুরায় তৃণমূলের তরফে প্রস্তুতিতে যদিও কোনও খামতি ছিল না। মমতা, অভিষেক তো বটেই, সেখানে দলের হয়ে প্রচারে নাম ছিল তারকা নেতা-নেত্রীদের। ডেরেক ও'ব্রায়েন, মহুয়া মৈত্ররা প্রচারে গিয়েছিলেন ত্রিপুরা, মেঘালয়ে। ত্রিপুরার মতো মেঘালয়েও প্রত্যাশা মতো সাফল্য পায়নি তৃণমূল। ত্রিপুরায় তৃণমূলের নির্বাচন সংক্রান্ত যাবতীয় দায়-দায়িত্ব ন্যস্ত ছিল রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাঁধে, ২০২১-এর বঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের আগে যিনি বিজেপি-তে গিয়ে পরে ফের জোড়াফুলে ফিরে আসেন। ত্রিপুরায় এই ফলাফলের পর তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎও এখন প্রশ্নের মুখে বলে মনে করছএন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কারণ বিজেপি থেকে তৃণমূলে ফিরলেও, বাংলায় দলের কাছে এখনও একরকম ব্রাত্যই রয়ে গিয়েছেন তিনি।


হার-জিত নিয়ে তাঁরা ভাবছেন না বলে যদিও জানিয়েছিলেন অভিষেক


তবে, এই প্রথম নয়, আগেও ত্রিপুরায় নিরাশ হতে হয়েছে তৃণমূলকে। ২০১৬ সালে কংগ্রেসের ছয় বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দেন। কিন্তু ২০১৭ সালে দল বদলে আবার বিজেপি-তে চলে যান তাঁরা। ২০১৮-র নির্বাচনে সেখানে ২৪ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মাত্র ০.৩০ শতাংশ ভোট পেয়েছিল তৃণমূল।