কোহিমা: পূর্ণাঙ্গ রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতি মিলেছে ৬০ বছর আগে। এতদিনে প্রথম মহিলা বিধায়ক পেল নাগাল্যান্ড। বৃহস্পতিবার সেখানে বিজেপি-র শরিক দল, ন্যাশনালিস্ট ডেমোক্র্যাটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি থেকে বিজয়ী হলেন হেখানি জাখালু (MLA Hekhani Jakhalu)।
এতদিনে প্রথম মহিলা বিধায়ক পেল নাগাল্যান্ড
৪৮ বছর বয়সি হেখানি ডিমাপুর-তৃতীয় কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হন। ৬০ সদস্যের বিধানসভায় এ বার প্রবেশ করতে চলেছেন তিনি। ইতিমধ্যেই বিজয়ী ঘোষিত হয়েছেন তিনি। লোক জনশক্তি পার্টির আঝিতো ঝিমোমিকে ১ হাজার ৫৩৬ ভোটে পরাজিত করেছেন হেখানি (Nagaland Results 2023)।
ডিমাপুরে বেড়ে ওঠা হেখানির। বাবা সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। ফলে মায়ের কাছেই বেড়ে ওঠা হেখানির। পরে বেঙ্গালুরু যান। সেখান থেকে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন নিয়ে পড়াশোনা। উচ্চশিক্ষার জন্য় পাড়ি দেন আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকো। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ের এই যাত্রাপথ সহজ ছিল না। আইনজীবী হওয়া স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই স্বপ্নপূরণে বিপুল টাকার ঋণ নিতে হয় তাঁর পরিবারকে।
কিন্তু স্বপ্ন পূরণ করেই দেখিয়েছিলেন হেখানি। ওয়াশিংটনে ফ্যাকাল্টি সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জে কাজ করেছেন শিক্ষানবীশ হিসেবেও। দেশে ফিরে দিল্লির একটি ল ফার্মে পার্টনার হিসেবে যোগ দেন। সেখানে সিভিল এবং কর্পোরেট ল নিয়ে ছিল তাঁর কাজ।
আরও পড়ুন: Assembly Election Result 2023 Live: মেঘালয়ে রাজবালা আসনে জয়ী তৃণমূল
আমেরিকায় পড়াশোনা হেখানির। পেশায় আইনজীবী তিনি। সামাজিক ক্ষেত্রে বিনিয়োগও রয়েছে। বিগত দুই দশক ধরে YouthNet নামের একটি অলাভজনক সংস্থাও চালান। রাজ্যের যুবসমাজকে শিক্ষিত এবং দক্ষ করে তোলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে ওই সংগঠনের। নাগাল্যান্ডের ছেলেমেয়েদের চাকরির সুযোগ করে দেওয়া থেকে যোগ্য করে তুলতে দেওয়া হয় প্রশিক্ষণও।
পশ্চিমি শিক্ষায় শিক্ষিত, সমাজের তথাকথিকত উচ্চস্তরের অংশ হয়েও কেন রাজনীতিতে এলেন, প্রচার চলাকালীন প্রশ্ন করা হয়েছিল হেখানিকে। তাঁর জবাব ছিল, “নাগাল্যান্ডের নাগরিক সমাজ এখনও পিতৃতান্ত্রিক। ধীরে ধীরে মানসিকতা পাল্টাচ্ছে। তার জন্য আমার কাঁধেও গুরুদায়িত্ব রয়েছে।”
নাগাল্যান্ড-সহ উত্তর পূর্বের প্রায় সব রাজ্য থেকেই একটা সময় পর ভবিষ্যতের সন্ধানে অন্যত্র পাড়ি দিতে হয় যুবসমাজকে। হেখানির ক্ষেত্রেও তার অন্যথা হয়নি। আমেরিকায় পড়াশোনা শেষ করে ডিগ্রি নিয়ে ফেরেন। দিল্লিতে মোটা বেতনের চাকরিও পান। চাইলে বিলাসেই কাটিয়ে দিতে পারতেন গোটা জীবন। কিন্তু নিজের রাজ্য, নিজের মাটির জন্য কিছু করতে চেয়েছিলেন হেখানি। উত্তর-পূর্ব থেকে দিল্লির পার্লার, রেস্তরাঁ, শপিং মলে কর্মরত ছেলেমেয়েদের দেখে আরও জেদ চেপে বসে মনে।
নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ের অদম্য লড়াই
সেই মতো প্রথম অলাভজনক সংস্থার হাত ধরে যাত্রা শুরু করেন। ২০০৬ সালে নাগাল্য়ান্ডের অধুনা মুখ্যমন্ত্রী নেইফিউ রিও-র সঙ্গে সাক্ষাতই জীবনের গতিপথ বদলে দেয় হেখানির। YouthNet সংগঠনের মাধ্যমে যেমন নাগাল্যান্ডের খোলনলচে বদলে দিতে উদ্যোগী হন তিনি, তেমনই রাজনীতিতেও জড়িয়ে পড়েন ক্রমশ। নেইফিউয়ের দলেরই প্রার্থী হন হেখানি। ২০১৮ সাল থেকে বিজেপি-র সঙ্গে জোটে রয়েছেন নেইফিউ।