কলকাতা: দুর্নীতি মামলায় নাম জড়িয়েছে দলের একাধিক নেতা-মন্ত্রীর। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কথাও উঠে আসছে। সেই আবহেই এবার তৃণমূল বলে পরিচয় দিতে গিয়ে দলের কেউ কেউ গিয়ে লজ্জা বোধ করছেন বলে মন্তব্য করলেন অশোকনগরের জোড়াফুল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী। তাঁর বক্তব্য, "তৃণমূল করি। মিটিংয়ে আসছি। কিন্তু পাড়ার লোকজনকে গিয়ে বলতে লজ্জা পাচ্ছি।" (Narayan Goswami)
একের পর এক দুর্নীতি মামলায় নাম জড়িয়েছে রাজ্যের শাসক দলের একাধিক নেতার এবং প্রাক্তন মন্ত্রীদেরও। জেলবন্দি রয়েছেন অনেকেই। রাস্তাঘাটে চোর-চোর স্লোগানও শুনতে হচ্ছে। সেই নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে যথেষ্ট অস্বস্তি তৈরি হয়েছে বলে খবর উঠে আসছিল। এবার তাতে কার্যত সিলমোহর দিলেন নারায়ণ। (Lok Sabha Elections 2024)
বারাসাত থেকে লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী কাকলি ঘোষ দস্তিদার। কাকলির হয়ে প্রচারে গিয়েই 'লজ্জা'র কথা জানালেন নারায়ণ। তাঁর বক্তব্য, "আমরা হচ্ছি তৃণমূল কর্মী, মানে ফেরিওয়ালা। আমি তৃণমূল করি। মিটিংয়ে আসছি। কিন্তু পাড়ার লোককে গিয়ে বলতে লজ্জা পাচ্ছি।"
তবে সেখানেই থামেননি নারায়ণ। তিনি আরও বলেন, "বাদাম বিক্রি করেন একজন। তিনি ট্রেন উঠে বাদাম চাই বাদাম বলবেন কি না? আর আমার মতো একজন, তাঁর লজ্জা হচ্ছে, রেলের কামরায় হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। ওঁর বাদাম কি বিক্রি হবে? আমরাও তৃণমূল। কিন্তু মানুষের কাছে গিয়ে তৃণমূলের কথা বলতে লজ্জা। তৃণমূলের ভোটার আর তৃণমূলের কর্মী, দু'টো আলাদা। এখন থেকে পড়াশোনা শুরু করুন, তাহলে চোখে জয় বাংলা হবে না। ভোতবিজ্ঞানের উত্তর বৌতবিজ্ঞানই আসবে।"
হঠাৎ কেন লজ্জার কথা বলতে হল নারায়ণকে? সেই প্রশ্নের জবাবও দিয়েছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, "আমাদের কর্মীদের মধ্যে ছোট একটা অংশ রয়েছে, যাঁদের কোথাও না কোথাও একটু লজ্জা বোধ হচ্ছে। লোকের বাড়ি বাড়ি যাব। সেখানে অনেক সময় অনেক রকমের কথা এদিক ওদিক করে বলতে হয়।" কিন্তু দলের নেতা-কর্মীদের এই লজ্জা কাটিয়ে ওঠার পরামর্শ দিয়েছেন নারায়ণ। মানুষের কাছে যেতে কোনও লজ্জা থাকা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বারাসাতে তৃণমূলের প্রার্থী কাকলি। সেখানে এখনও প্রার্থী ঘোষণা করেনি বিজেপি। কংগ্রেস এবং সিপিএম-এর তরফেও ওই আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি এখনও পর্যন্ত। তাই লজ্জা কাটিয়ে নেতা-কর্মীদের মানুষের দুয়ারে পাঠাতেই কি ঘাম ছুটে যাচ্ছে তৃণমূলের? নারায়ণের মন্তব্যেই প্রশ্নের উদ্রেক করছে।