সন্দীপ সমাদ্দার, পুরুলিয়া: ২৭ মার্চ পুরুলিয়া বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ। প্রচারের শেষপর্বে এসে বিজেপি প্রার্থী সুদীপ মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তৃণমূলের স্লোগান ‘কাল্টু এখন পাল্টু’। প্রচারে বিজেপি প্রার্থীর দলবদলের ইতিহাসকেই কটাক্ষ শাসক শিবিরের। ভোটের ফল বের হলে উল্টে যাবে তৃণমূল সরকার, পাল্টা জোড়াফুলের দলকে নিশানা গেরুয়া শিবিরের প্রার্থীর।


কখনও গদ্দার...।কখনও বিশ্বাসঘাতক...।কখনও দলবদলু...।বাংলার চলতি ভোটের হাওয়ায় দলবদলকারীকে নিশানা করতে নতুন স্লোগান....‘কাল্টু এখন পাল্টু’। পুরুলিয়ার লালমাটির হাওয়ায় কান পাতলে শোনা যাচ্ছে এই স্লোগান। যাঁকে নিশানা করে এই স্লোগান, তিনি পুরুলিয়া বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সুদীপ মুখোপাধ্যায়।


কিন্তু কেন এমন স্লোগান? সুদীপ মুখোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক ইতিহাস বলছে, একসময় পুরুলিয়ার তৃণমূল যুব সভাপতি হিসাবে জোড়াফুল শিবিরের সক্রিয় কর্মী ছিলেন তিনি। ২০১৬-র বিধানসভা ভোটের ঠিক আগেই তিনি দলবদল করে যোগ দেন কংগ্রেসে। সেবার পুরুলিয়া বিধানসভা কেন্দ্রেই কংগ্রেসের টিকিটে লড়াই করে জিতে বিধায়কও হন সুদীপ।


কথায় বলে, রাজনীতিতে চিরস্থায়ী বন্ধু বা শত্রু বলে কিছু হয় না। সেই চলতি কথাকেই সত্যি করে গত ১৯ ডিসেম্বর শুভেন্দু অধিকারীর অনুগামী হিসাবে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে নাম লেখান সুদীপ মুখোপাধ্যায়। বর্তমান বিজেপি প্রার্থীর এই দলবদলের ইতিহাসকেই হাতিয়ার করে ‘কাল্টু এখন পাল্টু’ স্লোগান তৈরি করা হয়েছে বলে দাবি তৃণমূলের।


পুরুলিয়ার তৃণমূলের জেলা মুখপাত্র নবেন্দু মাহালি বলেছেন, ‘সুদীপ মুখোপ্যাধ্যায় ডাক নাম কাল্টু বলে পরিচিত। তিনি প্রথমে তৃণমূল কংগ্রেসে ছিলেন এবং যুব সভাপতি ছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি কংগ্রেসে যোগদান করে কংগ্রেস থেকে বিধায়ক হন। এখন তিনি বিজেপিতে যোগদান করেন এবং তিনি বিজেপি প্রার্থী। তাঁর বাবা একসময় সিপিএম করতেন। তিনি সিপিএম ঘরানার ছেলে। সিপিএম থেকে তৃণমূল তারপর কংগ্রেস এখন তিনি বিজেপির। তাই আমাদের ছেলেরা এখন বলছে, কাল্টু এখন পাল্টু, দলবদলু। এই স্লোগান এখন বাজারে চালু হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো একবার দলবদল করেছেন, আর উনি তো বারবার দল পাল্টেছেন।’


এলাকায় কাল্টু নামেই বেশি পরিচিত পুরুলিয়ার কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সুদীপ মুখোপাধ্যায়। ভোটের আগে সেই ডাকনাম বদলে পাল্টু করে দেওয়ায় তৃণমূলকে নিশানা করেছেন তিনি। পুরুলিয়ার বিজেপি প্রার্থী সুদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘তৃণমূল এখন নিজেই উল্টে গেছে। ২ তারিখের পর তৃণমূল উল্টো হয়ে যাবে। কর্পূরের মতো এখনই দল প্রায় উড়ে গেছে। আগে নিজের ঘর সামলাক, পরে অন্যকে দেখবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই তো কংগ্রেসের পাল্টু। কংগ্রেসের সব খেয়ে বিজেপির সমর্থনে তৃণমূল করলেন। আবার বিজেপিকে লাথি মেরে কংগ্রেসের সঙ্গে গেলেন। রাজনীতিতে একটা কথা আছে মতের মিল না হলে, আদর্শগত মিল যেদিকে হবে মানুষ সেই দিকেই যায়। আর দল পরিবর্তন পার্ট অফ দ্য পলিটিক্স।’


আগামী শনিবার বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফাতেই পুরুলিয়া বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ। তৃণমূলের স্লোগানের প্রতিফলন কি পড়বে ভোটবাক্সে? জবাব মিলবে ২ মে।