বাঁকুড়া: বাঁকুড়ার সভায় তৃণমূল কংগ্রেস ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করলেন নরেন্দ্র মোদি। তিনি বিভিন্ন ইস্যু তুলে ধরে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেন। ফের ডবল ইঞ্জিন সরকার এবং সোনার বাংলা গড়ার কথাও শোনা যায় মোদির মুখে।


মোদি এদিন বলেন, ‘লালমাটির দেশ বাঁকুড়া। লালমাটির রাঙাধূলায় আমার মন ভুলায় রে। লোকসভা ভোটের সময় বাঁকুড়ায় দিদি কী করেছিলেন মনে আছে। এখানকার মানুষদের ভয় দেখাতে সব করেছিলেন দিদি। দিদির হুমকি উপেক্ষা করেই বিজেপিকে ভোট দিয়েছিল বাঁকুড়ার মানুষ। বাংলার মানুষ ঠিক করে নিয়েছে, ২ মে দিদি যাচ্ছেন। আসল পরিবর্তন আসছে। আসল পরিবর্তন বাংলার গৌরব ফিরিয়ে আনার জন্য। আসল পরিবর্তন গরিব মানুষের দুর্দশা দূর করার জন্য। আসল পরিবর্তন গরিবের কাছে সরকারের টাকা পৌঁছনোর জন্য। আসল পরিবর্তন তোলাবাজ, দুর্নীতিগ্রস্তদের জেলে ভরার জন্য। আসল পরিবর্তন বিজেপিকে ক্ষমতায় আনার জন্য।’




এই সেই বিতর্কিত দেওয়াল চিত্র।- নিজস্ব ছবি


মমতাকে কটাক্ষ করে মোদি বলেন, ‘ও দিদি, দুর্নীতির খেলা আর চলবে না। দিদি সিন্ডিকেট, কাটমানির খেলা শেষ হবে। বিজেপি ক্ষমতায় এলে মায়ের পুজো হবে, মানুষের সম্মান হবে। যাঁরা রামনাম করেন, তাঁদের উপর দিদি কী না করেন। দিদি এতদিন তোষণের রাজনীতি করে এসেছেন। তৃণমূল কর্মীরা ছবি আঁকছেন, আমার মাথায় লাথি মারছেন দিদি। এটাই কি বাংলার সংস্কৃতি? দিদি চাইলে আপনার পা আমার মাথায় রাখতেই পারেন। কিন্তু বাংলার উন্নয়নকে লাথি মারতে আমি দেব না। গরিব মানুষের পেটে লাথি মারতে দেব না।’


স্লোগান না দিলে মঞ্চে উঠতে দেব না, কেন বললেন মমতা? 


উন্নয়ন নিয়ে মমতাকে আক্রমণ করে মোদি বলেন, ‘বাংলার সরকারকে জলপ্রকল্পের জন্য কোটি কোটি টাকা দিয়েছি। কিন্তু মানুষ প্রশ্ন করছেন, জল কোথায় দিদি? কেন কৃষকরা ক্ষেতে জল পান না? কোথায় শিল্প, কোথায় কর্মসংস্থান দিদি? সেই জন্যই আপনি বলছেন খেলা হবে! ১০ বছর ধরে বাংলার মানুষের সঙ্গে খেলেও আপনার মন ভরেনি! এবার বাংলার মানুষ ঠিক করে নিয়েছেন, আপনার খেলা শেষ হবে, উন্নয়ন শুরু হবে। ১০ বছর ধরে মানুষ আপনার খেলা দেখেছে। গরিব মানুষের কাছে সরকারি টাকা পৌঁছয়নি। কিন্তু তৃণমূলের নেতারা মালামাল হয়ে গেছেন। দিদি এবার যাচ্ছেন। আমি প্রশ্ন করলেই দিদির রাগ হয়। আমার চেহারাও দিদি পছন্দ করেন না। গণতন্ত্রে চেহারা নয়, কাজ জরুরি। নতুন প্রজন্মর হাত ধরে সোনার বাংলা তৈরি করব, ডাবল ইঞ্জিন সরকার বানাব।’


এরপর বিরোধীদের একযোগে আক্রমণ করে মোদি বলেন, ‘বাম-কংগ্রেস-তৃণমূল ৩-৪ প্রজন্ম শেষ করে দিয়েছে। কিন্তু আজকের যুব সম্প্রদায়ের ভবিষ্যৎ আমি শেষ হতে দেব না। আপনাদের জন্য পরবর্তী ২৫ বছর খুব গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধীনতার শতবর্ষে সোনার বাংলা তৈরি হবে। ডাবল ইঞ্জিন সরকার নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়ন করবে। দ্রুতগতির ইন্টারনেট কানেকশন দেবে। জলজীবন মিশন দ্রুত চালু করা হবে। আয়ুষ্মান ভারত যোজনা বাংলায় চালু হবে। গ্রামে গ্রামে আধুনিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি হবে। বাঁকুড়ায় প্রকৃতি ও হেরিটেজ ট্যুরিজম গড়ে তোলা হবে। ডাবল ইঞ্জিন সরকার টেরাকোটাকে বিশ্ববাজারে নিয়ে যাবে। ডাবল ইঞ্জিন সরকার তৈরিতে সব বাধা দূর করতে হবে। বিজেপি স্কিমের উপর চলে, তৃণমূল স্ক্যামের উপর চলে। তৃণমূলের মন্ত্র হল, যেখানে স্কিম, সেখানেই স্ক্যাম। আয়ুষ্মান ভারত, কিষাণ সম্মান যোজনায় স্ক্যাম করতে পারবে না বলে চালু করতে দেয়নি। সারা দেশে কৃষকরা কিষাণ সম্মান যোজনায় টাকা পেয়েছেন। ডবল ইঞ্জিন সরকার ক্ষমতায় এলেই বাংলার কৃষকরা টাকা পাবেন। দিদি এখন থেকেই ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করে দিয়েছেন। হারের ভয়ে এখন থেকেই ইভিএম নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। গত ১০ বছর এই ইভিএমই আপনাকে ক্ষমতায় রেখেছিল।’