মুর্শিদাবাদ:  মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে অডিটোরিয়ামে প্রচারে ভাষণ দিতে গিয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ফের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিশানা করেছেন।  এদিন খড়দার তৃণমূল প্রার্থী কাজল সিনহা করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন।  দলীয় প্রার্থীর মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন তিনি।


মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘ একজন লড়াকু সৈনিককে হারালাম। কাজল সিন্হার পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা। খড়দায় কাজল সিন্হাই জিতবে।’


তৃণমূল নেত্রী বলেছেন,  ‘করোনাকে ভয় পাবেন না, সতর্ক থাকুন।  শুধু মাস্ক পরলেই হবে না, ঠিক করে পরতে হবে। অনেকে মাস্ক পরেন কিন্তু নাক খোলা, তাহলে কী লাভ?’


দেশে চলতি অক্সিজেন ও ওষুধের সংকট নিয়ে কেন্দ্র তথা প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে মমতা বলেছেন,  ‘অক্সিজেন নেই, ইঞ্জেকশন নেই, এখনও মন কি বাত করে চলেছেন। এখন মন কি বাত বন্ধ করুন, কোভিড নিয়ে কথা বলুন। কেন্দ্র যে ওষুধ পাঠাচ্ছে, তা খুবই কম।’


রাজ্যে আট দফায় ভোট নিয়ে ফের নির্বাচন কমিশনকে নিশানা করেছেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি অভিযোগ করেছেন, বিজেপির কথায় চলছে কমিশন।


মমতার অভিযোগ, ‘ভোটে টাকা ছড়াচ্ছে বিজেপি, তাও কমিশন কিছু দেখছে না।  সামশেরগঞ্জেও কংগ্রেস প্রার্থীর মৃত্যু হয়েছে। ১৩ তারিখ ভোট ফেলেছিল, আমরা প্রতিবাদ করায় ১৬ তারিখ করেছে’।


মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘পরিকল্পনা করে ৮ দফায় ভোট করেছে। বারবার বলা হচ্ছে বাকি ভোট একদফায় করুন, তাও করছে না। আমাদের পুলিশের ব্রেনটা গিয়েছে। নির্বাচন কমিশন যা বলছে করছে। ভোটের পর কিন্তু আমরাই থাকব। যা নির্বাচন হচ্ছে, তাতে তৃণমূলের বিকল্প নেই, তৃণমূলই থাকবে।’


তৃণমূল নেত্রীর অভিযোগ, ‘মোদি তো ভাষণ দিতেই ব্যস্ত, ভাষণ দিয়েই চলে গেল। এতদিন ভ্যাকসিন দিলে তো এতটা খারাপ পরিস্থিতি হত না। ৮০টা দেশকে ভ্যাকসিন দিল বিনা পয়সায়, আর এখানে কিনতে হচ্ছে।’


মমতা বলেছেন, ‘আমরা এনপিআর-এনআরসি চাই না, আপনারা ভোটটা দিন। গঙ্গায় ভাঙন রোধে যে টাকাটা দেওয়ার কথা ছিল, সেটা দেয়নি।’


তাঁর অভিযোগ, ‘বিজেপি শুধু হিংসা ছড়ায়।’ তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘বাংলাকে যদি ভাল বাসো, তাহলে ওষুধ দিচ্ছো না কেন?সোনার বাংলা করবে বলছো, তাহলে এত কম ভ্যাকসিন কেন?’


মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘আমরা আরও এক কোটি ভ্যাকসিন চেয়েছি।সবাইকেই বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেব আমরা।’


তিনি বলেছেন, ‘ভোট মিটে গেলে আমরা অবশ্যই মানুষের কাছে আসব। মালদা-মুর্শিদাবাদ বড় ফ্যাক্টর। আমাদের সরকার যদি না আসে, তাহলে কাউকে বাড়িতে থাকতে দেবে না। বিজেপি এতটাই অধম।’


ভোটের সময় করোনাজনিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় দলীয় প্রার্থীদের পরামর্শও দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। বলেছেন , ‘প্রত্যেক প্রার্থী একটা মনিটারিং টিম তৈরি করুন। ৮-১০ জনকে নিয়ে একটা মনিটারিং টিম তৈরি করুন। একজনের কোভিড হলে বাকিরা দেখবেন।’