কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গ সহ তামিলনাড়ু, অসম, পুদুচেরি ও কেরলের বিধানসভা নির্বাচনের সূচী ঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন। এরসঙ্গে কার্যকর হল আদর্শ নির্বাচনী আচরণ বিধি। প্রত্যেক রাজনৈতিক দলকেই এই আচরণবিধি মেনে চলতে হয়। এখন দেখে নেওয়া যাক, কী এই আদর্শ আচরণবিধি এবং এতে কী রয়েছে। 
ভোট যাতে অবাধ ও স্বচ্ছ হয়, তা নিশ্চিত করতে একগুচ্ছ নিয়ম চালু করেছে নির্বাচন কমিশন। ওই বিধিতে উল্লিখিত নীতিগুলি মেনে চলার ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলির সম্মতির ভিত্তিতে এই নিয়ম গড়ে উঠছে।  এই বিধিকে মর্যাদাদান ও অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলা রাজনৈতিক দলগুলির ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক। 
কোথায় ও কখন এই আচরণবিধি প্রযোজ্য?
নির্বাচনের দিন ঘোষণার দিন থেকে তা প্রযোজ্য হয়। লোকসভা, রাজ্য বিধানসভা বা জেলা স্তরের নির্বাচন-যে কোনও ক্ষেত্রেই তা প্রযোজ্য। 
বিধানসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে আদর্শ আচরণবিধি সমগ্র রাজ্যজুড়েই বলবৎ হয়। লোকসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে তা সারা দেশজুড়ে কার্যকরী হয়। কোনও আসনের উপনির্বাচনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলাতে এই বিধি প্রযোজ্য হয়। 


কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির শাসকদল সহ সমস্ত রাজনৈতিক দল যাতে এই বিধি মেনে চলে তা নিশ্চিত করে নির্বাচন কমিশন। অবাধ, সচ্ছ্ব ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার  ব্যবস্থা করে কমিশন। 
নির্বাচনের উদ্দেশে ব্যহহৃত সরকারি মেশিনারির অপব্যবহার যাতে না হয়, তাও নিশ্চিত করে কমিশন।  ভোট সংক্রান্ত অপরাধ, অসদাচরণ, ভোটারদের উস্কানি, ঘুষ, হুমকি বা ভয় দেখানোর মতো দুর্নীতি যাতে না ঘটে তাও নিশ্চিত করার দায়িত্ব কমিশনের। 


আদর্শ আচরণবিধি চালুর পর সরকারের ওপর কী ধরনের নিয়ন্ত্রণ আরোপিত হয়?


১. ভোটের কাজের সঙ্গে মন্ত্রীরা তাঁদের সরকারি সফরকে অন্তর্ভূক্ত করতে পারবেন না। ভোটের সময় তাঁরা সরকারি মেশিনারিবা  কর্মীদের ব্যবহার করতে পারবেন না। 



২. কোনও দল বা প্রার্থীর স্বার্থে সরকারি যান, আকাশযান ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে না। 



৩. নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যুক্তি অফিসার বা আধিকারিকদের বদলি ও পোস্টিংয়ের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা। বদলি বা পোস্টিং প্রয়োজনীয় হলে, সে ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের আগাম অনুমতি নিতে হবে। 



৪. কেন্দ্র বা রাজ্যে কোনও মন্ত্রীই নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের কোনও অফিসারকে সরকারি আলোচনার জন্য কোথাও ডেকে পাঠাতে পারবেন না। 



৫. কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জনস্বার্থের জন্য প্রয়োজনে সরকারি কাজে দিল্লির বাইরে গেলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক বা বিভাগের মুখ্য সচিবকে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি দিতে হবে। এর প্রতিলিপি কমিশনকেও দিতে হবে।



৬. সরকার খরচে কোনও দলের কৃতিত্ব নিয়ে মুদ্রণ ও বৈদ্যুতিন মাধ্যমে বিজ্ঞাপন ও সরকারি গণমাধ্যমের ব্যবহার নিষিদ্ধ। 


 


৭. কেন্দ্র বা রাজ্যে সরকার কোনও প্রকল্প নিয়ে নির্দেশ ঘোষণা করে, কিন্তু বিধি চালু হওয়া পর্যন্ত কোনও কাজ শুরু না হলে, এক্ষেত্রে কোনও কাজ শুরু করা যাবে না। তবে কাজ চালু হয়ে গেলে তা চলতে থাকবে। 



৮. সাংসদ, বিধায়ক বা বিধান পরিষদ সদস্যদের স্থানীয় এলাকা উন্নয়ন তহবিলে নতুন করে তহবিল প্রদান করা যাবে না, যেখানে নির্বাচন প্রক্রিয়া চলছে। 



৯. আংশিক বা সম্পূর্ণভাবে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কোনও সরকারি প্রতিষ্ঠান কোনও ব্যক্তি, কোম্পানি, সংস্থা ইত্যাদির ঋণ মকুব করতে পারবে না।