কলকাতা : রাজ্য রাজনীতি এখনও উত্তাল গত শনিবারের শীতলকুচির ঘটনা নিয়ে।  ১০ এপ্রিল রাজ্যে চতুর্থ দফার ভোট চলাকালীন চলেছিল গুলি। কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারান ৪ জন। আহত হন আরও চার জন। তারপর থেকে রাজনৈতিক চাপানউতোর থেকে বিবৃতি-পাল্টা বিবৃতি চলছেই। কিন্তু শীতলকুচির ১২৬ নম্বর বুথে  ঠিক কী হয়েছিল সেদিন! প্রকাশ্যে এসেছে একটি ভাইরাল ভিডিও। যে ভিডিও-র সত্যতা অবশ্য যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ।


ভিডিওটিতে দেখা যাচ্ছে একদল মানুষ বাঁশ-লাঠি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই আকাশভেদী বুলেট চলার শব্দ। মুহূর্তের নিঃশব্দতার পর তীব্র আর্ত চিৎকার। মানুষের হাহাকার। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখা যাচ্ছে ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের দরজা লাথি মেরে ভেঙে ফেলার চেষ্টা চলছে। দরজায় সজোরে আঘাত করা হচ্ছে বাঁশ দিয়েও। এই ভিডিও-র অবশ্য সত্যতা যাচাই করা হয়নি এবিপি আনন্দর তরফে।


কিন্তু সেদিন শীতলকুচির ১২৬ নম্বর বুথে থার্ড পোলিং অফিসারের দায়িত্ব থাকা ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছে এবিপি আনন্দ। তিনি বলেছেন, 'বুথের ভিতরে ছিলাম, বাইরে দৃশ্য ওতটা ভালো করে লক্ষ্য করতে পারিনি। লাইনে ভালোমতোই লোক ছিল। শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট হচ্ছিল। হঠাৎ বুথের দরজা খোলা থাকায় আমরা দেখতে পেলাম বাইরে একটা গন্ডগোল হচ্ছে। সেটা বাড়তে দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। যার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই গুলির আওয়াজ শুনতে পাই। কিছুক্ষণ পর দরজা ভেঙে একদল ঢুকে ইভিএম ভাঙচুর করল, আমাদেরও মারধর করল। এত ভয়াবহভাবে মারধর শুরু হল মনে হচ্ছিল আর হয়তো বাড়ি ফিরে যেতে পারব না। এই অবস্থায় আরও কিছু লোক বুথে ঢোকে, তারা আমাদের রক্ষা করল। যার কিছুক্ষণ পর পুলিশ ও সেন্ট্রাল ফোর্স এসে বের করে নিয়ে যায়।' 


 


গোটা ঘটনাক্রম ঠিক কী তা নিয়ে ধোঁয়াশা অব্যাহত থাকলেও ঘটনার পর থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী ও অমিত শাহকে ঘটনার জন্য দায়ী করেছে তৃণমূল। অপরদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্ররোচনামূলক বক্তব্যের জেরেই ঘটনা ঘটেছে বলে পাল্টা দাবি বিজেপির।


শীতলকুচি নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর কবে থামবে সেই উত্তর হয়তো কারোর কাছেই নেই। তেমনই এখনও ধোঁয়াশা অব্যাহত কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলি চালানোর কারণ নিয়েও। আত্মরক্ষার্থে গুলি চালানোর ব্যাখ্যা নিয়েও জারি জল্পনা। তবে এসবের মাঝে ধ্রুব সত্য একটাই, গণতন্ত্রের উৎসবে সামিল হতে গিয়ে বেঘোরে প্রাণ গেল একাধিক বঙ্গবাসীর। রক্তাক্ত হল ভোট। আর সর্বপরি শীতলকুচির ঘটনায় রক্তাক্ত, ব্যথিত হলেন পশ্চিমবঙ্গের জনগণ।