রুমা পাল, সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, কলকাতা : ভাঙড়, ক্যানিং, কোচবিহারের পর বাসন্তীতে রাজ্যপাল। পঞ্চায়েতের আগে অশান্তিতে উত্তপ্ত ছিল কোচবিহার। সেখানে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সোমবার সেখান থেকে সকালে ফিরেই বাসন্তী যাচ্ছেন তিনি। নিহত যুব তৃণমূল নেতার বাড়িতে যাবেন রাজ্যপাল। 

ভোটের বঙ্গে অশান্তির অন্ত নেই! ঝরেই চলেছে রক্ত! রবিবার সকাল থেকে উত্তপ্ত ছিল বাসন্তীর কাঁঠালবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। তৃণমূল-নির্দল সংঘর্ষে আহত ৪ জন। শনিবার রাতেই, বাসন্তীতে খুন হন এক যুব তৃণমূল কর্মী। এ নিয়ে ভোট শুরুর আগেই বাংলায় মৃত্যু হল ১৩ জনের। 'রাজ্যপুলিশ নয়, রাজ্যপালে আস্থা' জানিয়েছিল নিহত যুব তৃণমূলকর্মীর পরিবার। সেইসঙ্গে সিবিআই তদন্ত দাবি করেন মৃতের তৃণমূল প্রার্থী মেয়ে।


শনিবার রাতে বাড়ি ফিরছিলেন বাসন্তীর ফুলমালঞ্চের বাসিন্দা, বছর বিয়াল্লিশের যুব তৃণমূল কর্মী জিয়ারুল মোল্লা। 
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি,  হঠাৎ তাঁর রাস্তা আটকে দাঁড়িয়ে পড়ে দুটি বাইকে আসা দুষ্কৃতীরা। জিয়ারুলকে লক্ষ্য করে পরপর গুলি চালাতে থাকে তারা। তৃণমূলকর্মীর মাথায় ও পেটের কাছে গুলি লাগে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে জিয়ারুলকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। এর পর থেকে উত্তপ্ত বাসন্তীর পরিস্থিতি । 


কারা, কেন খুন করল যুব তৃণমূলকর্মীকে?  


মৃত যুব তৃণমূলকর্মীর মেয়ে মানোয়ারা পিয়াদা বাসন্তীর কাঁঠালবেড়িয়া থেকে পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল প্রার্থী হয়েছেন। 
দাবি, তাঁর বাবা ছিলেন যুব তৃণমূল নেতা আমানুল্লা লস্করের অনুগামী। ভোটের টিকিট নিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে বিবাদের জেরেই খুন হয়েছেন জিয়ারুল। মেয়ের অভিযোগ, পুলিশকে বার বার জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপালের ওপর আস্থা প্রকাশ করার পাশাপাশি, সিবিআই তদন্ত দাবি করেছেনে তৃণমূল প্রার্থী। রবিবার রাতেই বাসন্তীতে নিহত যুব তৃণমূল কর্মীর পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন রাজ্যপাল।  সূত্রের খবর. কী সাহায্য দরকার ? জানতে চেয়েছেন রাজ্যপাল


রাজ্যপালের কাছে খবর পৌঁছতেই বাসন্তা যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস।  উত্তরবঙ্গ থেকে পদাতিক এক্সপ্রেসে শিয়ালদায় নেমে সিভি আনন্দ বোসের সোমবারই যাচ্ছেন বাসন্তী।  

পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাজনৈতিক সন্ত্রাসের অভিযোগ পেয়ে রবিবার কোচবিহারে ছুটে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তবে এর আগে আক্রান্ত বিরোধী দলের সদস্য সমর্থকদের সঙ্গে কথা বললেও, রবিবার আক্রান্ত শাসকদলের পাশে দাঁড়ান রাজ্যপাল। শনিবার গীতালদহে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি মাফুজার রহমানকে কোপানোর অভিযোগ ওঠে নির্দল প্রার্থীর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ পেয়েই, মাঝরাতে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায় রাজ্যপালকে।  রাত ১২টা ৪৮ মিনিট নাগাদ, সোজা রাজীব সিনহাকে ফোন করেন রাজ্যপালের ওএসডি। যদিও তখন ফোনে পাওয়া যায়নি রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে। আহতদের ঠিকমতো চিকিৎসা করার নির্দেশ দেন তিনি।