কলকাতা : 'কেন্দ্রীয় বাহিনী আসবে, দু'দিন পর চলে যাবে, তারপর কিন্তু আমরাই থাকব।' এবার হুঁশিয়ারির সুর বীরভূমের তৃণমূল নেতা কাজল শেখের গলায়। প্রান্তিকে দলীয় কর্মিসভায় হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, 'জানি কারা ষড়যন্ত্র করছে। কারা আমাদের ভিতরে থেকে দলকে হারানোর চেষ্টা করছে, সেটাও জানি। আমরা সবার উপর নজর রাখছি।'


গরু পাচার মামলায় জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডলকে বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সভাপতি পদে রেখে দল পরিচালনার জন্য ৯ সদস্যের কোর কমিটি গঠন করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। কমিটিতে অনুব্রত মণ্ডলের বিরোধী বলে পরিচিত শতাব্দী রায় ও কাজল শেখ জায়গা পেয়েছেন। এহেন বীরভূমে পঞ্চায়েতে ভোটে তৃণমূল সার্বিকভাবে কেমন ফল করে, তা সময় বলবে। কিন্তু, ভোটের আগে দলীয় দ্বন্দ্ব যে নেতৃত্বের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা দলীয় নেতার বক্তব্যেই পরিষ্কার।


প্রান্তিকে দলীয় কর্মিসভা থেকে কাজল শেখ বললেন, "এটাও জানি কারা ষড়যন্ত্র করছে। এটাও জানি আমাদের মধ্যে থেকে কারা চক্রান্ত করে হারানোর চেষ্টা করছে। তাদের সাবধান করে দিচ্ছি। আমরা প্রত্যেকের খবর রাখি। প্রত্যেকের চলার পথ, গতিবিধির দিকে আমরা লক্ষ্য রাখছি। মা মাটি মানুষের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন বলেছেন, সেইমতো আমরা উন্নয়ন বাড়িতে বাড়িতে আমরা পৌঁছে দেব। কেন্দ্রীয় বাহিনী আসছে, আসতে দিন। এর আগেও অনেকবার কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছে। অনেক ভোট হয়েছে। অনেক ভোট করিয়েছি। রাজনীতিটা আজ থেকে করছি না। আজ হাতেখড়ি নয়। ৩০ বছরের রাজনৈতিক জীবন আমার। কেন্দ্রীয় বাহিনী আসবে, ২দিন পর চলে যাবে। তার পরে কিন্তু আমরাই থাকব। কথাটা মাথায় রাখুন।"


তাঁর এই হুঁশিয়ারির পাল্টা আক্রমণ শানান বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা । তিনি বলেন, "আসলে তৃণমূলে এখন একটা গৃহযুদ্ধ লেগেছে। এই হুমকি যেগুলো হচ্ছে, সেগুলো দ্বিমুখী হুমকি। একটা, বিরোধী রাজনৈতিক দলকে। আর দ্বিতীয়টা, তৃণমূলের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীকে। সারা রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের বিক্ষুব্ধদের মধ্যে যা তাণ্ডব শুরু হয়েছে, কোচবিহারে তো গৃহযুদ্ধের আকার ধারণ করেছে। বিনাশ শুরু হয়েছে। আমি মনে করি, যদি গণতন্ত্রের ওপর বিন্দুমাত্র আস্থা-বিশ্বাস থাকতো, তাহলে এই জাতীয় প্রকাশ্য হুমকি দিতেন না। আসলে কিছুই করেননি। মানুষের জন্য পাঠানো কেন্দ্রীয় সরকারের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এখন মানুষের কাছে বলবে কী ? সন্ত্রাস ছাড়া মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়ার মতো তৃণমূলের কোনও হাতিয়ার নেই। সেই কারণেই, হুমকি-ভীতি প্রদর্শন জনগণকেও করার চেষ্টা হচ্ছে, সঙ্গে সঙ্গে তৃণমূলের যারা বিক্ষুব্ধ আছে তাদেরও হুমকি দেওয়ার কাজ করছে। তৃণমূলের বিনাশ শুরু হয়েছে। "