দুবরাজপুর : তাঁকে প্রাণে মারার চেষ্টা করেছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। একসময় এমনই অভিযোগ তুলে বীরভূম জেলার রাজনীতিতে শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন শিবঠাকুর মণ্ডল। যা নিয়ে দল কঠিন হয়। কেষ্টকে কেস দেওয়া সেই শিবঠাকুরের স্ত্রী-ই এবার জয়ী হলেন দুবরাজপুরে। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন শিবঠাকুর মণ্ডলের স্ত্রী। জয়ের পর স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত তাঁরা। 


অনুব্রত মণ্ডল। বীরভূম জেলার রাজনীতিতে শাসকদলের মুখ বলতে বছরের পর বছর তিনিই থেকেছেন। সেই অনুব্রত মণ্ডল এখন গরুপাচারকাণ্ডে তিহাড় জেলে বন্দি। এহেন বীরভূমে এবার কেষ্টর অনুপস্থিতিতেই পঞ্চায়েত ভোটে একচ্ছত্র ক্ষমতা ধরে রাখার লড়াইয়ে নামে তৃণমূল। অনুব্রত অনুপস্থিতিতে কি নিজেদের ক্ষমতা প্রমাণ করতে পারবে শাসকদল ? এই জাতীয় হাজারো প্রশ্নের আবহেই কার্যত পঞ্চায়েত ভোট পর্ব মিটতে চলল। কিন্তু, ভোট ঘিরে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের সেই অভিযোগ এই জেলাতে এবারও কমেনি। ভোটের আগে সন্ত্রাস, ভোটের দিন সন্ত্রাস, পুনর্নির্বাচনেও সন্ত্রাসে ছবি দেখা গেছে জেলায় ! সময়ের সাথে সাথে এহেন বীরভূমেই একের পর এক আসনে জয়লাভ করছে তৃণমূল। সেই তালিকায় রয়েছেন কেষ্টকে কেস দেওয়া শিবঠাকুর মণ্ডলের স্ত্রীও। 


অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে দুবরাজপুর থানায় অভিযোগকারী শিবঠাকুর মণ্ডলের স্ত্রী এবার তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রার্থী হন। বাবুইজোড় পঞ্চায়েতের প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন জমা দেন প্রাথমিক স্কুল শিক্ষিকা লিপিকা।


অভিযোগ ওঠে, এই শিবঠাকুর মণ্ডলের মামলাকে হাতিয়ার করেই দিল্লি যাত্রা আটকাতে চেয়েছিলেন অনুব্রত মণ্ডল। যেদিন অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ায় জন্য ইডির আবেদনে ছাড়পত্র দেয় দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত। সেদিন দুপুরেই, অনুব্রতর বিরুদ্ধে একবছর আগে, তাঁকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেন তৃণমূল কর্মী শিবঠাকুর মণ্ডল। সঙ্গে সঙ্গে মামলা রুজু করে পরের দিন সেই মামলায় অনুব্রত মণ্ডলকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। তবে তিহাড়যাত্রা এড়াতে পারেননি অনুব্রত।  


এদিকে নলহাটিতে জয়ী হয়েছেন এনআইএ-র হাতে গ্রেফতার তৃণমূল প্রার্থী। বিস্ফোরক রাখার অভিযোগে এনআইএ-র হাতে গ্রেফতার হন বীরভূমের নলহাটির তৃণমূল প্রার্থী মনোজ ঘোষ। তিনবার নোটিসে হাজিরা না দেওয়ার বিষয়টি আগেই আদালতে জানিয়েছিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। গতকাল নলহাটি থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয় তৃণমূল নেতাকে। সোমবার নলহাটি থানায় পৌঁছয় এনআইএ-র সাতজনের একটি তদন্তকারী দল। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সেখানে ডেকে পাঠানো হয় তৃণমূল নেতাকে। সূত্রের খবর, প্রায় চার ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর বক্তব্যে অসঙ্গতি মেলায় তৃণমূলের গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রার্থীকে গ্রেফতার করে এনআইএ।