কলকাতা: রাজ্য নির্বাচন কমিশনের (State Election Commission) প্রতিক্রিয়া পর্যাপ্ত নয়, শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) দায়ের করা মামলায় প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের। আজকেও কমিশনের কেউ আদালতে নেই, তারা কেন সক্রিয় নয় ? জানতে চান প্রধান বিচারপতি। 'পুনরায় নির্বাচনের জন্য কমিশনের কাছে দেওয়া তালিকা অনুযায়ী কী সিদ্ধান্ত তা জানানো প্রয়োজন ছিল, খুব দুঃখের যে, ফল ঘোষণার পরে রাজ্য অশান্তি আটকাতে পারছে না, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না। যদি রাজ্য তার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা দিতে না পারে তাহলে সেটা উদ্বেগের'। এমনটাই পর্যবেক্ষণ আদালতের।


তীব্র ভর্ৎসনা করে  প্রধান বিচারপতির মন্তব্য, 'মামলার ভবিষ্যতের উপর জয়ী প্রার্থীদের ভাগ্য নির্ভর করবে, এটা মনে রাখতে হবে, নির্বাচন সংক্রান্ত সব নথি সংরক্ষণ করতে হবে। ব্যালট, সিসিটিভি ফুটেজ সহ সব তথ্য সংরক্ষণ করবে নির্বাচন কমিশন'।  সব অভিযোগ নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্র ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হলফনামা তলব করেছে আদালত। আগামী ২০ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি।


ভোট সন্ত্রাসে বিধ্বস্ত রাজ্য: ভাঙড়ে লাগাতার অশান্তি, একের পর এক মৃত্যু, পর পর বোমা বিস্ফোরণ। রক্তঝরা পঞ্চায়েত নির্বাচনের আবহে, রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে এভাবেই তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করল কলকাতা হাইকোর্ট।


তবে, এই প্রথম নয়, এর আগে, কখনও কলকাতা হাইকোর্টে তো কখনও সুপ্রিমকোর্টে ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। গত ২১-শে জুন ISF-এর করা একটি মামলায়, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আইনজীবীকে একের পর এক প্রশ্নবানে বিদ্ধ করেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিন্হা। তিনি জানতে চান, নির্বাচন প্রক্রিয়া কি চলছে? নির্বাচন কমিশনার কি আছেন? 'রাজ্যপাল রাজীব সিন্হার জয়েনিং রিপোর্ট ফিরিয়ে দিয়েছেন শুনলাম? '


এর পর বিচারপতি অমৃতা সিন্হা আরও বলেন,' নির্বাচন কমিশনের নির্ঘণ্ট মেনে কি এখনও ভোট চলছে? তা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চাই। পঞ্চায়েত ভোটের নামে এসব কী হচ্ছে জানি না! ভোট হচ্ছে, না হচ্ছে না? কমিশনের থেকে প্রশ্নের সঠিক উত্তর চাই'।


ভাঙড়েই প্রাণ যায় তিনজনের: এ দিকে, মনোনয়নের শেষদিনে দক্ষিণ ২৪ ভাঙড়েই প্রাণ যায় তিনজনের। সেদিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, 'আমি কমিশনকে উপদেশ দেওয়ার জন্য বসে নেই যে, আপনারা উচ্চ আদালতে যান। আপনাদের হাতে উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু, আপনারা যদি আমাদের নির্দেশকে কার্যকর না করার মত পরিস্থিতি তৈরি করেন, তাহলে আমরা নিশ্চুপ দর্শক হয়ে বসে থাকব না। আমাদের প্রাথমিক মত আপনারা আমাদের নির্দেশকে কার্যকর না করার মত পরিস্থিতি তৈরি করেছেন'। এ দিনও ফের কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে।