দিনহাটা: কোচবিহারের দিনহাটায় জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তীব্র আক্রমণ করলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক নেই, তাই বিজেপির সভায় এত নিরাপত্তা। একজনের জন্য রাস্তা বন্ধ, আকাশ বন্ধ। এবার আর মোদিকে প্রধানমন্ত্রী বলব না। কেননা কেন্দ্রে সরকারের এক্সপায়ারি হয়ে গেছে। মোদি এখন আর প্রধানমন্ত্রী নন, এক্সপায়ারিবাবু।’

মমতা আরও বলেন, ‘জগাই মাধাই গদাই স্লোগান তো আমি তুলেছিলাম। সিপিএমের লোকেরাই সকালে বাম, দুপুরে কংগ্রেস, বিকেলে বিজেপি করে। আমি মোদির মতো মিথ্যা কথা বলি না। কোচবিহারের মানুষের জন্য কোথাও কিছু ছিল না। আমি ছিটমহলের সমস্যা মিটিয়ে দিয়েছি। বাংলায় ২ টাকা/কেজিতে মানুষ চাল পায়। বিজেপি লুঠেরাদের টিকিট দেয়, অস্ত্র ব্যবসায়ীদের টিকিট দেয়। চোরের মায়ের বড় গলা, শূন্য কলসি বাজে বেশি। অসমের ডেপুটি সিএম সারদার থেকে কত টাকা নিয়েছেন? সব কাগজপত্র আমার কাছে আছে। বাংলা কৃষিতে তিনগুণ বেশি আয় করেছে। বিজেপিকে নয়, তৃণমূলকে ভোট দিন, দেশকে বাঁচান। এক্সপায়ারি প্রাইম মিনিস্টার নরেন্দ্র মোদি। রাজবংশীদের দিল্লি ডেকে নিয়ে গিয়েও কিছু করেননি। ৫ বছর চলে গেছে, কিছু করেননি, এখন বলছেন ভাবছি। চা বাগানের জন্য কিছু করেননি এক্সপায়ারি প্রাইম মিনিস্টার। কৃষকদের শস্য বিমার সব টাকা তৃণমূল সরকার দেয়। কোনওদিন শুনেছেন হ্যাঙ্গার দিয়ে মিটিং হয়? কোটি কোটি টাকা খরচা করছেন, জনগণের টাকা লুঠ করছেন। টাকার হাঙররা এখন হ্যাঙ্গারে মিটিং করে। মোদি সেনা আবার কী? মোদি তো দাঙ্গাবাজ। দেশকে বাঁচানোর কাজ করে সেনা। আগে দিল্লি সামলা, তারপর দেখিস বাংলা। মোদির আয়ুস্মান প্রকল্প ফালতু প্রকল্প, তোমার টাকা চাই না। তৃণমূল সরকার স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প করে দিয়েছে।’

মোদির উদ্দেশে মমতার তোপ, ‘লোকসভা ভোটে ৪১ শতাংশ আসনে মহিলা প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। চৌকিদার মিথ্যা কথা বলে লাভ নেই। সেনা নিয়ে কোনও কথা বলা হবে না নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী কী করে বলেন? সেনা নিয়ে রাজনীতি করছেন, লজ্জা করে না। মোদির কাছ জাতীয়তাবাদী সার্টিফিকেট নেব না। সবাই দেশের শত্রু, মোদিই একমাত্র দেশের মিত্র! মোদি ফ্যাসিস্ট, হেট্রিস্ট, জনগণ এবার দেখবে ভোটার স্ট্রাইক। এনআরসি-র পর অসমে ২২ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ গেছে। এনআরসি-র নামে বাঙালি, তফসিলিদের তাড়ানোর পরিকল্পনা। এনআরসি-র পর অসমে কত লোকের মৃত্যু হয়েছে, কত পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। বিজেপি জিতলে দেশে আর গণতন্ত্র থাকবে না, দেশকে জবরদখল করে নেবে। টাচ মি ইফ ইউ ক্যান, কিচ্ছু করতে পারবে না। নোটবন্দির নামে জনগণের টাকা লুঠ করা হয়েছে। কোথা থেকে আসছে এত টাকা? কোথা থেকে আসছে এত টাকা? কোচবিহারের প্রার্থীকে কারা কারা টাকা দিচ্ছেন আমি জানি। মানুষকে বলছে টাকা নিন, ভোট দিন। বিজেপি খাবার দিক, অন্য কিছু দিক, নিয়ে নিন। কিন্তু ওটা বাড়িতে রেখে, বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দিন। বাংলায় ৪০ শতাংশ বেকারত্ব কমেছে। নিজের নামে সিনেমা, নমোর নামে জ্যাকেট, দোকান। নমো টিভিও চালু করে দিয়েছে। এইভাবে চলবে না।’